ঢাকা ১০:০৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৩০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মাতৃভাষা দিবস স্মরণে ডাকটিকেট অবমুক্ত করলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১০:৪৯:৩৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২১ ৩২৮ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

‘১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসে এক  অবিস্মরণীয় দিন। এদিন ভাষার দাবিতে প্রথম হরতাল পালিত হয়। যা কিনা পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর প্রথম হরতাল। যে হরতালের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। সেদিন তিনি পুলিশি নির্যাতনের শিকার হন এবং তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। যা ছিল পাকিস্তানের কোনো প্রথম রাজনৈতিক নেতাকে গ্রেপ্তারের ঘটনা’

ভয়েস রিপোর্ট, ঢাকা

২১ ফেব্রুয়ারি মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। দিবসটি উপলক্ষে ডাক অধিদপ্তর স্মারক ডাকটিকেট, উদ্বোধনী খাম ও ডাটা কার্ড প্রকাশ করছে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার রবিবাব ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় তার সরকারি বাসভবন দফতরে ১০ টাকা মূল্যমানের একটি স্মারক ডাকটিকিট ও ১০ টাকা মূল্যমানের একটি উদ্বোধনী খাম অবমুক্ত করেন। এছাড়া ৫ টাকা মূল্যমানের একটি ডাটাকার্ড উদ্বোধন করা হয়। মন্ত্রী এ সংক্রান্ত একটি সীলমোহর ব্যবহার করেন। তিনি এ বিষে একটি বিবৃতিও দিয়েছেন।


উল্লেখ্য, ১৯৫২ সালের এই দিনে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে রাজপথে আন্দোলনে নামেন বাংলার দামাল ছেলেরা। পাকিস্তানি বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারান সালাম-বরকত-রফিক-শফিক-জব্বার প্রমূখ। ভাষার জন্য প্রাণ উৎসর্গ করা বীর শহীদদের স্মরণে দিনটি মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে বিশ্বে পালিত হয়ে আসছে।
মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার তাঁর বিবৃতিতে ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ভাষা-একটি জাতির আত্মপরিচয়ের প্রধানতম হাতিয়ার। এটি শুধু চিন্তা-চেতনা, মনন ও মনের ভাব প্রকাশের মাধ্যমই নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে দেশ ও সাহিত্য, সংস্কৃতি ও জীবনবোধ। হাজার বছর ধরে বাংলা ভাষা প্রকাশ করে যাচ্ছে বাঙালি জাতির অস্তিত্ব ও স্বকীয়তা।

মন্ত্রী বলেন, একুশের পথ ধরেই বাংলার স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। ভাষা আন্দোলন থেকে স্বাধীনতা অর্জনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের ধারাবাহিকতা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসে এক  অবিস্মরণীয় দিন। এদিন ভাষার দাবিতে প্রথম হরতাল পালিত হয়। যা কিনা পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর প্রথম হরতাল। যে হরতালের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। সেদিন তিনি পুলিশি নির্যাতনের শিকার হন এবং তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। যা ছিল পাকিস্তানের কোনো প্রথম রাজনৈতিক নেতাকে গ্রেপ্তারের ঘটনা। সেই থেকে শুরু করে বাংলাদেশ নামক বাংলা ভাষাভিত্তিক রাষ্ট্রটি প্রতিষ্ঠা পর্যন্ত একক নেতৃত্ব ছিলো জাতির পিতার।


ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, একুশ মানে মাথা নত না করা। একুশ মানে দৃপ্ত পদে সামনে এগিয়ে যাওয়া। ২১শে ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে বাঙালি তরুণদের আত্মদান শুধু বাংলাদেশ বা বাঙালির নয়, তা এক বিশ্বজনীন ঘটনা। বলা চলে, ১৯৪৮ সালের মার্চে সীমিত পর্যায়ে যে আন্দোলন শুরু হয়েছিলো, ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি তার চরম প্রকাশ ঘটে। এরই ধারাবাহিকতায় অভ্যূদয় ঘটে বাঙালির ভাষাভিত্তিক রাষ্ট্র বাংলাদেশ। ভাষা আন্দোলনের পর বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদাদান, সর্বস্তরে বাংলা ভাষা চালু, সংসদের দৈনন্দিন কার্যাবলী বাংলায় চালু প্রসঙ্গে আইন সভায় গর্জে ওঠেন এবং মহানায়কের ভূমিকা পালন করেন শেখ মুজিবুর রহমান।
মন্ত্রী আরও বলেন, ১৯৫৩ সালের একুশে ফেব্রুয়ারির প্রভাত ফেরিতে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবি জানান বঙ্গবন্ধু। ১৯৫৪ সালে প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট জয়লাভ করলে ৭ মে অনুষ্ঠিত গণপরিষদের অধিবেশনে বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। মোস্তাফা জব্বার বলেন, বাংলাকে পাকিস্তানের দ্বিতীয় রাষ্ট্রভাষা হিসাবে স্বীকৃতি দিয়ে সংবিধানে পরিবর্তন আনা হয় ১৯৫৬ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি। যার নেপথ্যে বিশেষ অবদান রয়েছে বঙ্গবন্ধুর।

স্মারক ডাকটিকেট, উদ্বোধনী খাম ও ডাটাকার্ড উদ্বোধনীর দিন অর্থাৎ রবিবার থেকেই ঢাকা জিপিও’র ফিলাটেলিক ব্যুরো এবং পরে দেশের অন্যান্য জিপিও এবং প্রধান ডাকঘর থেকে সংগ্রহ করা যাবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

মাতৃভাষা দিবস স্মরণে ডাকটিকেট অবমুক্ত করলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী

আপডেট সময় : ১০:৪৯:৩৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২১

‘১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসে এক  অবিস্মরণীয় দিন। এদিন ভাষার দাবিতে প্রথম হরতাল পালিত হয়। যা কিনা পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর প্রথম হরতাল। যে হরতালের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। সেদিন তিনি পুলিশি নির্যাতনের শিকার হন এবং তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। যা ছিল পাকিস্তানের কোনো প্রথম রাজনৈতিক নেতাকে গ্রেপ্তারের ঘটনা’

ভয়েস রিপোর্ট, ঢাকা

২১ ফেব্রুয়ারি মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। দিবসটি উপলক্ষে ডাক অধিদপ্তর স্মারক ডাকটিকেট, উদ্বোধনী খাম ও ডাটা কার্ড প্রকাশ করছে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার রবিবাব ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় তার সরকারি বাসভবন দফতরে ১০ টাকা মূল্যমানের একটি স্মারক ডাকটিকিট ও ১০ টাকা মূল্যমানের একটি উদ্বোধনী খাম অবমুক্ত করেন। এছাড়া ৫ টাকা মূল্যমানের একটি ডাটাকার্ড উদ্বোধন করা হয়। মন্ত্রী এ সংক্রান্ত একটি সীলমোহর ব্যবহার করেন। তিনি এ বিষে একটি বিবৃতিও দিয়েছেন।


উল্লেখ্য, ১৯৫২ সালের এই দিনে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে রাজপথে আন্দোলনে নামেন বাংলার দামাল ছেলেরা। পাকিস্তানি বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারান সালাম-বরকত-রফিক-শফিক-জব্বার প্রমূখ। ভাষার জন্য প্রাণ উৎসর্গ করা বীর শহীদদের স্মরণে দিনটি মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে বিশ্বে পালিত হয়ে আসছে।
মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার তাঁর বিবৃতিতে ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ভাষা-একটি জাতির আত্মপরিচয়ের প্রধানতম হাতিয়ার। এটি শুধু চিন্তা-চেতনা, মনন ও মনের ভাব প্রকাশের মাধ্যমই নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে দেশ ও সাহিত্য, সংস্কৃতি ও জীবনবোধ। হাজার বছর ধরে বাংলা ভাষা প্রকাশ করে যাচ্ছে বাঙালি জাতির অস্তিত্ব ও স্বকীয়তা।

মন্ত্রী বলেন, একুশের পথ ধরেই বাংলার স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। ভাষা আন্দোলন থেকে স্বাধীনতা অর্জনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের ধারাবাহিকতা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসে এক  অবিস্মরণীয় দিন। এদিন ভাষার দাবিতে প্রথম হরতাল পালিত হয়। যা কিনা পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর প্রথম হরতাল। যে হরতালের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। সেদিন তিনি পুলিশি নির্যাতনের শিকার হন এবং তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। যা ছিল পাকিস্তানের কোনো প্রথম রাজনৈতিক নেতাকে গ্রেপ্তারের ঘটনা। সেই থেকে শুরু করে বাংলাদেশ নামক বাংলা ভাষাভিত্তিক রাষ্ট্রটি প্রতিষ্ঠা পর্যন্ত একক নেতৃত্ব ছিলো জাতির পিতার।


ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, একুশ মানে মাথা নত না করা। একুশ মানে দৃপ্ত পদে সামনে এগিয়ে যাওয়া। ২১শে ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে বাঙালি তরুণদের আত্মদান শুধু বাংলাদেশ বা বাঙালির নয়, তা এক বিশ্বজনীন ঘটনা। বলা চলে, ১৯৪৮ সালের মার্চে সীমিত পর্যায়ে যে আন্দোলন শুরু হয়েছিলো, ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি তার চরম প্রকাশ ঘটে। এরই ধারাবাহিকতায় অভ্যূদয় ঘটে বাঙালির ভাষাভিত্তিক রাষ্ট্র বাংলাদেশ। ভাষা আন্দোলনের পর বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদাদান, সর্বস্তরে বাংলা ভাষা চালু, সংসদের দৈনন্দিন কার্যাবলী বাংলায় চালু প্রসঙ্গে আইন সভায় গর্জে ওঠেন এবং মহানায়কের ভূমিকা পালন করেন শেখ মুজিবুর রহমান।
মন্ত্রী আরও বলেন, ১৯৫৩ সালের একুশে ফেব্রুয়ারির প্রভাত ফেরিতে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবি জানান বঙ্গবন্ধু। ১৯৫৪ সালে প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট জয়লাভ করলে ৭ মে অনুষ্ঠিত গণপরিষদের অধিবেশনে বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। মোস্তাফা জব্বার বলেন, বাংলাকে পাকিস্তানের দ্বিতীয় রাষ্ট্রভাষা হিসাবে স্বীকৃতি দিয়ে সংবিধানে পরিবর্তন আনা হয় ১৯৫৬ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি। যার নেপথ্যে বিশেষ অবদান রয়েছে বঙ্গবন্ধুর।

স্মারক ডাকটিকেট, উদ্বোধনী খাম ও ডাটাকার্ড উদ্বোধনীর দিন অর্থাৎ রবিবার থেকেই ঢাকা জিপিও’র ফিলাটেলিক ব্যুরো এবং পরে দেশের অন্যান্য জিপিও এবং প্রধান ডাকঘর থেকে সংগ্রহ করা যাবে।