নতুন আতঙ্ক ‘ওমিক্রন ‘
- আপডেট সময় : ১১:৫৭:৩০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২১ ৩৪৬ বার পড়া হয়েছে
‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মতে ওমিক্রন নিয়ে চিন্তার কারণ আছে, আতঙ্কের কারণ নেই, আমেরিকার রোগ প্রতিরোধ বিশেষজ্ঞ অ্যান্টনি ফাউচি বলেছেন, ওমিক্রন ভাইরাস কতটা ছড়াবে, আর এটা কতটা প্রবল হবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না’
২০২০ সালে গোটা দুনিয়া দুর্ঘটনার আবাসভূমিতে পরিণত হয়। করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ, ব্ল্যাক ফাঙ্গাস, হোয়াইট ফাঙ্গাস, ইয়োলো ফাঙ্গাস এবং সাইক্লোন সব মিলিয়ে বিপর্যস্ত মানব জীবন। করোনার ভাইরাসের নানা ভেরিয়েন্ট মোকাবিলা করে মানুষ যখণ স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে শুরু করেছে। সচল হচ্ছে বিশ্ব বাণিজ্য, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরতে শুরু করেছে পড়ুয়ারা। সচল হয় উৎপাদন। মন্দা পেছনে ফেলে জোরকদমে সামনের দিকে এগুতে থাকে মানুষ। আর কটা দিন পরই ‘ভাইরাসের’ আরও একটি বছর পেছনে ফেলে নতুন বছরকে বরণ করতে প্রস্তুতি নিচ্ছে।
একুশের শেষ প্রান্তিকে এসে মানুষ স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছে। ঠিক সেই মুহূর্তে বিজ্ঞানের বদৌলতে সামনে আসলো করোনার নতুন ধরণ ‘ওমিক্রন’। এই ভাইরাসটি এখন ‘বিশ্বআতঙ্ক’!
কার্যত দুই বছর গোটা বিশ্বকে তছনছ করে দিয়েছে করোনা ভাইরাস তথা কভিড-১৯ বা নভেল করোনা। ২০২০ সালের মার্চ মাসে ‘করোনা ভাইরাস’ নামের একটি নতুন রোগের চীনের উহান নগরীতে সন্ধ্যান পায় বিজ্ঞানিরা। এই ভাইরাসটির চরিত্র হচ্ছে, এটি ‘মানুষ থেকে মানুষে ছড়ায়’! বাতাসের মাধ্যমে দ্রুত ছড়ায়। এক দেশ দেশ থেকে অন্য দেশে কেউ ভ্রমণ করলে সেক্ষেত্রে রোগটি সেখানে যেতে পারে! অর্থাৎ আতঙ্কের শেষ নেই। এটি নাক-মুখ ও চোখ দিয়ে মানবদেহে ঢুকতে পারে। কারো সঙ্গে মেলামেশা করলে বা হাত মেলালেও করোনাভাইরাস ছড়ানোর সমূহ আশঙ্কা থাকে। ফলে রাতারাতি এটি মহামারি রূপে গোটা দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। হঠাৎ করে এমন এক বিধ্বংসী ভাইরাস আতঙ্কে দুনিয়া শুদ্ধ মানুষকে ঘরবন্দী হতে হয়।

ভয়ঙ্কর ভাইরাস থেকে মানুষকে রক্ষায় রাতদিন এক করে গবেষণাগারে কাটাতে হয়েছে বিজ্ঞানিদের। এরই মধ্যে মানুষ নিজেদের রক্ষায় বিশ্ব পরিচিত হলো ‘লকডাউন’ বা ‘সামাজিক দূরত্ব’ নিয়মের সঙ্গে। বন্ধ হলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কলকারখানা, ব্যবসা-বাণিজ্য, অফিস-আদালত, গণপরিবহন থেকে শুরু অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড এমন কি হাসপাতালে সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা পর্যন্ত বন্ধ হয়ে যায়। দেখা দেয় অর্থনৈতিক সংকট। বেড়ে যায় পণ্যমূল্য। কঠিন সমস্যার মুখোমুখি হয় সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষকে।
এরই মধ্যে করোনাভাইরাস ‘প্রতিরোধী’ টিকার আবিষ্কার করলেন বিজ্ঞানিরা। বিভিন্ন দেশে তা উৎপাদন শুরু হয়ে গেলো। আর তা করতে গিয়ে মোটা দাগের অর্থ বিনিয়োগে বসলো আধুনিক যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ কারখানা। বিশ্ববাসী পরিচিত হলো আরও একটি ব্যয়বহুল কর্মকাণ্ডের সঙ্গে। পিছিয়ে পড়া দেশগুলো অসহায়ের মতো তাকিয়ে থাকলো। তাদের দিকে হাত বাড়িয়ে সামর্থবান দেশগুলো বাহবা পেল।

এতো সব কাটিয়ে মানুষ যখন মুক্ত বাতাসে নিশ্বাস নিতে শুরু করেছে, তখনই ফের দানবের মতো হাজির হলো করোনার নতুন সংস্করণ ‘ওমিক্রন’! এই নতুন ভাইরাসটি মোকাবিলায় পদক্ষেপ কি হবে এবং এটি কতটা মারাত্মক হতে পারে বা মানবদেহে কিভাবে আক্রমণ করতে পারে এনিয়ে বিজ্ঞানিদের বিস্তারিত বয়ান এখনো মেলেনি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিএইচও) ওমিক্রন প্রতিরোধে শান্ত থাকতে এবং যৌক্তিক পদক্ষেপ নিতে বিভিন্ন দেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। দ্রুত ছড়িয়ে পড়া ওমিক্রন নিয়ে বিশ্বব্যাপী আতংক তৈরি হওয়ার প্রেক্ষাপটে সংস্থাটি এ আহ্বান জানায়।
বাইডেন
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ওমিক্রন নিয়ে চিন্তার কারণ আছে। আতঙ্কের কারণ নেই। ওমিক্রন ঠেকাতে মাস্ক পরতে, ভ্যাকসিন নিতেও বললেন বাইডেন। বাইডেন এও বলেছেন, অ্যামেরিকার মানুষ যেন বুস্টার ডোজ নেন এবং মাস্ক পরে বাইরে বের হন। হোয়াইট হাউসে ভাষণ দিতে গিয়ে বাইডেন জানিয়েছেন, ‘ওমিক্রন ভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। বাইডেনের মতে আমরা এই নতুন বিপদের মুখোমুখি হব ও তার মোকাবিলা করব। অতীতের মতোই ওমিক্রনের মোকাবিলা করা হবে। মানুষ যদি ভ্যাকসিন নেন ও মাস্ক পরেন, তাহলে লকডাউন করার কোনো দরকার হবে না।

আর আমেরিকার রোগ প্রতিরোধ বিশেষজ্ঞ অ্যান্টনি ফাউচি বলেছেন, ওমিক্রন ভাইরাস কতটা ছড়াবে, আর এটা কতটা প্রবল হবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না।
ইইউ প্রধান উরসালা
ইউরোপীয় কমিশন প্রধান উরসালা ভন দার বলেন, করোনা প্রতিরোধে টিকা বাধ্যতামূলক করার বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের চিন্তাভাবনা করার সময় এসেছে। সদস্যভুক্ত রাষ্ট্রের সরকারগুলোর প্রতি এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।























