আছিয়ার জানাজায় মানবঢল, হাজারো মানুষের আহাজারি

- আপডেট সময় : ০৯:০৩:১৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫ ৩৫ বার পড়া হয়েছে
অবশেষে মৃত্যুর কাছে হার মেনে চলে ৮ বছরের শিশু আছিয়া। আপন ভগ্নিপতির ধর্ষণের শিকার শিকার হয়ে ৬ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে বিদায় নিলো আছিয়া। শিশু ধর্ষণের ঘটনায় বাংলাদেশ জুড়ে প্রতিবাদী ছাত্র-জনতা রাস্তায় নেমে আসে।
ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে সর্বোচ্চ চেষ্টার পরও বাচানো গেলো না আছিয়াকে। তার মৃত্যুর ঘটনায় শোক জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস অভিযুক্ত সবাইকে দ্রুত বিচার আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দিয়েছেন। আর আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল আগামী ৭দিনের মধ্যে শিশু ধর্ষণ ও হত্যার বিচার শুরু করা হবে জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার যোগে ধর্ষণের শিকার মৃত শিশুটির মরদেহ নেওয়া হয় মাগুরায়। সন্ধ্যায় সেটি মাগুরা স্টেডিয়ামে অবতরণ করে। তার আগে থেকেই হাজারো মানুষের ঢল নামে মাগুরা স্টেডিয়ামে। দূরদুরান্ত থেকে বহু সংখ্য মানুষ পৌছে মাগুরায়।
শিশুটির মরদেহের সঙ্গে হেলিকপ্টারে শিশুটির মা এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার মাগুরায় যান। উপদেষ্টা ফরিদা আখতার সাংবাদিকদের বলেন, এটা রাষ্ট্র বা সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্বের সাথে দেখছে। কারণ এত ছোট্ট বাচ্চা একটা মেয়ের ধর্ষিত হওয়া মেনে নেওয়া যায় না, এটা কারও জন্য মেনে নেওয়া যায় না। শিশুটি (নাম) আমাদেরই মেয়ে। কাজেই আমরা সেভাবেই দেখছি।

এদিন দুপুরে শিশুটি মারা যাবার পর সন্ধ্যায় ৭টায় জানার আয়োজনে দায়িত্বে ছিলেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। এছাড়াও অংশ নেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমসহ দলটির শীর্ষ কয়েকজন নেতা। শিশুটির ধর্ষণ ঘটনায় দেশজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভে ফুঁসে ওঠে ছাত্র-জনতা।
শিশুটির মৃত্যুর খবরে ঢাকা সম্মিলিতি সামরিক হাসপাতালে ছুটে যান জাতীয় নাগরিক পার্টির দুই মুখ্য সংগঠক, বাংলাদেশ খেলাফতে মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক। তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান। গত ৬ মার্চ মাগুরা শহরতলীর নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের বাড়িতে বেড়াতে এসে ধর্ষণের শিকার হয় শিশুটি।
সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (পিআইসিইউ) স্থানান্তর করা হয়। গত ৮ মার্চ সন্ধ্যায় সংকটাপন্ন অবস্থায় শিশুটিকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
শিশুটির চিকিৎসায় সিএমএইচের প্রধান সার্জনকে প্রধান করে আটজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়ে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার দুপুরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এর আগে শিশুটিকে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলার চার আসামির মধ্যে তিনজন পুরুষের ডিএনএ পরীক্ষার জন্য এরইমধ্যে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে তিন আসামিকে মাগুরা থেকে ঢাকায় সিআইডির ডিএনএ প্রোফাইলিং ল্যাবে আনা হয়। একই সঙ্গে শিশুটির ডিএনএ নমুনাও জমা দেয়া হয়।
সারাদেশে হত্যা, ধর্ষণ, নারী নিপীড়নের সুষ্ঠু বিচারসহ ৩ দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় মশাল মিছিল করছে ছাত্র-জনতা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে এ মশাল মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি নীলক্ষেত হয়ে ইউ টার্ন নিয়ে, হলপাড়া হয়ে আবার রাজু ভাস্কর্য গিয়ে শেষ হয়।