মোসারফ হোসেনের ভ্রাম্যমাণ মৌ খামার
- আপডেট সময় : ০৪:৫৯:৫৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২১ ২৭৬ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস ডিজিটাল ডেস্ক
মৌ খামার করে মোসারফ হোসেন আজ স্বাবলম্বি। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে ভ্রাম্যমান মৌ খামার বসিয়ে মধু আহরোহণ করে থাকেন তিনি। সাতক্ষীরার শ্যামনগর সুন্দরবন সংলগ্ন জায়গারটির নাম মুন্সীগঞ্জ। এখানেই নিবাস মৌচাষি মোসারফ হোসেনের। তিনি জানান, ২০০০ সালে আফজাল হোসেন নামে এক মৌচাষি মুন্সীগঞ্জে ভ্রাম্যমাণ মৌ বাক্স বসান। তা দেখেই তিনি মৌ চাষে উদ্বুদ্ধ হন। তখন মাত্র পাঁচটি বাক্স দিয়ে তার ভ্রাম্যমাণ মৌ খামার শুরু হয়। এখন খামারে রয়েছে দুইশ’ বাক্স।
খরচ কম ও তুলনামূলক লাভজনক হওয়ায় ভ্রাম্যমাণ মৌ চাষকেই পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন তিনি। জানা গেল মৌ চাষ সারা বছর হলেও মধু উৎপাদন হয় মাত্র পাঁচ মাস। এ পাঁচ মাসে কখনও লিচুর ফুলের মৌসুমে পাবনা, ঈশ্বরদী, কালো জিরা চাষের মৌসুমে মাদারীপুর, সরিষার মৌসুমে মানিকগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, এপ্রিলে সুন্দরবন-এভাবেই যেখানে যে ফুল ফোটে, সেখানে ছুটে যান মোসাররফ। সঙ্গী তার মৌ বাক্স।
ভ্রাম্যমাণ মৌ খামার স্থাপন করে মধু উৎপাদন একটি লাভজনক পেশা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, দুইশ’ বাক্সের একটি খামার চালাতে পাঁচজন কর্মচারীর প্রয়োজন হয়। তাদের পারিশ্রমিক ও ভরণ পোষণ, যাতায়াত খরচ, অফ সিজনে মৌমাছিগুলোকে খাওয়ানোসহ যাবতীয় খরচ দিয়ে প্রায় সাত লাখ টাকা খরচ হয়। আর আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে প্রায় দেড় টন সরিষা, দুই টন লিচু, এক টন সুন্দরবনের মধু ও ৫০০ কেজি কালো জিরার মধু পাওয়া যায়। যা প্রায় ১২ লাখ টাকায় বিক্রি হয়। অর্থাৎ বছরে পাঁচ লাখ টাকা লাভ হয়।
ভ্রাম্যমাণ মৌ খামার ও মধু উৎপাদনের সম্পর্কে মোসাররফ জানান, সারাদেশে দেড় থেকে দুই হাজার মৌচাষি রয়েছেন। যারা ভ্রাম্যমাণ মৌ খামার স্থাপন করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। এর অর্ধেক আবার সাতক্ষীরার। এখন মধু বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। কিন্তু মধু রপ্তানি বা মৌ খামার স্থাপনে সরকারের কোনো পৃষ্ঠপোষকতা নেই। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে মধু উৎপাদন ও রপ্তানির মাধ্যমে যেমন কর্মসংস্থান বাড়ানো সম্ভব, তেমনি বৈদেশিক মুদ্রাও আয় করা সম্ভব।