বাংলাদেশে ট্রেন যাত্রায় শতভাগ মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করলো রেলওয়ে, বাস-লঞ্চে উদাসিনতা!

- আপডেট সময় : ০৯:৫৫:৩০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ জুলাই ২০২১ ১৯১ বার পড়া হয়েছে
কমলাপুরে লোকাল ট্রেনের টিকিটের জন্য ঘরমুখো মানুষের লাইন
‘ঈদ যাত্রায় সড়ক-মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট, স্বাস্থ্যবিধি মানায় উদাসিনতা, কষ্টকে তুচ্ছ করে আনন্দযাত্রায় ক্লান্তিহীন মানুষ, প্রচন্ড গরম উপেক্ষা করে নাড়ির টানে ছুটে চলা’
ট্রেনে শতভাগ মাস্ক ব্যবহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ রেলওয়ে। ট্রেনে যাতায়ত করছেন এমন কাউকেই বিনা মাস্কে দেখা যায়নি। ট্রেন যাত্রার প্রথম দিন রেলপথ মন্ত্রকের সচিব, ডিজিসহ উর্ধতন আধিকারীকদের সঙ্গে নিয়ে ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছে যান রেলপথ মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। তিনি প্রতিটি প্লাটফর্ম ঘুরে দেখেন। এসয় ৮ নম্বর প্লাটফর্মের জমে থাকা জল দিয়েই উন্নয়ন কাজ পরিদর্শন করে নজির গড়েন রেলপথ মন্ত্রী।
ঈদকে সামনে রেখে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ট্রেন চলাচলের নির্দেশ রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। তিনি চান মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদ আনন্দে স্বজনদের সঙ্গে যুক্ত হোক এই বার্তা নিয়েই রেলপরিষেবা চালুর কথা জানালেন নুরুল ইসলাম সুজন। কমলাপুর স্টেশন পরিদর্শনকালে উপস্থিত যাত্রীদের সঙ্গে কুশলবিনিময় করেন মন্ত্রী।
রেলপথ মন্ত্রী বলেন, কাউন্টার বন্ধ রেখে বেজোর সংখ্যার আসনে অনলাইনে টিকিট বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছে। গত ঈদেও অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে ট্রেন চালানো হয়েছে। এবারে সেই ব্যবস্থাই নিয়েছি আমরা। এসময় মন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্যসেবা না মেনে ট্রেনে চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার বলেন, স্টেশনের প্রবেশমুখে হাত ধোয়ার জায়গা রয়েছে। প্লাটফর্মে প্রবেশের মুখে হ্যান্ডসেনিটাইজার রয়েছে। মাস্ক ব্যতিত কোন যাত্রীকে স্টেশনে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। যারা স্বাস্থ্যসেবার তোয়াক্কা করতে চান না, সেই যাত্রীদের ট্রেন ভ্রমণের কোনও সুযোগ নেই। সাফ কথা ‘নো মাস্ক নো এন্ট্রি’।
অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে অনলাইনে আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট বিক্রি করা হয়েছে। হাতে গোনা কয়েকটি লোকাল ট্রেনের জন্য একটি কাউন্টার খোলা রেখেছে কর্তৃপক্ষ।
ব্যতিক্রম বাস, লঞ্চ এবং অন্যান্য যানবাহনের বেলায়। এসব যানবাহনে ঈদ যাত্রায় স্বাস্থ্যসেবা মান্যতার ঘাটতি রয়েছে। সে ক্ষেত্রে ট্রেন যাত্রীদের বেলায় শতভাগ মাস্ক ব্যবহার ছিলো অনুকরণীয়। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের আন্তরিক তদারকির ফলে এটি সম্ভব হয়েছে।
অন্যান্য পরিবহনের মালিক-কর্তৃপক্ষ ছাড়াও শ্রমিক সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দ এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিলে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার শতভাগ নিশ্চিত হতো বলে মনে করেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। অনেকের প্রশ্ন রেলওয়ে পারলে অন্য কেন পারবেনা?
দীর্ঘদিন পর পরিচিত ছন্দে ফিরলো বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই কোলাহল মুখর ঢাকা। মূলত বুধবার মধ্যরাত থেকে বিভিন্ন স্টেশনে ঘরমুখো মানুষের চলাচল শুরু বেড়েছে। বিভিন্ন জেলায় ছেড়ে যায় দূরপাল্লার বাস। কতদিন পর আপন ছন্দে শুরু হয় পথ চলা। করোনার বিষাদময় পরিবেশেও ঈদকে সামনে রেখে মানুষের মধ্যে দেখা দিল উৎফুল্লতা। ঘলযাত্রায় সামিল হয় লাখো মানুষ।
সকল গণপরিবহন চলাচল, নৌপথে সকাল থেকে বিভিন্ন রুটে ছেড়ে যায় একের পর এক নৌযান। ফেরিঘাটেগুলোতে জটলা অনুপোস্থিত। এবারে সেখানে লঞ্চ-স্পিড বোর্ড সবই চালু থাকায় গাদাগাদি অবস্থা নেই ফেরিতে।
অপর দিকে ঘরমুখো মানুষের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠেছে ঢাকার তিনটি আন্তঃনগর বাস টার্মিনাল। প্রায় একমাস পর বাসের চাকা গড়ালো মহাসড়কে। বাসের যাত্রী এবং চালকদের অনেকেই স্বাস্থ্যবিধি মান্যতায় ছিলো উদাসীনতা। আন্তঃনগর বাস টার্মিনাল সায়দবাদ, মহাখালী এবং গাবতলী টার্মিনালে প্রতিদিন গড়ে ১৫ থেকে ২০ হাজার বাস যাতায়ত করে থাকে।
ঢাকা থেকে জলপথে দক্ষিাণাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলের অন্তত ৪০টি রুটে কমপক্ষে ৫ থেকে ৭শ’ ছোটবড় লঞ্চ চলাচল করে। ঈদকে সামনে রেখে যাত্রী পূর্ণ হবার সঙ্গে সঙ্গে লঞ্চ ঘাট ত্যাগ এবং গন্তব্যে যাত্রী নামিয়ে ফের দ্রুত ঢাকায় ফিরে আসার নির্দেশনা রয়েছে নৌযান মালিক সংগঠনের ।