চাল পেয়ে ভোলায় বেদে জেলে পল্লীতে ঈদ আনন্দ

- আপডেট সময় : ১০:১৪:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩১ মার্চ ২০২৫ ৮৫ বার পড়া হয়েছে
দ্বীপ জেলা ভোলায় সবচেয়ে বেশি বেদে মৎস্যজীবী রয়েছেন। মেঘনা-তেতুলিয়া এবং পদ্মার অথৈজলে ভেসে চলা জীবনে তারা প্রথমবারের মতো সরকারী চাল সহায়তা পেলেন। ঈদের আগ মুহূর্তে প্রথম বারের মতো সরকারী চাল পেয়ে ঈদ আনন্দ বয়ে যাচ্ছে বেদে জেলে পল্লীতে।
বাংলাদেশ ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী জেলে সমিতির ভোলার জেলার ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও দৌলতখান উপজেলার সভাপতি আল মামুন শেখ জানান, তারা ১৩০টি বেদে জেলে পরিবার প্রতি ৩০ কেজি করে চাল বিতরণ করেন। জীবনে প্রথম বার সরকারী চাল পেয়ে যার পর নাই তারা আনন্দ উপভোগ করছে।

বছরের পর বছর নদ-নদীতে মাছ ধরা নিষিদ্ধকালীন সাধারণ জেলেরা সরকারী সহায়তা পেলেও, বেদে জেলেরা ছিলেন বঞ্চিত। এবার ব্যতিক্রম। আল মামুন শেখ জানান, বেদে জেলেদেও জন্য সরকারী চাল সহায়তা পেতে জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করেন। তিনি ব্যক্তিগত ভাবে দেখা করে আসহায় বেদে জেলেদের জন্য চাল দেবার অনুরোধ জানান। এরই প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক ৪ টন চাল বরাদ্ধ করেন।
মৎস্য অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী মৎস্যজীবী বেদে পরিবারের সংখ্যা প্রায় ১ হাজার ২০০। নদীর অথৈজলেই তাদের বাড়ি-ঘর। এই নদীতেই তাদের জন্মমৃত্যু। একমাত্র মাছ ধরেই সংসার চলে তাদের।
বাংলাদেশে বছরে একাধিক সময়ে নদ-নদীতে মাছ আহরণ নিষিদ্ধ থাকে। সে সময় সরকারের নিবন্ধতি জেলেরা বিনামূল্যে চাল সহায়তা পেয়ে থাকেন। কিন্তু মৎস্যজীবী বেদে পরিবারগুলোকে অনাহারে-অর্ধারে দিন কাটাতে হয়। অথচ মৎস্য আহরণে তাদের অবদানকে দূরে রাখা যাবে না।
ঈদের দিনে জেলেদের কাছে ছুটে যান আল মামুন শেখ। এ সময় একাধিক জেলের অভিযোগ তাদের অনেকেই বরাদ্দকৃত চাল পাননি। তবে, ঈদের পর বাকী চাল বিতরণের ব্যবস্থা করা হবে বলে জেলা প্রশাসক আশ্বাস দিয়েছেন। আল মামুন শেখ জানান, জেলা প্রশাসক অবশ্যই জেলে চালের ব্যবস্থা করবেন, এই আস্থা শতভাগ।
ভোলা জেলার দৌলতখান উপজেলার মেঘনা পারে অনেক বেদে মৎস্যজীবীদের সঙ্গে আলাপের সুযোগ হয়েছে। আকাশের মত উদার এবং মেঘনার জলরাশির মতো গভীর মনের মানুষগুলো বঞ্চিতই থেকে গেলো। মানুষ হিসাবে তারা পায়নি তেমন কোন সম্মান। সহায়তা তো দূরের কথা।

আল মামুন শেখ জানালেন, তিনি দীর্ঘ দিন যাবত বেদে মৎস্যজীবী এবং সাধারণ জেলে পরিবার যারা সরকারের সহায়তা থেকে বঞ্চিত, তাদের সহায়তা পাবার প্রচেষ্টা চালাতে থাকেন।
বেদে মৎস্যজীবীদের সহাতার জন্য ভোলা জেলা প্রশাসকের বরাবর আবেদন করেন। অবশেষে বেদে মৎস্যজীবীদের জন্য ৪ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। আল মামুন শেখ জানান, যে চাল পাওয়া গেছে, তা ১৩০টি বেদে মৎস্যজীবী পরিবার ৩০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়।
চাল পাবার খবরে বেদে মৎস্যজীবী পল্লীতে আনন্দের জোয়ার বইছে। তারা জীবনের প্রথমবার সরকারের সহায়তা পাচ্ছেন। তারা ভোলা জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
আল মামুন শেখ জানান, ভোলার অনেক জেলে তাদের বরাদ্দের চাল পাচ্ছেন না। তাদের বরাদ্দের চাল পেতে ভোলা প্রেস ক্লাবের সম্মুখে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন তারা।