ঢাকা ১২:১৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
এনইআইআর বাস্তবায়ন না হওয়ায় বিপুল পরিমাণ রাজস্ব বঞ্চিত সরকার বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ১০ ডিসেম্বর শুরু হচ্ছে ‘বিজয় বইমেলা ২০২৫’ ইউনেস্কোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পেল টাঙ্গাইল শাড়ি বুনন শিল্প তৃতীয়বারের মতো এনসিএল চ্যাম্পিয়ন রংপুর চীনে এনভিডিয়ার চিপ রপ্তানির অনুমতি দিচ্ছেন ট্রাম্প তফসিলের পর অনুমোদনহীন সমাবেশ-আন্দোলন পরিহারের আহ্বান অন্তর্বর্তী সরকারের অনানুষ্ঠানিক শ্রমিকদের সংখ্যা বেশি, কিন্তু স্বীকৃতি কম: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ১০ ডিসেম্বর রেকর্ড হবে সিইসির ভাষণ, নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার সম্ভাবনা জোরালো ব্যাংকিং খাতে স্থিতিশীলতা ফেরাতে বিস্তৃত সংস্কার : কেন্দ্রীয় ব্যাংক গভর্নর সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে সীমিত আকারে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি

ইউনেস্কোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পেল টাঙ্গাইল শাড়ি বুনন শিল্প

ভয়েস ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৮:২৯:৫৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ২২ বার পড়া হয়েছে

ইউনেস্কোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পেল টাঙ্গাইল শাড়ি বুনন শিল্প

ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী টাঙ্গাইল শাড়ি বুনন শিল্প এবার পেল আন্তর্জাতিক সম্মানের অন্যতম উচ্চতর মুকুট। ইউনেস্কো তাদের অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় যুক্ত করেছে টাঙ্গাইল শাড়িকে। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) ভারতের নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত ইউনেস্কো ২০০৩ কনভেনশনের ২০তম আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয় এ ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত।

সভায় বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন ইউনেস্কো সাধারণ পরিষদের সভাপতি ও বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম তালহা। তিনি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “দুই শতাব্দীর বেশি সময় ধরে টাঙ্গাইলের তাঁতিদের অবিরাম সৃষ্টিশীল শ্রমের এটাই সর্বোচ্চ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। টাঙ্গাইল শাড়ি আমাদের নারীদের নিত্য ব্যবহৃত পোশাক, আর সেই জনপ্রিয়তার শক্তিই এই অর্জনের প্রেরণা।” তিনি এ সম্মান বাংলাদেশের তাঁতি সম্প্রদায় ও সকল নারীকে উৎসর্গ করেন।

ইউনেস্কোর এ কনভেনশনের আওতায় এটি বাংলাদেশের ষষ্ঠ একক নিবন্ধন। এর আগে স্বীকৃতি পেয়েছে—বাউল গান (২০০৮), জামদানি (২০১৩), মঙ্গল শোভাযাত্রা (২০১৬), শীতল পাটি (২০১৭) ও রিকশা পেইন্টিং (২০২৩)।

টাঙ্গাইল শাড়ির নিবন্ধনের লক্ষ্যে ২০২৪ সালের এপ্রিলে বাংলাদেশ দূতাবাস নির্ধারিত কাঠামোয় আবেদন জমা দেয়। নিয়ম অনুসারে আবেদনটি মূল্যায়ন কমিটির কঠোর যাচাই-বাছাই অতিক্রম করে আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের অনুমোদনের জন্য উপস্থাপিত হয়। কারিগরি দৃষ্টিতে নথি প্রস্তুত ছিল জটিল ও নির্ভুলতার দাবি–সত্ত্বেও বাংলাদেশ দূতাবাস সম্পূর্ণ নিজস্ব দক্ষতায় নথিটি প্রণয়ন করে সফলভাবে অনুমোদন পায়।

২০২৩ সালে ভারত টাঙ্গাইল শাড়িকে তাদের ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে ঘোষণা করলে বাংলাদেশে ব্যাপক জনঅসন্তোষ সৃষ্টি হয়। সে প্রেক্ষাপটে অনেকেই আশঙ্কা করেছিলেন—রাজনৈতিক জটিলতায় ইউনেস্কো নিবন্ধন বাধাগ্রস্ত হতে পারে। কিন্তু সেই সব শঙ্কা দূর করে আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদ নথিটিকে উচ্চমানের নিবন্ধন হিসেবে ঘোষণা করে। গবেষক ও বিশেষজ্ঞদের মতে, এই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি টাঙ্গাইল শাড়িকে ঘিরে অতীতের বিতর্কের যথেষ্ট সমাধান এনে দিয়েছে।

এদিকে ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মু. রিয়াজ হামিদুল্লাহ বলেন, “এটি একটি আন্তর্জাতিক কনভেনশনের মাধ্যমে অর্জিত স্বীকৃতি, যেখানে ভারত ও বাংলাদেশ দু’দেশই সদস্য। দুই দেশের নারীদের কাছে শাড়ি অত্যন্ত জনপ্রিয় পরিধেয়। তাই এই নিবন্ধন শাড়িপ্রেমী নারীসমাজের গর্ব আরও বাড়িয়ে দেবে।”

উল্লেখ্য, ২০২২ সালে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনে জয়লাভের মাধ্যমে বাংলাদেশ চার বছরের জন্য ইউনেস্কো ২০০৩ কনভেনশনের আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের সদস্যপদ অর্জন করে। পর্ষদের ১৮তম সভায় ‘ঢাকার রিক্সা ও রিক্সাচিত্র’ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করে।

চলমান ২০তম সভা গত ৭ ডিসেম্বর ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকরের উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে এবং ১৩ ডিসেম্বর এর সমাপ্তি হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

ইউনেস্কোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পেল টাঙ্গাইল শাড়ি বুনন শিল্প

আপডেট সময় : ০৮:২৯:৫৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৫

বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী টাঙ্গাইল শাড়ি বুনন শিল্প এবার পেল আন্তর্জাতিক সম্মানের অন্যতম উচ্চতর মুকুট। ইউনেস্কো তাদের অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় যুক্ত করেছে টাঙ্গাইল শাড়িকে। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) ভারতের নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত ইউনেস্কো ২০০৩ কনভেনশনের ২০তম আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয় এ ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত।

সভায় বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন ইউনেস্কো সাধারণ পরিষদের সভাপতি ও বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম তালহা। তিনি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “দুই শতাব্দীর বেশি সময় ধরে টাঙ্গাইলের তাঁতিদের অবিরাম সৃষ্টিশীল শ্রমের এটাই সর্বোচ্চ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। টাঙ্গাইল শাড়ি আমাদের নারীদের নিত্য ব্যবহৃত পোশাক, আর সেই জনপ্রিয়তার শক্তিই এই অর্জনের প্রেরণা।” তিনি এ সম্মান বাংলাদেশের তাঁতি সম্প্রদায় ও সকল নারীকে উৎসর্গ করেন।

ইউনেস্কোর এ কনভেনশনের আওতায় এটি বাংলাদেশের ষষ্ঠ একক নিবন্ধন। এর আগে স্বীকৃতি পেয়েছে—বাউল গান (২০০৮), জামদানি (২০১৩), মঙ্গল শোভাযাত্রা (২০১৬), শীতল পাটি (২০১৭) ও রিকশা পেইন্টিং (২০২৩)।

টাঙ্গাইল শাড়ির নিবন্ধনের লক্ষ্যে ২০২৪ সালের এপ্রিলে বাংলাদেশ দূতাবাস নির্ধারিত কাঠামোয় আবেদন জমা দেয়। নিয়ম অনুসারে আবেদনটি মূল্যায়ন কমিটির কঠোর যাচাই-বাছাই অতিক্রম করে আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের অনুমোদনের জন্য উপস্থাপিত হয়। কারিগরি দৃষ্টিতে নথি প্রস্তুত ছিল জটিল ও নির্ভুলতার দাবি–সত্ত্বেও বাংলাদেশ দূতাবাস সম্পূর্ণ নিজস্ব দক্ষতায় নথিটি প্রণয়ন করে সফলভাবে অনুমোদন পায়।

২০২৩ সালে ভারত টাঙ্গাইল শাড়িকে তাদের ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে ঘোষণা করলে বাংলাদেশে ব্যাপক জনঅসন্তোষ সৃষ্টি হয়। সে প্রেক্ষাপটে অনেকেই আশঙ্কা করেছিলেন—রাজনৈতিক জটিলতায় ইউনেস্কো নিবন্ধন বাধাগ্রস্ত হতে পারে। কিন্তু সেই সব শঙ্কা দূর করে আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদ নথিটিকে উচ্চমানের নিবন্ধন হিসেবে ঘোষণা করে। গবেষক ও বিশেষজ্ঞদের মতে, এই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি টাঙ্গাইল শাড়িকে ঘিরে অতীতের বিতর্কের যথেষ্ট সমাধান এনে দিয়েছে।

এদিকে ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মু. রিয়াজ হামিদুল্লাহ বলেন, “এটি একটি আন্তর্জাতিক কনভেনশনের মাধ্যমে অর্জিত স্বীকৃতি, যেখানে ভারত ও বাংলাদেশ দু’দেশই সদস্য। দুই দেশের নারীদের কাছে শাড়ি অত্যন্ত জনপ্রিয় পরিধেয়। তাই এই নিবন্ধন শাড়িপ্রেমী নারীসমাজের গর্ব আরও বাড়িয়ে দেবে।”

উল্লেখ্য, ২০২২ সালে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনে জয়লাভের মাধ্যমে বাংলাদেশ চার বছরের জন্য ইউনেস্কো ২০০৩ কনভেনশনের আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের সদস্যপদ অর্জন করে। পর্ষদের ১৮তম সভায় ‘ঢাকার রিক্সা ও রিক্সাচিত্র’ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করে।

চলমান ২০তম সভা গত ৭ ডিসেম্বর ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকরের উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে এবং ১৩ ডিসেম্বর এর সমাপ্তি হবে।