ঢাকা ১২:২২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী ও তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাব স্থগিত

ভয়েস ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৬:১১:৪৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ জুলাই ২০২১ ২১৭ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এসকে সুর চৌধুরী ও তার স্ত্রী সুপর্ণা চৌধুরীর ব্যাংক হিসাব স্থগিত করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। বুধবার  এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা-সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল (সিআইসি) দেশের সব বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে এ সংক্রান্ত চিঠি দেয়।

বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এসকে সুর চৌধুরী বা সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরী ও তার স্ত্রী সুপর্ণা সুর চৌধুরীর নামে আপনার ব্যাংকে

পরিচালিত সব হিসাব হতে অর্থ উত্তোলন বা স্থানান্তর স্থগিত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ এর ১১৬-এ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে অনুরোধ করা হলো। চিঠিতে এসকে সুর চৌধুরী বাসার ঠিকানা দেওয়া হয়েছে ফ্লাট নং ২/৬০২, ইস্টার্ন উলানিয়া, ২, সেগুনবাগিচা, ঢাকা। অথবা ৩০/২, ওয়েস্ট রাম্পুরা, ঢাকা-১২১৯।

এনবিআরের চিঠিতে স্থগিতাদেশ তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর করে এ সংক্রান্ত একটি পরিপালন প্রতিবেদন (হিসাবসমূহের সর্বশেষ স্থিতি উল্লেখসহ) জরুরি ভিত্তিতে অবগত করার জন্যও অনুরোধ করা হয়েছে।

এর আগে এ বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি এসকে সুর চৌধুরী ও তার স্ত্রী এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান নির্বাহী পরিচালক মো. শাহ আলমসহ পাঁচ জনের ব্যাংক হিসাব তলব করে এনবিআর।

বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান দখল করে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতে অভিযুক্ত প্রশান্ত কুমার হালদারকে (পি কে হালদার) সহযোগিতার অভিযোগ রয়েছে সুর চৌধুরীর বিরুদ্ধে।

অভিযোগ রয়েছে, সুর চৌধুরী ও মো. শাহ আলম দায়িত্বে থাকাকালীন ঘুষের বিনিময়ে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাটের তথ্য চাপা দিয়েছেন।

ইতোমধ্যে বিষয়‌টি তদ‌ন্তে উচ্চ পর্যা‌য়ে ক‌মি‌টি গঠন ক‌রে‌ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এরমধ্যে গত ৪ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব থেকে নির্বাহী পরিচালক শাহ আলমকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে।

পি কে হালদারের অনিয়মের সহযোগী হিসেবে আটক ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের সাবেক এমডি রাশেদুল হক ও পিপলস লিজিংয়ের সাবেক চেয়ারম্যান উজ্জল কুমার নন্দি আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ঘুষ নেয়ার অভিযোগ করেন।

রাশেদুল হক জবানবন্দিতে বলেন, পি কে হালদারের ক্ষমতার অন্যতম উৎস ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের তৎকালীন ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী। তার মাধ্যমেই পি কে হালদার বিভিন্ন অনিয়ম চাপা দিতেন। আর আর্থিক প্রতিষ্ঠান দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত তৎকালীন মহাব্যবস্থাপক ও বর্তমানে নির্বাহী পরিচালক মো. শাহ আলমকে প্রতি মাসে দেয়া হতো দুই লাখ টাকা।

এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন বিভাগের সহকারী পরিচালক থেকে যুগ্ম পরিচালক পর্যায়ের কর্মকর্তারা বছরে দু’বার পরিদর্শনে আসতেন। অনিয়ম না ধরার জন্য প্রতিবার তাদের ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা দেয়া হতো। এরপর গত ফেব্রুয়ারিতে তাদের ও পরিবারের সদস্যদের অ্যাকাউন্ট তলব করে এনবিআর।

প্রসঙ্গত, এর আগে এসকে সুরসহ বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের অনিয়ম-দুর্নীতি খতিয়ে দেখতে উচ্চ পর্যায়ের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই কমিটি সম্প্রতি এসকে সুর চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।

জানা গেছে, কয়েক কোটি টাকা ঘুষের বিনিময়ে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার লোপাটের তথ্য চাপা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এসকে সুর চৌধুরী, সাবেক মহাব্যবস্থাপক ও বর্তমান নির্বাহী পরিচালক মো. শাহ আলমসহ পাঁচ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী ও তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাব স্থগিত

আপডেট সময় : ০৬:১১:৪৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ জুলাই ২০২১

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এসকে সুর চৌধুরী ও তার স্ত্রী সুপর্ণা চৌধুরীর ব্যাংক হিসাব স্থগিত করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। বুধবার  এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা-সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল (সিআইসি) দেশের সব বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে এ সংক্রান্ত চিঠি দেয়।

বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এসকে সুর চৌধুরী বা সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরী ও তার স্ত্রী সুপর্ণা সুর চৌধুরীর নামে আপনার ব্যাংকে

পরিচালিত সব হিসাব হতে অর্থ উত্তোলন বা স্থানান্তর স্থগিত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ এর ১১৬-এ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে অনুরোধ করা হলো। চিঠিতে এসকে সুর চৌধুরী বাসার ঠিকানা দেওয়া হয়েছে ফ্লাট নং ২/৬০২, ইস্টার্ন উলানিয়া, ২, সেগুনবাগিচা, ঢাকা। অথবা ৩০/২, ওয়েস্ট রাম্পুরা, ঢাকা-১২১৯।

এনবিআরের চিঠিতে স্থগিতাদেশ তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর করে এ সংক্রান্ত একটি পরিপালন প্রতিবেদন (হিসাবসমূহের সর্বশেষ স্থিতি উল্লেখসহ) জরুরি ভিত্তিতে অবগত করার জন্যও অনুরোধ করা হয়েছে।

এর আগে এ বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি এসকে সুর চৌধুরী ও তার স্ত্রী এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান নির্বাহী পরিচালক মো. শাহ আলমসহ পাঁচ জনের ব্যাংক হিসাব তলব করে এনবিআর।

বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান দখল করে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতে অভিযুক্ত প্রশান্ত কুমার হালদারকে (পি কে হালদার) সহযোগিতার অভিযোগ রয়েছে সুর চৌধুরীর বিরুদ্ধে।

অভিযোগ রয়েছে, সুর চৌধুরী ও মো. শাহ আলম দায়িত্বে থাকাকালীন ঘুষের বিনিময়ে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাটের তথ্য চাপা দিয়েছেন।

ইতোমধ্যে বিষয়‌টি তদ‌ন্তে উচ্চ পর্যা‌য়ে ক‌মি‌টি গঠন ক‌রে‌ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এরমধ্যে গত ৪ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব থেকে নির্বাহী পরিচালক শাহ আলমকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে।

পি কে হালদারের অনিয়মের সহযোগী হিসেবে আটক ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের সাবেক এমডি রাশেদুল হক ও পিপলস লিজিংয়ের সাবেক চেয়ারম্যান উজ্জল কুমার নন্দি আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ঘুষ নেয়ার অভিযোগ করেন।

রাশেদুল হক জবানবন্দিতে বলেন, পি কে হালদারের ক্ষমতার অন্যতম উৎস ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের তৎকালীন ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী। তার মাধ্যমেই পি কে হালদার বিভিন্ন অনিয়ম চাপা দিতেন। আর আর্থিক প্রতিষ্ঠান দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত তৎকালীন মহাব্যবস্থাপক ও বর্তমানে নির্বাহী পরিচালক মো. শাহ আলমকে প্রতি মাসে দেয়া হতো দুই লাখ টাকা।

এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন বিভাগের সহকারী পরিচালক থেকে যুগ্ম পরিচালক পর্যায়ের কর্মকর্তারা বছরে দু’বার পরিদর্শনে আসতেন। অনিয়ম না ধরার জন্য প্রতিবার তাদের ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা দেয়া হতো। এরপর গত ফেব্রুয়ারিতে তাদের ও পরিবারের সদস্যদের অ্যাকাউন্ট তলব করে এনবিআর।

প্রসঙ্গত, এর আগে এসকে সুরসহ বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের অনিয়ম-দুর্নীতি খতিয়ে দেখতে উচ্চ পর্যায়ের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই কমিটি সম্প্রতি এসকে সুর চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।

জানা গেছে, কয়েক কোটি টাকা ঘুষের বিনিময়ে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার লোপাটের তথ্য চাপা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এসকে সুর চৌধুরী, সাবেক মহাব্যবস্থাপক ও বর্তমান নির্বাহী পরিচালক মো. শাহ আলমসহ পাঁচ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।