ঢাকা ০৬:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কোভিড পরবর্তী বিশ্বে কূটনীতির পুনর্বিবেচনা একটি ভারতীয় দৃষ্টিভঙ্গি

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:৩৬:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২১ ৩৩১ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ড. এস জয়শংকর : আমরা ২০২১ সালে প্রবেশ করেছি কোভিড-১৯ মহামারীকে পরাস্ত করার আশায়। যদিও প্রতিটি সমাজ এটিকে অনন্যভাবে মোকাবেলা করেছে, তবুও বিশ্ব কূটনীতি সাধারণ উদ্বেগ এবং অভিন্ন শিক্ষার প্রতি মনোনিবেশ করবে। এর বেশিরভাই বিশ্বায়নের প্রকৃতির সাথে সম্পর্কিত।

আমাদের প্রজন্মকে এটিকে মূলত অর্থনৈতিক দিক থেকে ভাবছে। সাধারণ ভাবনা হল বাণিজ্য, অর্থ, পরিষেবা, যোগাযোগ, প্রযুক্তি এবং গতিশীলতার যেকোন একটি। এটি আমাদের যুগের আন্তঃনির্ভরতা এবং আন্তর্ব্যাপনকে প্রকাশ করে। তবে আমাদের অস্তিত্বের গভীর অখণ্ডতাকে সামনে নিয়ে এসেছে। প্রকৃত বিশ্বায়ন মহামারী, জলবায়ু পরিবর্তন এবং সন্ত্রাসবাদের সাথে বেশি সম্পর্কিত। কূটনৈতিক আলোচনার মূলে অবশ্যই এই বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিতে হবে। যেমনটি, আমরা ২০২০ সালে দেখেছি, এই জাতীয় চ্যালেঞ্জগুলি উপেক্ষা করার বেশ বড় মাশুল দিতে হয়েছে।

এর অনেক সুবিধা থাকা সত্ত্বেও বিশ্বায়নকে কেন্দ্র করে বিশ্ব তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখেছে। এর বেশিরভাগই সমাজের অসম সুবিধা থেকে উদ্ভূত হয়। এই জাতীয় ঘটনাগুলি সম্পর্কে যারা অবহেলা করেছে তারাই প্রতিকূলতার মুখোমুখি হচ্ছে। আমাদের অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে এটি হার-জিতের বিষয় নয়, বরং সর্বত্র টেকসই সমাজ নিশ্চিত করার বিষয়।

কোভিড-১৯ নিরাপত্তা সম্পর্কে আমাদের ধারণাকে বদলে দিয়েছে। এখন অবধি, বিভিন্ন দেশ মূলত সামরিক, গোয়েন্দা, অর্থনৈতিক এবং সম্ভবত সাংস্কৃতিক দিক দিয়ে চিন্তা করেছিল। আজ তারা কেবল স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়ে আরও গুরুত্ব দেবে না, এর সাথে বিশ্বস্ত এবং নির্ভরযোগ্য সরবরাহ শৃঙ্খল নিয়েও চিন্তা করবে। কোভিড-১৯ যুগের চাপগুলি আমাদের বর্তমান পরিস্থিতির ভঙ্গুরতাকে সামনে নিয়ে এসেছে। বিশ্বব্যাপী অর্থনীতিকে ঝুঁকিমুক্ত করার জন্য অতিরিক্ত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। প্রয়োজন আরও স্বচ্ছতা এবং বাজার-কার্যকরীতা।

বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলি এই অভিজ্ঞতা থেকে ভালভাবে বেরিয়ে আসতে পারেনি। তাদের নিয়ে বিভিন্ন বিতর্ক বাদ দিয়ে ১৯৪৫ সালের পর থেকে সবচেয়ে মারাত্মক বৈশ্বিক সঙ্কটে সম্মিলিত প্রতিক্রিয়া দেখানোর ভান করতেও দেখা যায়নি। এটি গুরুতর অন্তর্মুখীতার কারণ। কার্যকর সমাধান তৈরির জন্য বহুপক্ষীয়তার সংস্কার করা জরুরি।

কোভিড-১৯ চ্যালেঞ্জের প্রতি একটি দৃঢ় প্রতিক্রিয়া ২০২১ সালে বৈশ্বিক কূটনীতিতে আধিপত্য করবে। ভারত তাদের নিজস্ব উপায়ে একটি উদাহরণ তৈরি করেছে। ভারত বিভিন্ন স্বাস্থ্যগত উপায় বের করেছে মৃত্যুর হার কমাতে এবং সুস্থতার হার সর্বাধিক করার জন্য। এই সংখ্যাগুলির একটি আন্তর্জাতিক তুলনা করলেই বিষয়টি স্পষ্টভাবে বোঝা যায়। শুধু তাই নয়, ভারত বিশ্বের ১৫০টিরও বেশি দেশে ওষুধ সরবরাহ করে বিশ্বের ফার্মাসি হিসাবে এগিয়ে চলেছে। এদের অনেককে ওষুধ দেয়া হয়েছে অনুদান হিসেবে।

যেহেতু আমাদের দেশে একটি বড় আকারের টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আশ্বাস দিয়েছেন যে এই ভ্যাকসিন বিশ্বের কাছে সহজলভ্য এবং সাশ্রয়ী মূল্যে বিতরণ করতে সহায়তা করবে যা ইতোমধ্যে কার্যকর করা হয়েছে। ভারতে উৎপাদিত ভ্যাকসিনের প্রথম চালানগুলি ভুটান, মালদ্বীপ, বাংলাদেশ, নেপাল, মরিশাস, সেশেলস এবং শ্রীলঙ্কার মতো আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলি বাইরে সুদূর ব্রাজিল এবং মরক্কোতেও পৌঁছেছে।


অন্যান্য মূল বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জগুলিও আজ একই ধরণের মনোযোগের দাবি রাখে। প্যারিস চুক্তির একটি কেন্দ্রীয় অংশগ্রহণকারী হিসাবে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভারত দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে। ভারতের নবায়নযোগ্য শক্তির লক্ষ্যগুলি বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে, বনাঞ্চল সম্প্রসারিত হয়েছে, জীববৈচিত্র্য প্রসারিত হয়েছে এবং জলের ব্যবহারের উপর গুরুত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের অভ্যন্তরে প্রচলিত সেরা অনুশীলনগুলি এখন আফ্রিকা এবং অন্যান্য উন্নয়ন অংশীদার দেশগুলিতে প্রয়োগ করা হচ্ছে। উদাহরণ এবং শক্তির মাধ্যমে ভারতীয় কূটনীতি আন্তর্জাতিক সৌর জোট এবং দুর্যোগ প্রতিরোধ অবকাঠামো জোট উদ্যোগের মধ্যে দিয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছে।

সন্ত্রাস ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের চ্যালেঞ্জও ভয়াবহ। দীর্ঘদিন ধরে আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসী হামলার শিকার হওয়া একটি সমাজ হিসেবে, ভারত বিশ্ব সচেতনতা বাড়াতে এবং সমন্বিত পদক্ষেপে উৎসাহিত করতে সক্রিয় রয়েছে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য এবং এফএটিএফ ও জি-২০ এর মতো ফোরামের সদস্য হিসেবে ভারতের কূটনীতিতে এই বিষয়ে প্রধান দৃষ্টি নিবদ্ধ থাকবে।

কোভিড-১৯ এর অভিজ্ঞতার মধ্যে অন্যতম রয়েছে ডিজিটাল ডোমেইনের শক্তি। কন্টাক্ট ট্রেসিং বা আর্থিক এবং খাদ্য সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে হোক, ২০১৪ সালের পরে ভারতের ডিজিটাল দৃষ্টিভঙ্গি আশাব্যঞ্জক ফলাফল পেয়েছে। কোভিড-১৯ এর কারণে “স্টাডি ফ্রম হোম” এর চেয়েও “ওয়ার্ক ফ্রম এনিহোয়্যার” অনুশীলন জোরালোভাবে বাড়ানো হয়েছিল। এগুলি বিদেশে ভারতের উন্নয়ন কর্মসূচির উপাদান প্রসারিত করতে এবং অনেক অংশীদারদের পুনরুদ্ধারে সহায়তা করবে।

২০২০ সালে ইতিহাসের বৃহত্তম প্রত্যাবাসন অনুশীলনও দেখেছিল বিশ্ব যাতে ৪ মিলিয়নেরও বেশি ভারতীয় স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিল। এটি সমসাময়িক সময়ে গতিশীলতার গুরুত্বকে সামনে নিয়ে আসে। স্মার্ট উৎপাদন এবং জ্ঞান অর্থনীতি পোক্ত হওয়ার সাথে সাথে বিশ্বস্ত প্রতিভার প্রয়োজন অবশ্যই বৃদ্ধি পাবে। বিশ্বের স্বার্থেই কূটনীতির মাধ্যমে এই চলাচলকে সহজতর করতে হবে।

২০২১ সালে স্বাভাবিকতায় ফিরে আসার অর্থ হবে নিরাপদ ভ্রমণ, উন্নত স্বাস্থ্য, অর্থনৈতিক পুনর্জাগরণ এবং ডিজিটাল পরিষেবা। এই বিষয়গুলো পাবে নতুন সংজ্ঞা এবং নতুন ভাষা। কোভিড-১৯ পরবর্তী বিশ্ব আরও বহু-মেরু, বহুত্ববাদী এবং পুনরায় ভারসাম্যপূর্ণ হবে এবং ভারত তার অভিজ্ঞতা দিয়ে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে সাহায্য করবে। সূত্র ভারতীয় হাইকমিশনার।
ড. এস জয়শংকর, ভারতের বিদেশমন্ত্রী

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

কোভিড পরবর্তী বিশ্বে কূটনীতির পুনর্বিবেচনা একটি ভারতীয় দৃষ্টিভঙ্গি

আপডেট সময় : ১২:৩৬:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২১

ড. এস জয়শংকর : আমরা ২০২১ সালে প্রবেশ করেছি কোভিড-১৯ মহামারীকে পরাস্ত করার আশায়। যদিও প্রতিটি সমাজ এটিকে অনন্যভাবে মোকাবেলা করেছে, তবুও বিশ্ব কূটনীতি সাধারণ উদ্বেগ এবং অভিন্ন শিক্ষার প্রতি মনোনিবেশ করবে। এর বেশিরভাই বিশ্বায়নের প্রকৃতির সাথে সম্পর্কিত।

আমাদের প্রজন্মকে এটিকে মূলত অর্থনৈতিক দিক থেকে ভাবছে। সাধারণ ভাবনা হল বাণিজ্য, অর্থ, পরিষেবা, যোগাযোগ, প্রযুক্তি এবং গতিশীলতার যেকোন একটি। এটি আমাদের যুগের আন্তঃনির্ভরতা এবং আন্তর্ব্যাপনকে প্রকাশ করে। তবে আমাদের অস্তিত্বের গভীর অখণ্ডতাকে সামনে নিয়ে এসেছে। প্রকৃত বিশ্বায়ন মহামারী, জলবায়ু পরিবর্তন এবং সন্ত্রাসবাদের সাথে বেশি সম্পর্কিত। কূটনৈতিক আলোচনার মূলে অবশ্যই এই বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিতে হবে। যেমনটি, আমরা ২০২০ সালে দেখেছি, এই জাতীয় চ্যালেঞ্জগুলি উপেক্ষা করার বেশ বড় মাশুল দিতে হয়েছে।

এর অনেক সুবিধা থাকা সত্ত্বেও বিশ্বায়নকে কেন্দ্র করে বিশ্ব তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখেছে। এর বেশিরভাগই সমাজের অসম সুবিধা থেকে উদ্ভূত হয়। এই জাতীয় ঘটনাগুলি সম্পর্কে যারা অবহেলা করেছে তারাই প্রতিকূলতার মুখোমুখি হচ্ছে। আমাদের অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে এটি হার-জিতের বিষয় নয়, বরং সর্বত্র টেকসই সমাজ নিশ্চিত করার বিষয়।

কোভিড-১৯ নিরাপত্তা সম্পর্কে আমাদের ধারণাকে বদলে দিয়েছে। এখন অবধি, বিভিন্ন দেশ মূলত সামরিক, গোয়েন্দা, অর্থনৈতিক এবং সম্ভবত সাংস্কৃতিক দিক দিয়ে চিন্তা করেছিল। আজ তারা কেবল স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়ে আরও গুরুত্ব দেবে না, এর সাথে বিশ্বস্ত এবং নির্ভরযোগ্য সরবরাহ শৃঙ্খল নিয়েও চিন্তা করবে। কোভিড-১৯ যুগের চাপগুলি আমাদের বর্তমান পরিস্থিতির ভঙ্গুরতাকে সামনে নিয়ে এসেছে। বিশ্বব্যাপী অর্থনীতিকে ঝুঁকিমুক্ত করার জন্য অতিরিক্ত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। প্রয়োজন আরও স্বচ্ছতা এবং বাজার-কার্যকরীতা।

বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলি এই অভিজ্ঞতা থেকে ভালভাবে বেরিয়ে আসতে পারেনি। তাদের নিয়ে বিভিন্ন বিতর্ক বাদ দিয়ে ১৯৪৫ সালের পর থেকে সবচেয়ে মারাত্মক বৈশ্বিক সঙ্কটে সম্মিলিত প্রতিক্রিয়া দেখানোর ভান করতেও দেখা যায়নি। এটি গুরুতর অন্তর্মুখীতার কারণ। কার্যকর সমাধান তৈরির জন্য বহুপক্ষীয়তার সংস্কার করা জরুরি।

কোভিড-১৯ চ্যালেঞ্জের প্রতি একটি দৃঢ় প্রতিক্রিয়া ২০২১ সালে বৈশ্বিক কূটনীতিতে আধিপত্য করবে। ভারত তাদের নিজস্ব উপায়ে একটি উদাহরণ তৈরি করেছে। ভারত বিভিন্ন স্বাস্থ্যগত উপায় বের করেছে মৃত্যুর হার কমাতে এবং সুস্থতার হার সর্বাধিক করার জন্য। এই সংখ্যাগুলির একটি আন্তর্জাতিক তুলনা করলেই বিষয়টি স্পষ্টভাবে বোঝা যায়। শুধু তাই নয়, ভারত বিশ্বের ১৫০টিরও বেশি দেশে ওষুধ সরবরাহ করে বিশ্বের ফার্মাসি হিসাবে এগিয়ে চলেছে। এদের অনেককে ওষুধ দেয়া হয়েছে অনুদান হিসেবে।

যেহেতু আমাদের দেশে একটি বড় আকারের টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আশ্বাস দিয়েছেন যে এই ভ্যাকসিন বিশ্বের কাছে সহজলভ্য এবং সাশ্রয়ী মূল্যে বিতরণ করতে সহায়তা করবে যা ইতোমধ্যে কার্যকর করা হয়েছে। ভারতে উৎপাদিত ভ্যাকসিনের প্রথম চালানগুলি ভুটান, মালদ্বীপ, বাংলাদেশ, নেপাল, মরিশাস, সেশেলস এবং শ্রীলঙ্কার মতো আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলি বাইরে সুদূর ব্রাজিল এবং মরক্কোতেও পৌঁছেছে।


অন্যান্য মূল বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জগুলিও আজ একই ধরণের মনোযোগের দাবি রাখে। প্যারিস চুক্তির একটি কেন্দ্রীয় অংশগ্রহণকারী হিসাবে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভারত দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে। ভারতের নবায়নযোগ্য শক্তির লক্ষ্যগুলি বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে, বনাঞ্চল সম্প্রসারিত হয়েছে, জীববৈচিত্র্য প্রসারিত হয়েছে এবং জলের ব্যবহারের উপর গুরুত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের অভ্যন্তরে প্রচলিত সেরা অনুশীলনগুলি এখন আফ্রিকা এবং অন্যান্য উন্নয়ন অংশীদার দেশগুলিতে প্রয়োগ করা হচ্ছে। উদাহরণ এবং শক্তির মাধ্যমে ভারতীয় কূটনীতি আন্তর্জাতিক সৌর জোট এবং দুর্যোগ প্রতিরোধ অবকাঠামো জোট উদ্যোগের মধ্যে দিয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছে।

সন্ত্রাস ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের চ্যালেঞ্জও ভয়াবহ। দীর্ঘদিন ধরে আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসী হামলার শিকার হওয়া একটি সমাজ হিসেবে, ভারত বিশ্ব সচেতনতা বাড়াতে এবং সমন্বিত পদক্ষেপে উৎসাহিত করতে সক্রিয় রয়েছে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য এবং এফএটিএফ ও জি-২০ এর মতো ফোরামের সদস্য হিসেবে ভারতের কূটনীতিতে এই বিষয়ে প্রধান দৃষ্টি নিবদ্ধ থাকবে।

কোভিড-১৯ এর অভিজ্ঞতার মধ্যে অন্যতম রয়েছে ডিজিটাল ডোমেইনের শক্তি। কন্টাক্ট ট্রেসিং বা আর্থিক এবং খাদ্য সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে হোক, ২০১৪ সালের পরে ভারতের ডিজিটাল দৃষ্টিভঙ্গি আশাব্যঞ্জক ফলাফল পেয়েছে। কোভিড-১৯ এর কারণে “স্টাডি ফ্রম হোম” এর চেয়েও “ওয়ার্ক ফ্রম এনিহোয়্যার” অনুশীলন জোরালোভাবে বাড়ানো হয়েছিল। এগুলি বিদেশে ভারতের উন্নয়ন কর্মসূচির উপাদান প্রসারিত করতে এবং অনেক অংশীদারদের পুনরুদ্ধারে সহায়তা করবে।

২০২০ সালে ইতিহাসের বৃহত্তম প্রত্যাবাসন অনুশীলনও দেখেছিল বিশ্ব যাতে ৪ মিলিয়নেরও বেশি ভারতীয় স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিল। এটি সমসাময়িক সময়ে গতিশীলতার গুরুত্বকে সামনে নিয়ে আসে। স্মার্ট উৎপাদন এবং জ্ঞান অর্থনীতি পোক্ত হওয়ার সাথে সাথে বিশ্বস্ত প্রতিভার প্রয়োজন অবশ্যই বৃদ্ধি পাবে। বিশ্বের স্বার্থেই কূটনীতির মাধ্যমে এই চলাচলকে সহজতর করতে হবে।

২০২১ সালে স্বাভাবিকতায় ফিরে আসার অর্থ হবে নিরাপদ ভ্রমণ, উন্নত স্বাস্থ্য, অর্থনৈতিক পুনর্জাগরণ এবং ডিজিটাল পরিষেবা। এই বিষয়গুলো পাবে নতুন সংজ্ঞা এবং নতুন ভাষা। কোভিড-১৯ পরবর্তী বিশ্ব আরও বহু-মেরু, বহুত্ববাদী এবং পুনরায় ভারসাম্যপূর্ণ হবে এবং ভারত তার অভিজ্ঞতা দিয়ে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে সাহায্য করবে। সূত্র ভারতীয় হাইকমিশনার।
ড. এস জয়শংকর, ভারতের বিদেশমন্ত্রী