আ. লীগ নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত অবরোধের ডাক

- আপডেট সময় : ০৭:১৪:২৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ মে ২০২৫ ৫৩ বার পড়া হয়েছে
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করার কথা জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় জানিয়েছে, মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত সংগঠনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনার উদ্যোগ নিয়েছে।
সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের দেশত্যাগের খবর নিয়ে আলোচনার মধ্যে বৃহস্পতিবার রাত থেকে সরকার প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে অবস্থান নেয় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
এনসিপির দাবির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছে জামায়াতে ইসলামী, এবি পার্টি, ইসলামী ছাত্রশিবির, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, হেফাজতে ইসলাম এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
শুক্রবার জুমার পর সেখানে বড় জমায়েতের আয়োজন হয়। এরইমধ্যে দুপুরের পর প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করে বিবৃতি দেয়।
এদিকে শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপন জারি হলেই শাহবাগ অবরোধ তুলে নেওয়া হবে। শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে ঘোষণা আসলো জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) তরফে। জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনে প্রধানমন্ত্রীর পদে ইস্তফা দিয়ে ভারতে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। এবারে হাসিনার দল আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার দাবি নিয়ে ফের রাজপথ অবরোধ করলো আন্দোলনকারীরা। প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের কাছাকাছি অবস্থান নিয়ে এনসিপি।
অবরোধ মঞ্চ থেকে এনসিপির নেতা হাসনাত অবদুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশের অগ্রগতি সেদিন থেকে শুরু হবে, যেদিন থেকে টাইটেলটা হবে আওয়ামী লীগহীন বাংলাদেশ হবে। তাই এখন আমরা শাহবাগ ব্লকেড করব। গত দু’দিনের তীব্র আন্দোলনের পর শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে বিবৃতি জারি করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার দাবি সরকার গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়ে বলা হয়, সম্প্রতি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও জনগণের পক্ষ থেকে স্বৈরশাসন ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের অভিযোগে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার যে দাবি উঠেছে, তা সরকার গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে। এ ব্যাপারে সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ইতোমধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করেছে, তাদের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবে।
জাতিসংঘের হিসাব মতে, জুলাই অভ্যুত্থানে হাসিনার নির্দেশে নিরাপত্তা বাহিনী ও আওয়ামী লীগের সশস্ত্র ক্যাডারদের হামলাসহ সহিংসতায় ১ হাজার চারশ’ জন নিহত হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের নেতা ও সমর্থকদের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিষয়ে জাতিসংঘের প্রতিবেদন সরকার বিবেচনায় রাখছে। সে পর্যন্ত সবাইকে ধৈর্য ধারণ করার আহ্বান জানাচ্ছে।
ইতোমধ্যে সরকার জনদাবির প্রতি সম্মান জানিয়ে প্রচলিত আইনের অধীনে সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করেছে। সরকারের তরফে মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত সংগঠনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনার উদ্যোগ নিয়েছে।
এদিকে মধ্যরাতে চুপিসারে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের দেশত্যাগ প্রসঙ্গে বলা হয়, ফ্যাসিবাদী সরকারের সাবেক রাষ্ট্রপতি ও হত্যা মামলার আসামি আবদুল হামিদের বিদেশ গমন সম্পর্কে জনমনে ক্ষোভের বিষয়ে সরকার অবগত। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সবার বিরুদ্ধে উপযুক্ত আইনগত ব্যবস্থা নিতে সরকার বদ্ধপরিকর।