বাংলাদেশে ভ্যাকসিন উৎপাদনের প্রস্তাব রাশিয়ার
- আপডেট সময় : ১০:১৭:১৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২১ এপ্রিল ২০২১ ১৫৫ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস ডিজিটাল ডেস্ক
রাশিয়ার উৎপাদিত কোভিড-১৯ স্পুটনিক-ভি ভ্যাকসিন বাংলাদেশে উৎপাদন করতে আগ্রহী। রাশিয়ার তরফে এমন প্রস্তাবে বাংলাদেশ সম্মত হয়েছে। রশিয়া চায় বাংলাদেশের ফার্মাসিউটিক্যালগুলোর সহযোগিতায় কোভিড-১৯ টিকা উৎপাদন করার।
রাশিয়ার এই প্রস্তাবের কারণ হিসেবে বিদেশমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ রাশিয়ার কাছে করোনা টিকা চাওয়ার প্রস্তাববের প্রেতিক্ষতে বাংলাদেশে টিকাটি উৎপাদনের প্রস্তাব দেয় রাশিয়া। আর এ জন্য বাংলাদেশি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলো স্পুটনিক টিকা উৎপাদন করতে প্রযুক্তিগত সহায়তা দেবে রাশিয়া।
বর্তমান কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত পৃথিবীতে বিপুল সংখ্যক টিকার চাহিদার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশে টিকা রফতানি করার মতো পর্যাপ্ত উৎপাদন সক্ষমতা নেই। এজন্য রাশিয়া চায় তাদের কারিগরি সহায়তা বাংলাদেশি ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান করোনার ভ্যাকসিন উৎপাদন করুক। বিদেশমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বাংলাদেশের সরকারী বার্তা সংস্থার সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য তুলে ধরেন।
ড. মোমেন বলেন, আমরা রাশিয়ার সঙ্গে ভ্যাকসিনের সহ-উৎপাদনে তাদের প্রস্তাবে সম্মত হয়েছি। যদিও এখনও বিষয়টি চূড়ান্ত হয়নি। সবকিছু ঠিক থাকলে, এটা তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী হবে এবং আশা করা যায় যে, এটা অপেক্ষাকৃত ভালো হবে।
রাশিয়ান স্পুটনিক-ভি টিকা ব্যবহারে এরই মধ্যে ভারত অনুমোদন দিয়েছে। ভারতে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পরায় টিকার অপ্রতুলতার কারণে এই অনুমোদন দেয় মোদি সরকার।
চীনের ভ্যাকসিন বিষয়ে বিদেশমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) অনুমোদন না থাকায় বাংলাদেশ চীনের ভ্যাকসিনের ব্যাপারে খুব একটা আগ্রহ দেখায়নি। কিন্তু এখন পরিস্থিতি ভিন্ন। আমরা ভ্যাকসিনটি পেতে সম্ভাব্য সব ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
চীন বাংলাদেশকে জানিয়েছে, ইতোমধ্যেই তাদের ভ্যাকসিনটি অন্যান্য দেশে সরবরাহ করার প্রতিশ্রুতি দেয়ায় ডিসেম্বরের আগে তারা কোনো ভ্যাকসিন রফতানি করতে পারবে না।
ড. মোমেন বলেন, সম্প্রতি বিশ্ব ব্যাংক কোভ্যাক্সের আওতায় বাংলাদেশকে আগামী মাসে ৮০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন দেবে বলে জানিয়েছে। আমরা ওই ভ্যাকসিনগুলো পাব বলে আশাবাদী। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকালে বাংলাদেশ ১.২ মিলিয়ন ডোজসহ মোট ৩২ মিলিয়ন ডোজ ভ্যাকসিন উপহার স্বরূপ পায়।
এই উপহার ছাড়াও, বাংলাদেশ ৫ নভেম্বর একটি ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর এবং বাংলাদেশ সরকার, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড বিপিএল ও সেরাম ইনস্টিটিউ অব ইন্ডিয়া এসআইআই এর মধ্যে ১৩ ডিসেম্বর একটি চুক্তির আওতায় ৩০ মিলিয়ন ভারতে-উৎপাদিত ভ্যাকসিন ক্রয় করে।
চুক্তির আওতায় প্রতি মাসে বাংলাদেশের ৫ মিলিয়ন ডোজ ভ্যাকসিন পাওয়ার কথা। কিন্তু ৫ মিলিয়ন ডোজের প্রথম চালান পেলেও দ্বিতীয় চালানটি মার্চ মাসে আসার কথা রয়েছে। যা এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। মাসের বাকী রয়েছে মাত্র ১০দিন।
ভারতে আশ্বাসে ঢাকার আস্থা রয়েছে উল্লেখ করে বিদেশমন্ত্রী বলেন, চুক্তির সময়সীমার মধ্যেই আমরা ৩০ মিলিয়ন ডোজের ভ্যাকসিন মিলবে বলে আশাবাদি।
যদিও ঢাকা আশংকা করছে যে, ভারতে উৎপাদিত ভ্যাকসিন তাদের নিজ দেশের টিকার ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে ও অন্যদেশের সঙ্গে টিকা প্রদানে যে অঙ্গীকার রয়েছে, তা পূরণে পযাপ্ত নয়।