ঢাকা ০৮:৩৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রেখে অর্থবিল পাস, বাড়ছে জরিমানা

ভয়েস ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৯:২৩:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুন ২০২১ ১৭৩ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছবি পিআইডি

নতুন শিল্পে বিনিয়োগ, পুঁজিবাজার, ফ্ল্যাট ও প্লট, ব্যাংক আমানতসহ বেশ কয়েকটি খাতে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রেখে অর্থবিল ২০২১ পাস হয়েছে। এক্ষেত্রে বাড়ানো হয়েছে জরিমানা।

মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত অর্থবিলে জরিমানা দিয়ে অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার বিশেষ সুযোগ দেওয়ার সংশোধনী আনা হয়।

স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অধিবেশনে সংসদ সদস্যদের কণ্ঠভোটে আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য এই বিল পাস হয়। অর্থবিল পাসের সময় সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন।

৩ জুন প্রস্তাবিত বাজেটে পুঁজিবাজারসহ বেশ কয়েকটি খাতে কালো টাকা তথা ‘অপ্রদর্শিত অর্থ’ বিনাপ্রশ্নে সাদা করার অবাধ সুযোগ অব্যাহত রাখার বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।

প্রস্তাবিত অর্থবিলেও তখন এই বিষয়ে কিছু উল্লেখ না থাকলে কালো টাকা সাদা করার বিশেষ সুযোগ শেষ হচ্ছে বলে আলোচনা তৈরি হয়। বাজেট প্রস্তাবের পরদিন সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এই বিষয়ে আলোচনার সুযোগ রেখে তা বহাল রাখার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন।

তবে মঙ্গলবারের সংসদ অধিবেশনে শেষ পর্যন্ত কালো টাকা সাদা করার প্রচলিত নিয়মের বাইরেও বিদায়ী অর্থবছরের চেয়ে জরিমানা ও শর্ত বাড়িয়ে প্রশ্ন ছাড়া বিশেষ সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাব অনুমোদন হয।
পাস হওয়া অর্থবিলে আগামী অর্থবছরে পুঁজিবাজারে প্রশ্নাতীতভাবে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ অব্যাহত রাখা হয়েছে।

করোনাকালীন সংক্রমণ এড়াতে সীমিত আকারে বসেছে জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশন। অধিবেশন কক্ষে সংসদ সদস্যদের বসতে শারীরিক দূরত্বের পাশিপাশি মুখে মাস্ক আর হাতে গ্লাভস পরে ছবি: পিআইডি

তালিকাভুক্ত শেয়ার, বন্ড, মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিটসহ পুঁজিবাজারের বিভিন্ন ইনস্ট্রুমেন্টে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ কর এবং মোট করের ওপর ৫ শতাংশ জরিমানা গুণতে হবে। এই সুযোগ নিয়ে বিনিয়োগের পর তা এক বছরের মধ্যে তুলতে চাইলে ১০ শতাংশ হারে জরিমানা গুণতে হবে।

অপর দিকে ২৫ শতাংশ কর এবং করের ওপর ৫ শতাংশ জরিমানা দিয়ে নগদ টাকা, ব্যাংক ডিপোজিট, ফিনান্সিয়াল স্কিম ও ইন্সট্রুমেন্ট, সব ধরনের ডিপোজিট ও সেভিংস ডিপোজিট, সেভিং ইনস্ট্রুমেন্ট অথবা সেভিং সার্টিফিকেট (সঞ্চয়পত্র) বৈধ প্রক্রিয়ায় নিয়ে আসা যাবে বলে অনুমোদিত সংশোধনীতে বলা হয়েছে।

এছাড়া জায়গা অনুপাতে নির্দিষ্ট পরিমাণ কর ও জরিমানা দিয়ে অপ্রর্শিত জমি, ভবন, এপার্টমেন্ট প্রশ্নাতীতভাবে বৈধ করার সুযোগ রাখা হয়েছে অর্থবিলে। পাশাপাশি ১০ শতাংশ কর দিয়ে নতুন শিল্পায়নে বিনিয়োগ করা যাবে অপ্রদর্শিত অর্থ।

গত বাজেটে শুধু বিদায়ী ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য কিছু ক্ষেত্রে প্রশ্ন ছাড়াই কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। সংসদে কণ্ঠভোটে এই বিল পাস হওয়ার আগে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও বিএনপির সংসদ সদস্যদের দেওয়া সংশোধনী প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়।

সরকার দলীয় সংসদ সদস্য আব্দুস শহীদ, হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন ও ওয়াশিকা আয়েশা খানের সংশোধনী প্রস্তাবগুলো গ্রহণ করা হয়।

নতুন অর্থবিলে নতুন এসব সুযোগের পাশাপাশি আগের ঘোষণা অনুযায়ী, হাইটেক পার্ক ও অর্থনৈতিক অঞ্চলে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এবং জমি ও ফ্ল্যাট কেনার ক্ষেত্রে এমন সুযোগ থাকছে।
এনবিআর কর্মকর্তারা জানান, এর বাইরেও আয়কর অধ্যাদেশ অনুযায়ী, অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার সুযোগ থেকে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে ‘প্রযোজ্য হারে’ আয়কর ও জরিমানা দিতে হবে এবং অর্থের উৎস জানাতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রেখে অর্থবিল পাস, বাড়ছে জরিমানা

আপডেট সময় : ০৯:২৩:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুন ২০২১

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছবি পিআইডি

নতুন শিল্পে বিনিয়োগ, পুঁজিবাজার, ফ্ল্যাট ও প্লট, ব্যাংক আমানতসহ বেশ কয়েকটি খাতে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রেখে অর্থবিল ২০২১ পাস হয়েছে। এক্ষেত্রে বাড়ানো হয়েছে জরিমানা।

মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত অর্থবিলে জরিমানা দিয়ে অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার বিশেষ সুযোগ দেওয়ার সংশোধনী আনা হয়।

স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অধিবেশনে সংসদ সদস্যদের কণ্ঠভোটে আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য এই বিল পাস হয়। অর্থবিল পাসের সময় সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন।

৩ জুন প্রস্তাবিত বাজেটে পুঁজিবাজারসহ বেশ কয়েকটি খাতে কালো টাকা তথা ‘অপ্রদর্শিত অর্থ’ বিনাপ্রশ্নে সাদা করার অবাধ সুযোগ অব্যাহত রাখার বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।

প্রস্তাবিত অর্থবিলেও তখন এই বিষয়ে কিছু উল্লেখ না থাকলে কালো টাকা সাদা করার বিশেষ সুযোগ শেষ হচ্ছে বলে আলোচনা তৈরি হয়। বাজেট প্রস্তাবের পরদিন সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এই বিষয়ে আলোচনার সুযোগ রেখে তা বহাল রাখার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন।

তবে মঙ্গলবারের সংসদ অধিবেশনে শেষ পর্যন্ত কালো টাকা সাদা করার প্রচলিত নিয়মের বাইরেও বিদায়ী অর্থবছরের চেয়ে জরিমানা ও শর্ত বাড়িয়ে প্রশ্ন ছাড়া বিশেষ সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাব অনুমোদন হয।
পাস হওয়া অর্থবিলে আগামী অর্থবছরে পুঁজিবাজারে প্রশ্নাতীতভাবে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ অব্যাহত রাখা হয়েছে।

করোনাকালীন সংক্রমণ এড়াতে সীমিত আকারে বসেছে জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশন। অধিবেশন কক্ষে সংসদ সদস্যদের বসতে শারীরিক দূরত্বের পাশিপাশি মুখে মাস্ক আর হাতে গ্লাভস পরে ছবি: পিআইডি

তালিকাভুক্ত শেয়ার, বন্ড, মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিটসহ পুঁজিবাজারের বিভিন্ন ইনস্ট্রুমেন্টে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ কর এবং মোট করের ওপর ৫ শতাংশ জরিমানা গুণতে হবে। এই সুযোগ নিয়ে বিনিয়োগের পর তা এক বছরের মধ্যে তুলতে চাইলে ১০ শতাংশ হারে জরিমানা গুণতে হবে।

অপর দিকে ২৫ শতাংশ কর এবং করের ওপর ৫ শতাংশ জরিমানা দিয়ে নগদ টাকা, ব্যাংক ডিপোজিট, ফিনান্সিয়াল স্কিম ও ইন্সট্রুমেন্ট, সব ধরনের ডিপোজিট ও সেভিংস ডিপোজিট, সেভিং ইনস্ট্রুমেন্ট অথবা সেভিং সার্টিফিকেট (সঞ্চয়পত্র) বৈধ প্রক্রিয়ায় নিয়ে আসা যাবে বলে অনুমোদিত সংশোধনীতে বলা হয়েছে।

এছাড়া জায়গা অনুপাতে নির্দিষ্ট পরিমাণ কর ও জরিমানা দিয়ে অপ্রর্শিত জমি, ভবন, এপার্টমেন্ট প্রশ্নাতীতভাবে বৈধ করার সুযোগ রাখা হয়েছে অর্থবিলে। পাশাপাশি ১০ শতাংশ কর দিয়ে নতুন শিল্পায়নে বিনিয়োগ করা যাবে অপ্রদর্শিত অর্থ।

গত বাজেটে শুধু বিদায়ী ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য কিছু ক্ষেত্রে প্রশ্ন ছাড়াই কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। সংসদে কণ্ঠভোটে এই বিল পাস হওয়ার আগে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও বিএনপির সংসদ সদস্যদের দেওয়া সংশোধনী প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়।

সরকার দলীয় সংসদ সদস্য আব্দুস শহীদ, হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন ও ওয়াশিকা আয়েশা খানের সংশোধনী প্রস্তাবগুলো গ্রহণ করা হয়।

নতুন অর্থবিলে নতুন এসব সুযোগের পাশাপাশি আগের ঘোষণা অনুযায়ী, হাইটেক পার্ক ও অর্থনৈতিক অঞ্চলে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এবং জমি ও ফ্ল্যাট কেনার ক্ষেত্রে এমন সুযোগ থাকছে।
এনবিআর কর্মকর্তারা জানান, এর বাইরেও আয়কর অধ্যাদেশ অনুযায়ী, অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার সুযোগ থেকে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে ‘প্রযোজ্য হারে’ আয়কর ও জরিমানা দিতে হবে এবং অর্থের উৎস জানাতে হবে।