ঢাকা ০৮:২৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১২ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গ্রীষ্মে লোডশেডিং হতে পারে ৩ হাজার মেগাওয়াট, সরকার বলছে দেড় হাজার

ভয়েস ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০২:৩৯:২৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ৫১ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

গ্রীষ্ম মৌসুমে স্বাভাবিকভাবেই বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে যায়। এবারে গ্রীষ্মের শুরুতেই পবিত্র রমজান শুরু হচ্ছে। এসময় ইফতার ও সেহরিতে বিদ্যুতের চাহিদা বেশি থাকে। বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনে যেসব কাচামাল ব্যবহার করা হয়, তার মধ্যে গ্যাস, ফার্নেস অয়েল এবং কয়লা রয়েছে। যার অধিকাংশই আমদানি নির্ভর।

গ্রীষ্ম মৌসুম সামনে রেখে মার্চে সর্বোচ্চ ১৬ হাজার এবং এপ্রিলে ১৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা ধরেছে বিদ্যুৎ বিভাগ। গত বছর একই সময়ে ১২ থেকে ১৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়েছে। এবার এটি ১৩ থেকে ১৫ হাজার মেগাওয়াট হতে পারে। ঘাটতি পূরণে গত বছরের মতো এবারের গ্রীষ্মে লোডশেডিং করতে হতে পারে।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ৫ ফেব্রুয়ারি বিদ্যুৎ ভবনে গ্রীষ্মের প্রস্তুতি নিয়ে অনুষ্ঠিত সভা শেষে সাংবাদিকদের বলেন, ১ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত লোডশেডিং হতে পারে। বিদ্যুৎ ঘাটতি মেটাতে শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) ব্যবহারে সতর্ক করেছেন তিনি। এসি ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে বলেও ১৭ ফেব্রুয়ারি জানিয়েছেন উপদেষ্টা।

এবারে রমজানে বিদ্যুতের চাহিদা পৌঁছাতে পারে সাড়ে ১৫ হাজার মেগাওয়াটে। বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, এসময় দেশব্যাপী নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকবে। গত বছর সর্বোচ্চ উৎপাদন ১৬ হাজার ৪৭৭ মেগাওয়াট থাকলেও, বেশিরভাগ সময় মিলেছে ১৫ হাজারের মধ্যে। তখন লোডশেডিং ছাড়ায় ২ হাজার মেগাওয়াট। এবার গ্রীষ্মে বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদা ধরা হচ্ছে ১৮ হাজার মেগাওয়াট।

বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহার করা কাঁচামালের অধিকাংশই আমদানি নির্ভর। এ ক্ষেত্রে ডলার সংকট রয়েছে। গ্রীষ্ম মৌসুমে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ পরিস্থিতিরি সার্বিক বিষয়ে গত ৫ ফেব্রুয়ারি আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বকেয়া বিল, জ্বালানি সংকটসহ নানামুখী চাপে বিদ্যুৎ বিভাগ। তাদের শঙ্কা, লোডশেডিং ছাড়াতে পারে ৩ হাজার মেগাওয়াট। অবশ্য বিদ্যুৎ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলছেন, অতিরিক্ত তাপমাত্রাতেও লোডশেডিং থাকবে দেড় হাজার মেগাওয়াটের নিচে।

গ্রীষ্মে বিদ্যুতের চাহিদা মাথায় রেখে গ্যাস, ফার্নেস অয়েল থেকে উৎপাদন বাড়ানো এবং আদানির কেন্দ্রের পুরো সক্ষমতা ব্যবহার করতে চায় সরকার। চাহিদা মেটাতে আদানির ঝাড়খন্ডের কেন্দ্র থেকে পুরো সক্ষমতার বিদ্যুৎ চাওয়া হয়েছে। জোর দেওয়া হচ্ছে গ্যাস, ফার্নেস ওয়েলভিত্তিক কেন্দ্রে।

উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন, ১৮ হাজার মেগাওয়াট চাহিদা ধরে আমরা কাজ করছে সরকার। কিন্তু বিদ্যুৎ যেটা অ্যাভেইলেবল হবে, প্রাথমিক হিসেবে আমরা দেখতে পাচ্ছি ৭০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ পর্যন্ত লোডশেডিং করতে হতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেসরকারি খাতের কেন্দ্রগুলোর কাছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের বড় অংকের বকেয়া। আদানি থেকে বিদ্যুৎ আমদানির বকেয়া বিল পরিশোধেও গতি কম। সেইসঙ্গে শিল্প, সার কারখানায় গ্যাস নিশ্চিত করে বিদ্যুতে সরবরাহ বাড়ানো সম্ভব নয় বলে মনে করছেন তারা।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ইজাজ হোসেসেনের মতে, চলতি বছর কতটা গরম পড়বে সেটাও আমরা জানি না। সবকিছু যদি আমাদের বিপক্ষে যায় তাহলে ডিমান্ড তাতে সাংঘাতিক কষ্ট হবে এটা পূরণ করতে। সরকার তো নিজেই বলেছে দেড় হাজার মেগাওয়াট, আমার হিসেবে এটা ৩ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত সময় লোডশেডিং করতে হতে পারে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

গ্রীষ্মে লোডশেডিং হতে পারে ৩ হাজার মেগাওয়াট, সরকার বলছে দেড় হাজার

আপডেট সময় : ০২:৩৯:২৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

গ্রীষ্ম মৌসুমে স্বাভাবিকভাবেই বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে যায়। এবারে গ্রীষ্মের শুরুতেই পবিত্র রমজান শুরু হচ্ছে। এসময় ইফতার ও সেহরিতে বিদ্যুতের চাহিদা বেশি থাকে। বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনে যেসব কাচামাল ব্যবহার করা হয়, তার মধ্যে গ্যাস, ফার্নেস অয়েল এবং কয়লা রয়েছে। যার অধিকাংশই আমদানি নির্ভর।

গ্রীষ্ম মৌসুম সামনে রেখে মার্চে সর্বোচ্চ ১৬ হাজার এবং এপ্রিলে ১৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা ধরেছে বিদ্যুৎ বিভাগ। গত বছর একই সময়ে ১২ থেকে ১৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়েছে। এবার এটি ১৩ থেকে ১৫ হাজার মেগাওয়াট হতে পারে। ঘাটতি পূরণে গত বছরের মতো এবারের গ্রীষ্মে লোডশেডিং করতে হতে পারে।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ৫ ফেব্রুয়ারি বিদ্যুৎ ভবনে গ্রীষ্মের প্রস্তুতি নিয়ে অনুষ্ঠিত সভা শেষে সাংবাদিকদের বলেন, ১ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত লোডশেডিং হতে পারে। বিদ্যুৎ ঘাটতি মেটাতে শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) ব্যবহারে সতর্ক করেছেন তিনি। এসি ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে বলেও ১৭ ফেব্রুয়ারি জানিয়েছেন উপদেষ্টা।

এবারে রমজানে বিদ্যুতের চাহিদা পৌঁছাতে পারে সাড়ে ১৫ হাজার মেগাওয়াটে। বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, এসময় দেশব্যাপী নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকবে। গত বছর সর্বোচ্চ উৎপাদন ১৬ হাজার ৪৭৭ মেগাওয়াট থাকলেও, বেশিরভাগ সময় মিলেছে ১৫ হাজারের মধ্যে। তখন লোডশেডিং ছাড়ায় ২ হাজার মেগাওয়াট। এবার গ্রীষ্মে বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদা ধরা হচ্ছে ১৮ হাজার মেগাওয়াট।

বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহার করা কাঁচামালের অধিকাংশই আমদানি নির্ভর। এ ক্ষেত্রে ডলার সংকট রয়েছে। গ্রীষ্ম মৌসুমে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ পরিস্থিতিরি সার্বিক বিষয়ে গত ৫ ফেব্রুয়ারি আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বকেয়া বিল, জ্বালানি সংকটসহ নানামুখী চাপে বিদ্যুৎ বিভাগ। তাদের শঙ্কা, লোডশেডিং ছাড়াতে পারে ৩ হাজার মেগাওয়াট। অবশ্য বিদ্যুৎ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলছেন, অতিরিক্ত তাপমাত্রাতেও লোডশেডিং থাকবে দেড় হাজার মেগাওয়াটের নিচে।

গ্রীষ্মে বিদ্যুতের চাহিদা মাথায় রেখে গ্যাস, ফার্নেস অয়েল থেকে উৎপাদন বাড়ানো এবং আদানির কেন্দ্রের পুরো সক্ষমতা ব্যবহার করতে চায় সরকার। চাহিদা মেটাতে আদানির ঝাড়খন্ডের কেন্দ্র থেকে পুরো সক্ষমতার বিদ্যুৎ চাওয়া হয়েছে। জোর দেওয়া হচ্ছে গ্যাস, ফার্নেস ওয়েলভিত্তিক কেন্দ্রে।

উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন, ১৮ হাজার মেগাওয়াট চাহিদা ধরে আমরা কাজ করছে সরকার। কিন্তু বিদ্যুৎ যেটা অ্যাভেইলেবল হবে, প্রাথমিক হিসেবে আমরা দেখতে পাচ্ছি ৭০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ পর্যন্ত লোডশেডিং করতে হতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেসরকারি খাতের কেন্দ্রগুলোর কাছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের বড় অংকের বকেয়া। আদানি থেকে বিদ্যুৎ আমদানির বকেয়া বিল পরিশোধেও গতি কম। সেইসঙ্গে শিল্প, সার কারখানায় গ্যাস নিশ্চিত করে বিদ্যুতে সরবরাহ বাড়ানো সম্ভব নয় বলে মনে করছেন তারা।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ইজাজ হোসেসেনের মতে, চলতি বছর কতটা গরম পড়বে সেটাও আমরা জানি না। সবকিছু যদি আমাদের বিপক্ষে যায় তাহলে ডিমান্ড তাতে সাংঘাতিক কষ্ট হবে এটা পূরণ করতে। সরকার তো নিজেই বলেছে দেড় হাজার মেগাওয়াট, আমার হিসেবে এটা ৩ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত সময় লোডশেডিং করতে হতে পারে।