এশিয়ার সর্ববৃহৎ দুর্গোৎসবের আয়োজন ‘বাগেরহাট শিকবাড়ি’র
- আপডেট সময় : ০৯:৩২:৪৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৩ ৭০ বার পড়া হয়েছে
এশিয়ার সবচেয়ে বড় দূর্গোৎসবের আয়োজন করা হয়, বাংলাদেশের দক্ষিণের জেলা বাগেরহাটে।
এটি বাগেরহাট ‘শিকদার বাড়ির’ পূজো নামে খ্যাত। তিন বছর পর ৫০১টি প্রতিমা নিয়ে এবারে
শিকদার বাড়ির পূজোর আয়োজন করা হয়েছে
এ এইচ ঋদ্ধিমান
তিন বছরের যন্ত্রনামুক্ত হলেন লিটন শিকদার। অতিমারির সময়টাতে আয়োজনের ব্যাপকতা থেকে পিছিয়ে থাকতে হয়েছে।
প্রথম বছরে জলপান করাটাও ছিল কষ্টের। স্ত্রী পূজা দেবী স্বামীর যন্ত্রণা বুঝতে পেরে সাহস যোগিয়েছেন। লিটন বাবুকে অভয়
দিয়ে বলতেন, এমন পরিস্থিতির অবসান হবে। ঈশ্বর পৃথিবীর মানুষকে মুক্ত করবে। পূজা দেবীর শান্তনাকে বুকে চেপে তিনটি
বছর কাটিয়েছেন লিটন বাবু। এবারে যন্ত্রণামুক্ত হলেন। সিংহ দুয়ারী বাড়ির আঙ্গিনায় জলভর্তি পুকুর তীরে দাঁড়িয়ে দীর্ঘ নিঃশ্বাস
নিয়ে নিজেকে হাল্কা করেন লিটন শিকদার।
৫০১টি প্রতিমা
এশিয়ার সবচেয়ে বড় দূর্গোৎসবের আয়োজন করা হয়, বাংলাদেশের দক্ষিণের জেলা বাগেরহাটে। এটি বাগেরহাট ‘শিকদার
বাড়ির’ পূজো নামে খ্যাত। তিন বছর পর ৫০১টি প্রতিমা নিয়ে এবারে শিকদার বাড়ির পূজোর আয়োজন করা হয়েছে।
শিকদার বাড়ির পূজো ঘিরে রয়েছে, নানা বৈচিত্র্য। বিশাল আয়তনের পূজামণ্ডপ জুড়ে ইতিহাস-ঐতিহ্যের সমন্বয় ঘটানো
হয়েছে। এখানে উপস্থিত সত্য, ত্রেতা, দ্বাপর ও কলিযুগে আর্বিভূত দেব-দেবী। পূজা মণ্ডপে সাজানো হয়েছে ৫০১টি প্রতিমা।
বাগেরহাট শিকদারবাড়ির শারদ উৎসবকে কেন্দ্র করে গোটা জেলাতো বটেই, গোটা দেশেই একটা আলাদা আমেজ সৃষ্টি
হয়েছে। বাগেরহাটের সর্বস্তরের মানুষ তিন বছর পর ফের উৎসবে মেতে ওঠছেন। এমনিতেই এলাকাবাসীর জন্য
শিকদারবাড়ির সিংহ দরজা সকাল-সন্ধ্য রাত অব্দি খোলা। এই বাড়িতে কেবল মানুষের বন্দনা করা হয়।
সিংহ দুয়ারী বাড়ির বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, ‘সবার ওপরে মানুষ সত্য তার ওপরে নাই’, ‘জীবে প্রেম করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর’।
জীবের আত্মারূপে স্রষ্টা স্বয়ং জীবের মধ্যেই অবস্থান করেন। তাই জীবের সেবা করলেই আসলে স্রষ্টারই সেবা করা হয়। বস্তুত
জীবের প্রতি আন্তরিক না হলে স্রষ্টার নৈকট্য লাভ করা সম্ভব নয়। স্বয়ং স্রষ্টার সৃষ্টিকে ভালোবাসার মাধ্যমেই কেবল স্রষ্টার
সান্নিধ্য লাভ করা সম্ভব।
মহাবিশ্বে যা কিছু সৃষ্টি হয়েছে সবই স্রষ্টার সৃষ্টি। সমস্ত জীবজগৎ তিনিই সৃষ্টি করেছেন পরম যত্নে নিয়ে, যেমন পরম
ভালোবাসায় তিনি সৃষ্টি করেছেন মানুষকে। তার মহাশক্তির অন্তত কিঞ্চিৎ ক্ষুদ্রাংশ শক্তি জীবজগতের তার সৃষ্ট প্রত্যেক
জীবের মধ্যেই বিরাজমান। অর্থাৎ জীবজগতের সবকিছুর মধ্যেই তার শক্তির এবং তার অস্তিত্বের উপস্থিতি রয়েছে।
কাজেই প্রত্যেক জীবের প্রতি দয়া পদর্শন করা আমাদের প্রত্যেকেরই পরম কর্তব্য। কেননা জীবসেবা করলেই
প্রকারান্তরে স্রষ্টার সেবা করা হয়। প্রত্যেক জীবের প্রতি যত্নবান হলে এবং তাদের ভালোবাসলে, তবেই সৃষ্টিকর্তার
প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শন করা হয়।
সেই মন্ত্রে দীক্ষিত হয়েই লিটন শিকদার পূর্ব পুরুষের পথ অনুসরণ করে চলেছেন। এলাকা নয়, গোটা দেশের মুখ
উজ্জল করতেই কাজ করে চলেছেন। সার্বজনীন উৎসবের মোড়কে সবাইকে একই ছাতার তলায় জড়ো করে
মানবসেবায় নিবেদীত হয়েছেন সমাজচিন্তক, ব্যবসায়ী লিটন শিকদার।