ঢাকা ০৪:২০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৮ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অর্থনৈতিক কার্যক্রমে পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশের নারী

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০১:৩২:৫৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১ ২৪৮ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বিশ্বব্যাংকের উইমেন, বিজনেস অ্যান্ড দ্য ল ২০২১ সূচক প্রকাশ

ভয়েস ডিজিটাল ডেস্ক

বিশ্বব্যাংকের প্রকাশ করা ‘উইমেন, বিজনেস অ্যান্ড দ্য ল ২০২১ ইনডেক্স’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অর্থনৈতিক কার্যক্রমে নারী ও পুরুষের সমান অংশগ্রহণে দক্ষিণ এশিয়ায় সব থেকে পেছনের সারিতে বাংলাদেশের নারী। বুধবার বিশ্বব্যাংক এই প্রতিবেদনটি প্রকাশিত করে।

আটটি সূচকের আলোকে করা প্রতিবেদনটির মোট নম্বর ছিল ১০০। এই ১০০ নম্বরের মধ্যে বাংলাদেশ পেয়েছে ৪৯ দশমিক ৪। অর্থাৎ পুরুষের তুলনায় নারীরা গড়ে অর্ধেকেরও কম সুবিধা ভোগী। গত বছরের প্রতিবেদনেও বাংলাদেশ একই মানে ছিল। এবারের প্রতিবেদনে দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে ভালো অবস্থান নেপালের।

দেশটির সূচক ৮০ দশমিক ৬। ভারতের ৭৪ দশমিক ৪। সূচকে তার পরেই ৭৩ দশমিক ৮ পয়েন্ট নিয়ে আছে মালদ্বীপ। ভুটান ৭১ দশমিক ৯, শ্রীলঙ্কার ৬৫ দশমিক ৬ আর পাকিস্তান রয়েছে ৫৫ দশমিক ৬ পয়েন্টে। এই অঞ্চলে বাংলাদেশ নিচে রয়েছে শুধু আফগানিস্তান যেখানে সূচক ৩৮.১।

চলাচলের স্বাধীনতা, কর্মক্ষেত্রের সমতা, মজুরি, বিবাহ, পিতৃত্ব-মাতৃত্ব, উদ্যোগ, সম্পদ ও পেনশন এই আটটি সূচকের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন প্রস্তুত করে থাকে বিশ্বব্যাংক। প্রতিটি সূচকের সর্বোচ্চ নম্বর ১০০। এরপর তা গড় করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, চলাচলের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নারীরা শতভাগ স্বাধীন।

অর্থাৎ বাংলাদেশের নারীদের এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাওয়ায় বাধা নেই। কর্মক্ষেত্রের সমতায় বাংলাদেশ পেয়েছে ৫০, মজুরির ক্ষেত্রে ২৫, বিবাহে ৬০, মাতৃত্বে ২০, উদ্যোগে ৭৫, সম্পদে ৪০ ও পেনশনে ২৫। সব মিলিয়ে গড় দাঁড়ায় ৪৯ দশমিক ৪। গত দুই বছরের প্রতিবেদনেও বাংলাদেশ একই অবস্থানে। অর্থাৎ উন্নতি হয়নি।

প্রতিবেদন বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, মজুরি, কর্মকালীন মাতৃত্ব সুবিধা ও পেনশনে সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে দেশের নারীরা। তবে বেশি কিছু দেশ এগিয়েছে। প্রতিবেদনে আশঙ্কা করা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী করোনার প্রভাবে নারী-পুরুষ ব্যবধান বেড়ে যেতে পারে। অর্থনৈতিক সম্ভাবনা কাজে লাগাতে নারীরা এখনো আইন ও নীতির বাধায় রয়েছে। গড়পড়তায় বিশ্বব্যাপী পুরুষের তুলনায় নারীরা এক-তৃতীয়াংশ আইনি অধিকার পেয়ে থাকে।

প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস উল্লেখ করেছেন, উন্নয়নের ভালো সুফল পেতে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীর পূর্ণাঙ্গ অন্তর্ভূক্তি প্রয়োজন। তবে বিভিন্ন দেশে এ বিষয়ে অগ্রগতি হলেও কিছু দেশে এখন সমস্যা রয়েছে। যেমন নারীর ভ্রমণে বা চলাচলে অভিভাবকদের বাধা। বর্তমান করোনা অতিমারির কারণে মেয়েদের স্কুলে যাওয়া এবং কর্মসংস্থানও সংকুচিত হয়েছে।

তাছাড়া গৃহের অভ্যন্তরে নারীর প্রতি সহিংসতা এবং স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিয়েও চ্যালেঞ্জ বেড়েছে। সম্পদে নারীর অধিকার ও অর্থনৈতিক সমান অধিকার তৈরি করতে হবে। প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়েছে, করোনাকালীন সময়ে নারীর প্রতি সহিংসতা বেড়েছে। তবে করোনার পরেও ২৭টি দেশ নারী-পুরুষ সমতায় নানা সংস্কার কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।

এবারের প্রতিবেদনের তথ্যমতে, পৃথিবীর ১০টি দেশের অর্থনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ পুরোপুরি অবাধ। যেদেশগুলো ১০০ নম্বর স্কোর পেয়েছে প্রথম সারিতে রয়েছে, সেগুলো হচ্ছে, বেলজিয়াম, কানাডা, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, আইসল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, লাটভিয়া, লুক্সেমবার্গ, পুর্তগাল ও সুইডেন। অথচ দু’বছর আগেও শতভাগের তালিকায় ছিল ছয়টি দেশ। এবারের প্রতিবেদনেও মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার নারীরা অর্থনৈতিক কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছেন। তালিকার সবচেয়ে কম স্কোর নিয়ে রয়েছে ঘানা, ইয়েমেন, কুয়েত, সুদান, কাতার, ইরাক, ওমান, সিরিয়া ও আফগানিস্তান।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

অর্থনৈতিক কার্যক্রমে পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশের নারী

আপডেট সময় : ০১:৩২:৫৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১

বিশ্বব্যাংকের উইমেন, বিজনেস অ্যান্ড দ্য ল ২০২১ সূচক প্রকাশ

ভয়েস ডিজিটাল ডেস্ক

বিশ্বব্যাংকের প্রকাশ করা ‘উইমেন, বিজনেস অ্যান্ড দ্য ল ২০২১ ইনডেক্স’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অর্থনৈতিক কার্যক্রমে নারী ও পুরুষের সমান অংশগ্রহণে দক্ষিণ এশিয়ায় সব থেকে পেছনের সারিতে বাংলাদেশের নারী। বুধবার বিশ্বব্যাংক এই প্রতিবেদনটি প্রকাশিত করে।

আটটি সূচকের আলোকে করা প্রতিবেদনটির মোট নম্বর ছিল ১০০। এই ১০০ নম্বরের মধ্যে বাংলাদেশ পেয়েছে ৪৯ দশমিক ৪। অর্থাৎ পুরুষের তুলনায় নারীরা গড়ে অর্ধেকেরও কম সুবিধা ভোগী। গত বছরের প্রতিবেদনেও বাংলাদেশ একই মানে ছিল। এবারের প্রতিবেদনে দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে ভালো অবস্থান নেপালের।

দেশটির সূচক ৮০ দশমিক ৬। ভারতের ৭৪ দশমিক ৪। সূচকে তার পরেই ৭৩ দশমিক ৮ পয়েন্ট নিয়ে আছে মালদ্বীপ। ভুটান ৭১ দশমিক ৯, শ্রীলঙ্কার ৬৫ দশমিক ৬ আর পাকিস্তান রয়েছে ৫৫ দশমিক ৬ পয়েন্টে। এই অঞ্চলে বাংলাদেশ নিচে রয়েছে শুধু আফগানিস্তান যেখানে সূচক ৩৮.১।

চলাচলের স্বাধীনতা, কর্মক্ষেত্রের সমতা, মজুরি, বিবাহ, পিতৃত্ব-মাতৃত্ব, উদ্যোগ, সম্পদ ও পেনশন এই আটটি সূচকের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন প্রস্তুত করে থাকে বিশ্বব্যাংক। প্রতিটি সূচকের সর্বোচ্চ নম্বর ১০০। এরপর তা গড় করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, চলাচলের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নারীরা শতভাগ স্বাধীন।

অর্থাৎ বাংলাদেশের নারীদের এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাওয়ায় বাধা নেই। কর্মক্ষেত্রের সমতায় বাংলাদেশ পেয়েছে ৫০, মজুরির ক্ষেত্রে ২৫, বিবাহে ৬০, মাতৃত্বে ২০, উদ্যোগে ৭৫, সম্পদে ৪০ ও পেনশনে ২৫। সব মিলিয়ে গড় দাঁড়ায় ৪৯ দশমিক ৪। গত দুই বছরের প্রতিবেদনেও বাংলাদেশ একই অবস্থানে। অর্থাৎ উন্নতি হয়নি।

প্রতিবেদন বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, মজুরি, কর্মকালীন মাতৃত্ব সুবিধা ও পেনশনে সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে দেশের নারীরা। তবে বেশি কিছু দেশ এগিয়েছে। প্রতিবেদনে আশঙ্কা করা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী করোনার প্রভাবে নারী-পুরুষ ব্যবধান বেড়ে যেতে পারে। অর্থনৈতিক সম্ভাবনা কাজে লাগাতে নারীরা এখনো আইন ও নীতির বাধায় রয়েছে। গড়পড়তায় বিশ্বব্যাপী পুরুষের তুলনায় নারীরা এক-তৃতীয়াংশ আইনি অধিকার পেয়ে থাকে।

প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস উল্লেখ করেছেন, উন্নয়নের ভালো সুফল পেতে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীর পূর্ণাঙ্গ অন্তর্ভূক্তি প্রয়োজন। তবে বিভিন্ন দেশে এ বিষয়ে অগ্রগতি হলেও কিছু দেশে এখন সমস্যা রয়েছে। যেমন নারীর ভ্রমণে বা চলাচলে অভিভাবকদের বাধা। বর্তমান করোনা অতিমারির কারণে মেয়েদের স্কুলে যাওয়া এবং কর্মসংস্থানও সংকুচিত হয়েছে।

তাছাড়া গৃহের অভ্যন্তরে নারীর প্রতি সহিংসতা এবং স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিয়েও চ্যালেঞ্জ বেড়েছে। সম্পদে নারীর অধিকার ও অর্থনৈতিক সমান অধিকার তৈরি করতে হবে। প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়েছে, করোনাকালীন সময়ে নারীর প্রতি সহিংসতা বেড়েছে। তবে করোনার পরেও ২৭টি দেশ নারী-পুরুষ সমতায় নানা সংস্কার কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।

এবারের প্রতিবেদনের তথ্যমতে, পৃথিবীর ১০টি দেশের অর্থনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ পুরোপুরি অবাধ। যেদেশগুলো ১০০ নম্বর স্কোর পেয়েছে প্রথম সারিতে রয়েছে, সেগুলো হচ্ছে, বেলজিয়াম, কানাডা, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, আইসল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, লাটভিয়া, লুক্সেমবার্গ, পুর্তগাল ও সুইডেন। অথচ দু’বছর আগেও শতভাগের তালিকায় ছিল ছয়টি দেশ। এবারের প্রতিবেদনেও মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার নারীরা অর্থনৈতিক কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছেন। তালিকার সবচেয়ে কম স্কোর নিয়ে রয়েছে ঘানা, ইয়েমেন, কুয়েত, সুদান, কাতার, ইরাক, ওমান, সিরিয়া ও আফগানিস্তান।