ক্লাসরুমে বিয়ের পিড়িতে অধ্যাপিকা-ছাত্রের মালাবদল-সিঁদুরদান

- আপডেট সময় : ০৯:১৫:০৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ৯৭ বার পড়া হয়েছে

ক্লাসরুমেই বিয়ের পিড়িতে বসলেন অধ্যাপিকা। মালাবদল- সিঁদুরদান হলো নবীন ছাত্রের সঙ্গে। এই ঘটনার ভিডিও ক্লিপ দারুন আলোড়ন তুলেছে সামাজিক মাধ্যমে। কি এমন ঘটনায় ঘটেছিলো যে ক্লাশরুমেই বিয়ের পিড়িতে বসতে হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকাকে! যে ঘটনা চাঞ্চল্য ছড়ালো। চলুন যেন নেওয়া যাক।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গেও নদিয়ায় মৌলানা আবুল কালাম আজাদ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের হরিণঘাটা ক্যাম্পাসে ক্লাসরুমের মধ্যেই মালাবদল ও সিঁদুরদান করে বিয়ে অধ্যাপিকা ও ছাত্রের ! বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসরুমই বিয়ে আসর। সেখানে বিয়েও হল ৷ মালাবদল থেকে সিঁদুরদান-বাদ যায়নি কিছুই ৷ লাল টুকটুকে বেনারসী শাড়ি পরে কনের সাজে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাপ্লায়েড সাইকোলজির বিভাগীয় প্রধান শিক্ষিকা পিয়ালী বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তাঁকে সিঁদুর পরিয়ে, মালাবদল করে শ্রেণিকক্ষেই বিয়ে করলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র ! বিয়ের সাক্ষী অন্যান্য ছাত্রছাত্রীরা ৷
শুধু যে বিয়ের ছবি বা ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে তা নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের রাইটিং প্যাডে দু’জন দু’জনকে স্বামী-স্ত্রীর স্বীকৃতিও দিয়েছেন লিখিতভাবে । রয়েছে সাক্ষীদের স্বাক্ষর ৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে এমন ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে ৷ শোরগোল পড়ে গিয়েছে শিক্ষা মহলে।
সামাজিক মাধ্যমে এক অধ্যাপিকা এবং এক ছাত্রের বিয়ে করার ছবি ও ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ে । দেখা যায়, কলেজের শ্রেণিকক্ষের মধ্যেই শিক্ষিকা এক ছাত্রের সঙ্গে হিন্দু রীতি মেনে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হচ্ছেন । দু’জনের গলায় পরানো রজনীগন্ধা ও গোলাপের মালা ৷ অধ্যাপিকাকে সিঁদুর পরিয়ে দেন ছাত্র ৷ আর গোটা ঘটনা ক্যামেরাবন্দি করেন উপস্থিত অন্যান্য ছাত্রছাত্রীরা ৷ এরপরই জানা যায়, ওই ছবি হরিণঘাটার আবুল কালাম আজাদ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের । এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই সোশাল মিডিয়ায় ঝড় ওঠে ৷
এই ঘটনা সামনে আসার পরই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে যে, ইতিমধ্যেই তদন্ত কমিটি গঠন করে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে ৷ এই তদন্ত শেষ না-হওয়া পর্যন্ত ওই শিক্ষিকাকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে । পাশাপাশি ওই ছাত্রকে সাসপেন্ড করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য তাপস চক্রবর্তী জানিয়েছেন, বিভাগীয় প্রধান ওই মহিলা অধ্যাপকের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে । কেন ক্লাসরুমে প্রথম বর্ষের এক পড়ুয়ার সঙ্গে তিনি মালাবদল ও সিঁদুর দান করেছেন, তা তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে । পাশাপাশি তিনি এও বলেন যে, প্রাথমিকভাবে অভিযুক্ত বিভাগীয় প্রধান জানিয়েছেন, এটা তাঁদের পাঠ্যক্রমে থাকা প্রজেক্টের অঙ্গ ।
এ বিষয়ে অধ্যাপিকা পিয়ালী বন্দ্যোপাধ্যায়ের বলেন , একটি নাটকে শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও অংশগ্রহণ করার আবেদন জানিয়ে তাঁকে ইমেল পাঠিয়েছিল ছাত্ররা ৷ তিনি সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে নাটকে অভিনয় করার জন্যই শ্রেণিকক্ষে বিয়ের আসরের ভিডিয়ো রেকর্ড করার অনুমতি দিয়েছিলেন ৷ তাঁর কথায়, “এই ঘটনাকে ভুল ভাবে কর্তৃপক্ষের সামনে তুলে ধরা হয়েছে ৷ আমাকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে ৷ তবে আমার কাছে ছাত্রদের ইমেল ও অন্যান্য নথি আছে ৷ সেগুলি আমি কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিয়েছি ৷
পাশাপাশি ফেসবুকে এক ভিডিয়ো বার্তায় আত্মপক্ষ সমর্থনও করেছেন এবং অধ্যাপিকা বলেন, ওটা একটা সাইকো ড্রামার ক্লিপ । আরও অনেক নাচ গানেরও ক্লিপ আছে । কারা কী উদ্দেশ্য নিয়ে বেছে বেছে এই ভিডিয়ো ক্লিপটুকু ভাইরাল করল জানি না । তাঁরা এই অল্পবয়সি ছাত্রদের কথা ভাবেননি । ওদের কেরিয়ারের কথা ভাবেননি। আমি তো নিজের কেরিয়ারে এগিয়ে গিয়েছি । তাই নিজেকে নিয়ে ভাবি না । যাঁরা আমায় চেনেন, তাঁরা জানেন আমি গবেষণা-পাবলিকেশন এইসব নিয়ে থাকি। ছাত্রদের মোটিভেট করি । তাই এই ভিডিয়ো নিয়ে যে চর্চা চলছে তা দেখে অবাক হয়েছি ।