ঢাকা ০৭:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৩, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ই-বর্জ্য ফেরতে মিলবে অর্থ নতুন বিধিমালা

ভয়েস ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৮:৫৪:৪৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুন ২০২১ ১৭৪ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ই-বর্জ্য ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি ঢাকায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে আশঙ্কাজনক তথ্য ওঠে এসেছে। সেখানে বলা হয়েছে, ই-বর্জ্য সংগ্রহের সঙ্গে প্রায় ৫০ হাজার শিশু জড়িত। আর এসব শিশু শ্রমিকের মধ্যে প্রায় ১৫ শতাংশ ই-বর্জ্যজনিত কারণে মারা যায়!

ই-বর্জ্য তথা ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক পণ্যের সৃষ্ট বর্জ্য। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এসব বর্জ্য দ্রুত বাড়ছে। এবারে পরিবেশ অধিদপ্তর নতুন বিধিমালা করেছে। যেখানে বলা হয়েছে, উৎপাদনকারী বা সংযোজনকারী প্রতিষ্ঠানকেই এসব বর্জ্য ফেরত নিতে হবে। শুধু কি তাই, ই-বর্জ্য ফেরতে মিলবে অর্থও।

ব্যবহারের পর যেসব মুঠো ফোন, ল্যাপটপসহ অন্যান্য পণ্য অকেজো হয়ে ইলেকট্রনিক বর্জ্যে বা ই-বর্জ্যে পরিণত হবে, তা ফেরত দেওয়ার বিনিময়ে অর্থ পাবেন ব্যবহারকারী। এমন শর্ত রেখেই ঝুঁকিপূর্ণ বর্জ্য (ই-বর্জ্য) ব্যবস্থাপনা বিধিমালা-২০২১ প্রণয়ন করলো পরিবেশ ও বন মন্ত্রক।

 

এরই মধ্যে এটি গেজেট হিসেবে প্রকাশ করা হয়েছে। বিধিমালার ফলে বিদেশ থেকে এখন আর কেউ পুরনো বা ব্যবহৃত মোবাইল বা ল্যাপটপ আনতে পারবেন না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সচেতনতার অভাবে দিন দিন বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। শুধু আইনের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখলে চলবে না। সরকারের এই বিধিমালা দ্রুত বাস্তবায়নের তাগিদ রয়েছে বিশেষজ্ঞদের।

নতুন বিধিমালা প্রণয়নের সঙ্গে যুক্ত পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক (জলবায়ু পরিবর্তন ও আন্তর্জাতিক কনভেনশন) মির্জা শওকত আলী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, তাদের পরিকল্পনায় আইনটির সুষ্ঠু বাস্তবায়নে সাধারণকে অবহিত করতে হবে। জুলাই মাসেই সংশ্লিষ্টদের নিয়ে আলোচনা বসবেন তারা। ব্যবহারকারী কোন ধরণের ই-বর্জ্য ফেরতে কি পরিমাণ অর্থ পাবেন, সেই বিষয়টি অবশ্য বিধিমালায় রাখা হয়নি।

এক্ষেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশনা থাকবে মোট মূল্যের এক বা দুই শতাংশ অর্থ ব্যবহারকারী পাবেন। অর্থাৎ ২০ হাজার টাকার কোন একটি মুঠো ফোন ব্যবহারের পর ফেরত দেওয়া হলে ২০০ বা ৪০০ টাকা ব্যবহারকারী পাবেন। তারা আলোচনা করেই তা ঠিক করে নেবেন।

বিধিমালার কোনো শর্ত লঙ্ঘন করলে বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ (সংশোধিত, ২০১০)’ এর ১৫ (১) ধারা অনুযায়ী সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ডের বিধান রয়েছে। দ্বিতীয়বার একই অপরাধের ক্ষেত্রে সাজা বেড়ে দুই থেকে ১০ বছরের কারাদণ্ড বা দুই থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দন্ডের কথা বিধিমালায় উল্লেখ রাখা হয়েছে।

বিধিমালায় প্রস্তুতকারক, সংযোজনকারী ও বড় আমদানিকারকের ই-বর্জ্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। বিধিমালা বাস্তবায়নের প্রথম বছর প্রস্তুতকারক, সংযোজনকারী ও বড় আমদানিকারককে উৎপাদিত ই-বর্জ্যের ১০ শতাংশ সংগ্রহ করতে হবে।

দ্বিতীয় বছরে ২০ শতাংশ, তৃতীয় বছরে ৩০ শতাংশ, চতুর্থ বছরে ৪০ শতাংশ ও পঞ্চম বছরে ৫০ শতাংশ ই-বর্জ্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। আমরা প্রতিবেশী দেশগুলোর আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই তা করার কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিধিমালায় বলা হয়েছে, প্রত্যেক প্রস্তুতকারক, ব্যবসায়ী বা দোকানদার, সংগ্রহ কেন্দ্র, মেরামতকারী এবং পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকারী ই-বর্জ্য ১৮০ দিনের অতিরিক্ত সময় মজুত রাখতে পারবে না। কিছু ক্ষেত্রে আবেদনকারীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অধিদপ্তর সর্বোচ্চ ৯০ দিন পর্যন্ত বাড়াতে পারবে।

কোনো পুরোনো বা ব্যবহৃত ইলেট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক পণ্য আমদানি করা বা দান-অনুদান বা অন্য কোনোভাবে বিদেশ থেকে আনা যাবে না। গবেষণা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ব্যবহারের জন্য অধিদপ্তরের অনুমতি সাপেক্ষে আনা যাবে।

সম্প্রতি ঢাকায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে আশঙ্কাজনক তথ্য ওঠে এসেছে। সেখানে বলা হয়েছে, ই-বর্জ্য সংগ্রহের সঙ্গে প্রায় ৫০ হাজার শিশু জড়িত। আর এসব শিশু শ্রমিকের মধ্যে প্রায় ১৫ শতাংশ ই-বর্জ্যজনিত কারণে মারা যায়!

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাড়ছে ই-বর্জ্য। বিগত ১০ বছরে প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়েছে ৩০ থেকে ৪০ গুণ। প্রযুক্তিপণ্য ব্যবহারের পর ফেলে দেওয়া হচ্ছে ডাস্টবিনে। সেগুলো মাটির সঙ্গে মিশে যাচ্ছে। বেসরকারি সংস্থা এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অরগানাইজেশনের (ইএসডিও) গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি বছর দেশে প্রায় ৪ লাখ টন ই-বর্জ্য উৎপাদিত হচ্ছে।

২০২৩ সালে যার পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ১২ লাখ মেট্রিক টন। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার বলেন, সবাই মিলে সমন্বিতভাবে কাজ করলেই সুফল মিলবে।

ই-বর্জ্য নিয়ে শুধু বাংলাদেশ নয়, এশিয়ার সবগুলো দেশই সংকটে রয়েছে। প্রতিদিনই বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি ও পরিবেশদূষণ। এই বিপদ থেকে বাঁচার উপায় হলো ই-বর্জ্যে নিরাপদ ব্যবস্থাপনা ও পুনর্ব্যবহার। এশিয়ার ই-বর্জ্য নিয়ে ইউনাইটেড ন্যাশনস ইউনিভার্সিটি গত বছর এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে এশিয়ায় ই-বর্জ্যরে পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ৬৩ শতাংশ। ১২টি দেশের ওপর চালানো গবেষণা দেখা গেছে, পাঁচ বছরে ই-বর্জ্যে পরিমাণ ছিলো ১ কোটি ২৩ লাখ টন। এদের মধ্যে চীনের অবস্থা ভয়াবহ। এই সময় তাদের দ্বিগুণের বেশি বেড়ে ই-বর্জ অর্থাৎ ৬৬ লাখ ৮১ হাজার টন। যা পুরো এশিয়ার জন্য উদ্বেগের কারণ বলা হচ্ছে।

টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে সম্ভাবনাময় উল্লেখ করে বলেন, এর জন্য বিজনেস প্ল্যান বা ব্যবসায়িক পরিকল্পনা প্রয়োজন। যাতে সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা করা যায়। তাহলে এটা আর ঝুঁকিপূর্ণ থাকবে না। ই-বর্জ্য কিন্তু কমবে না বরং দিনে দিনে এর ব্যবহার বাড়বে। পুরনো প্রযুক্তি বাদ দিয়ে নতুন প্রযুক্তিতে যেতে হবে। পাশাপাশি ব্যবস্থাপনাও করতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published.

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

ই-বর্জ্য ফেরতে মিলবে অর্থ নতুন বিধিমালা

আপডেট সময় : ০৮:৫৪:৪৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুন ২০২১

ই-বর্জ্য ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি ঢাকায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে আশঙ্কাজনক তথ্য ওঠে এসেছে। সেখানে বলা হয়েছে, ই-বর্জ্য সংগ্রহের সঙ্গে প্রায় ৫০ হাজার শিশু জড়িত। আর এসব শিশু শ্রমিকের মধ্যে প্রায় ১৫ শতাংশ ই-বর্জ্যজনিত কারণে মারা যায়!

ই-বর্জ্য তথা ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক পণ্যের সৃষ্ট বর্জ্য। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এসব বর্জ্য দ্রুত বাড়ছে। এবারে পরিবেশ অধিদপ্তর নতুন বিধিমালা করেছে। যেখানে বলা হয়েছে, উৎপাদনকারী বা সংযোজনকারী প্রতিষ্ঠানকেই এসব বর্জ্য ফেরত নিতে হবে। শুধু কি তাই, ই-বর্জ্য ফেরতে মিলবে অর্থও।

ব্যবহারের পর যেসব মুঠো ফোন, ল্যাপটপসহ অন্যান্য পণ্য অকেজো হয়ে ইলেকট্রনিক বর্জ্যে বা ই-বর্জ্যে পরিণত হবে, তা ফেরত দেওয়ার বিনিময়ে অর্থ পাবেন ব্যবহারকারী। এমন শর্ত রেখেই ঝুঁকিপূর্ণ বর্জ্য (ই-বর্জ্য) ব্যবস্থাপনা বিধিমালা-২০২১ প্রণয়ন করলো পরিবেশ ও বন মন্ত্রক।

 

এরই মধ্যে এটি গেজেট হিসেবে প্রকাশ করা হয়েছে। বিধিমালার ফলে বিদেশ থেকে এখন আর কেউ পুরনো বা ব্যবহৃত মোবাইল বা ল্যাপটপ আনতে পারবেন না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সচেতনতার অভাবে দিন দিন বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। শুধু আইনের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখলে চলবে না। সরকারের এই বিধিমালা দ্রুত বাস্তবায়নের তাগিদ রয়েছে বিশেষজ্ঞদের।

নতুন বিধিমালা প্রণয়নের সঙ্গে যুক্ত পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক (জলবায়ু পরিবর্তন ও আন্তর্জাতিক কনভেনশন) মির্জা শওকত আলী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, তাদের পরিকল্পনায় আইনটির সুষ্ঠু বাস্তবায়নে সাধারণকে অবহিত করতে হবে। জুলাই মাসেই সংশ্লিষ্টদের নিয়ে আলোচনা বসবেন তারা। ব্যবহারকারী কোন ধরণের ই-বর্জ্য ফেরতে কি পরিমাণ অর্থ পাবেন, সেই বিষয়টি অবশ্য বিধিমালায় রাখা হয়নি।

এক্ষেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশনা থাকবে মোট মূল্যের এক বা দুই শতাংশ অর্থ ব্যবহারকারী পাবেন। অর্থাৎ ২০ হাজার টাকার কোন একটি মুঠো ফোন ব্যবহারের পর ফেরত দেওয়া হলে ২০০ বা ৪০০ টাকা ব্যবহারকারী পাবেন। তারা আলোচনা করেই তা ঠিক করে নেবেন।

বিধিমালার কোনো শর্ত লঙ্ঘন করলে বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ (সংশোধিত, ২০১০)’ এর ১৫ (১) ধারা অনুযায়ী সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ডের বিধান রয়েছে। দ্বিতীয়বার একই অপরাধের ক্ষেত্রে সাজা বেড়ে দুই থেকে ১০ বছরের কারাদণ্ড বা দুই থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দন্ডের কথা বিধিমালায় উল্লেখ রাখা হয়েছে।

বিধিমালায় প্রস্তুতকারক, সংযোজনকারী ও বড় আমদানিকারকের ই-বর্জ্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। বিধিমালা বাস্তবায়নের প্রথম বছর প্রস্তুতকারক, সংযোজনকারী ও বড় আমদানিকারককে উৎপাদিত ই-বর্জ্যের ১০ শতাংশ সংগ্রহ করতে হবে।

দ্বিতীয় বছরে ২০ শতাংশ, তৃতীয় বছরে ৩০ শতাংশ, চতুর্থ বছরে ৪০ শতাংশ ও পঞ্চম বছরে ৫০ শতাংশ ই-বর্জ্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। আমরা প্রতিবেশী দেশগুলোর আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই তা করার কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিধিমালায় বলা হয়েছে, প্রত্যেক প্রস্তুতকারক, ব্যবসায়ী বা দোকানদার, সংগ্রহ কেন্দ্র, মেরামতকারী এবং পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকারী ই-বর্জ্য ১৮০ দিনের অতিরিক্ত সময় মজুত রাখতে পারবে না। কিছু ক্ষেত্রে আবেদনকারীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অধিদপ্তর সর্বোচ্চ ৯০ দিন পর্যন্ত বাড়াতে পারবে।

কোনো পুরোনো বা ব্যবহৃত ইলেট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক পণ্য আমদানি করা বা দান-অনুদান বা অন্য কোনোভাবে বিদেশ থেকে আনা যাবে না। গবেষণা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ব্যবহারের জন্য অধিদপ্তরের অনুমতি সাপেক্ষে আনা যাবে।

সম্প্রতি ঢাকায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে আশঙ্কাজনক তথ্য ওঠে এসেছে। সেখানে বলা হয়েছে, ই-বর্জ্য সংগ্রহের সঙ্গে প্রায় ৫০ হাজার শিশু জড়িত। আর এসব শিশু শ্রমিকের মধ্যে প্রায় ১৫ শতাংশ ই-বর্জ্যজনিত কারণে মারা যায়!

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাড়ছে ই-বর্জ্য। বিগত ১০ বছরে প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়েছে ৩০ থেকে ৪০ গুণ। প্রযুক্তিপণ্য ব্যবহারের পর ফেলে দেওয়া হচ্ছে ডাস্টবিনে। সেগুলো মাটির সঙ্গে মিশে যাচ্ছে। বেসরকারি সংস্থা এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অরগানাইজেশনের (ইএসডিও) গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি বছর দেশে প্রায় ৪ লাখ টন ই-বর্জ্য উৎপাদিত হচ্ছে।

২০২৩ সালে যার পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ১২ লাখ মেট্রিক টন। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার বলেন, সবাই মিলে সমন্বিতভাবে কাজ করলেই সুফল মিলবে।

ই-বর্জ্য নিয়ে শুধু বাংলাদেশ নয়, এশিয়ার সবগুলো দেশই সংকটে রয়েছে। প্রতিদিনই বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি ও পরিবেশদূষণ। এই বিপদ থেকে বাঁচার উপায় হলো ই-বর্জ্যে নিরাপদ ব্যবস্থাপনা ও পুনর্ব্যবহার। এশিয়ার ই-বর্জ্য নিয়ে ইউনাইটেড ন্যাশনস ইউনিভার্সিটি গত বছর এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে এশিয়ায় ই-বর্জ্যরে পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ৬৩ শতাংশ। ১২টি দেশের ওপর চালানো গবেষণা দেখা গেছে, পাঁচ বছরে ই-বর্জ্যে পরিমাণ ছিলো ১ কোটি ২৩ লাখ টন। এদের মধ্যে চীনের অবস্থা ভয়াবহ। এই সময় তাদের দ্বিগুণের বেশি বেড়ে ই-বর্জ অর্থাৎ ৬৬ লাখ ৮১ হাজার টন। যা পুরো এশিয়ার জন্য উদ্বেগের কারণ বলা হচ্ছে।

টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে সম্ভাবনাময় উল্লেখ করে বলেন, এর জন্য বিজনেস প্ল্যান বা ব্যবসায়িক পরিকল্পনা প্রয়োজন। যাতে সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা করা যায়। তাহলে এটা আর ঝুঁকিপূর্ণ থাকবে না। ই-বর্জ্য কিন্তু কমবে না বরং দিনে দিনে এর ব্যবহার বাড়বে। পুরনো প্রযুক্তি বাদ দিয়ে নতুন প্রযুক্তিতে যেতে হবে। পাশাপাশি ব্যবস্থাপনাও করতে হবে।