জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া টিকিট নয়, যাত্রী বান্ধব স্মার্ট রেলপরিষেবার যত্রা শুরু

- আপডেট সময় : ০৬:৪৩:৫৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ মার্চ ২০২৩ ২০৩ বার পড়া হয়েছে

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রীবান্ধ রেলপরিষেবার অংশ হিসাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত একশ’ টিকিট পরীক্ষকদের পস মেশিন বিতরণ করেন রেলপথ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন
স্বাধীনতার মাসের শুরুতেই ‘স্মার্ট রেলপরিষেবা’র দুয়ার খুলল
পস মেশিন চালানোর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত একশ’ টিকিট পরীক্ষকদের মাঝে মেশিন হস্তান্তর করা হয়
অনলাইন কেনা টিকিট বাতিলের পর ঘরে বসেই টাকা ফেরত পাবার যুগান্তকারী পদক্ষেপ পহেলা মার্চ থেকেই কার্যকর করেছে রেলপথ মন্ত্রক
আমিনুল হক, ঢাকা
স্বাধীনতার মাসের শুরুতেই স্মার্ট রেলপরিষেবার দুয়ার খুলল। অবশ্য জাতীয় পরিচয় পত্র ছাড়া টিকিট কেনা যাবেনা এই বিষয়টি নিয়ে রেলপথ মন্ত্রকের প্রচারণা আগে থেকেই ছিল। এর আগে অনলাইনে ৫০ শতাংশ টিকিট বিক্রি শুরু হবার পর থেকে নানা জটিলতার সুযোগে কালোবাজারীরা হাত বাড়ায়। জাতীয় পরিচয়পত্র রেজিস্ট্রেশন করে টিকিট কেনার ফলে কালোবাজারীর দিন ফুরালো।
জাতীয় পরিচয়পত্র সংযোজনের ফলে অনলাইন কেনা টিকিট বাতিলের পর ঘরে বসেই টাকা ফেরত পাবার যুগান্তকারী পদক্ষেপও পহেলা মার্চ থেকেই কার্যকর করেছে রেলপথ মন্ত্রক।
রেলওয়ের এই যুগান্তাকারী পদক্ষেপ বাস্তবায়ন এবং স্মার্ট রেলপরিষেবার যাত্রার দিন হিসাবে বেচে নেওয়া হয় স্বাধীনতার মাস পহেলা মার্চ দিনকে। ডিজিটাল বাংলাদেশের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার। এরই অংশ হিসাবে দেশের সবচেয়ে বড় যোগাযোগ মাধ্যম রেলসেবায় জাতীয় পরিপত্রের সংযোজন। এর ফলে স্মার্ট বাংলাদেশের অংশি হচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এর ফলে কালোবাজারী ও হয়রানি মুক্ত থাকবে যাত্রীপরিষেবা।
রেলপথ মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন জানালেন, যে সব ত্রুটি বিচ্যুতি রয়েছে, তা পর্যায়ক্রমে সমাধানের পথে হাটছে সরকার। সমালোচনা নয়, যাত্রী কল্যাণে যে কোন উদ্যোগে সাধারণের সহযোগিতা রেলপথ মন্ত্রক পাবে বলে তার আশা।
রেলপথ মন্ত্রী আরও জানালেন, যাত্রীদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির জন্য একাধিক কার্যক্রম হাতে নিয়েছেন। টিকেট প্রাপ্তির ক্ষেত্রে যাত্রীর অভিযোগ ছিল তা সমাধানের লক্ষ্যে ‘টিকেট যার ভ্রমণ তার’ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর বাস্তাবায়নের অংশ হিসাবে বুধবার ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে পস মেশিন হস্তান্তর আয়োজনে যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন রেলপথ মন্ত্রী। এদিন ট্রেনে টিকিট পরীক্ষকদের মাঝে ১০০টি ‘পস মেশিন’ হস্তান্তর করেন তিনি।

প্রাথমিক ভাবে আন্তঃনগর ট্রেন যাত্রীদের জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে টিকিট কেনার ব্যবস্থার চালু করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সকল ট্রেনের যাক্রীদের ভ্রমণ বেলায় এই ব্যবস্থা কার্যকর হবে।
রেলপথ মন্ত্রী বলেন, যাত্রীরা যাতে আরো বেশি সুযোগ সুবিধা পেতে পারেন এবং কোন প্রকার কালোবাজারি ছাড়াই নিজের টিকেট নিজে কাটতে পারেন, তার জন্য টিকেটে জাতীয় পরিচয়পত্র সংযোজন করা হয়েছে। রেলপরিষেবাকে বিশ্বমানের পর্যায়ে নিয়ে যাবার লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে রেলপথ মন্ত্রক। এজন্য সংবাদমাধ্যমসহ সকল শ্রেণীপেশার মানুষের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন রেলপথ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন।
তিনি বলেন, প্রয়োজনে সকলের মতামতের ভিত্তিতে আরো সংস্কারে হাত লাগানো হবে। আর সবটাই করা হবে যাত্রীদের কল্যাণের কথা মাথায় রেখে। বর্তমানে অনলাইনে ৫০ শতাংশ এবং কাউন্টারে ৫০ শতাংশ টিকেট বিক্রির ব্যবস্থা রয়েছে। জাতীয় পরিচয়পত্র যুক্ত করার ফলে অন্যের টিকেটে কারো ভ্রমণের যুযোগ থাকলো না।
যদি কেউ এমন সুযোগকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করেন, সেটি বিনা টিকিটে ভ্রমণের সামিল হবে এবং রেলওয়ের আইন মাফিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিনা টিকিটে ভ্রমণকৃত যাত্রীর কাছ থেকে আদায় করা অর্থ সরকারী কোষাগারে জমা না দেওয়া টিটিইদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ ছিল, বর্তমান ব্যবস্থা চালুর সেই ফাঁকফোঁকরও বন্ধ হবে।
এর আগে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মোঃ কামরুল আহসান, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার শাহাদাত আলীসহ কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন কাউন্টার এবং রংপুর এক্সপ্রেস পরিদর্শন করেন এবং যাত্রীদের সাথে টিকিট বিষয়ে কথা বলেন রেলপথ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন।