ঢাকা ০৭:৫৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
রাজনীকান্ত: দক্ষিণের ‘থালাইভা’ হওয়ার অনন্য পথচলা রূপটানহীন উপস্থিতিতে যার ব্যক্তিত্ব আরও দীপ্ত উন্নত চিকিৎসায় এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হলো গুলিবিদ্ধ  হাদিকে ওসমান হাদীকে সন্ত্রাসীদের গুলি: সিসিটিভি ফুটেজে মিলল হামলার প্রমাণ রজনীকান্তের ৭৫তম জন্মদিন: যে পাঁচটি খাবার তিনি এড়িয়ে চলেন গোয়ায় লুথরা ভাইদের ক্লাবে নারীর ওপর  হামলার অভিযোগ, তদন্তে পুলিশ ‘আপেল আর কমলার তুলনা নয়’ রাহুল-প্রিয়াঙ্কার বক্তৃতা নিয়ে রেণুকা চৌধুরীর মন্তব্য ইলন মাস্ককে উদ্দেশ্য করে ব্যঙ্গ, পাল্টা মন্তব্যে উঠে এল ‘ট্রান্সজেন্ডার সন্তান’ প্রসঙ্গ গুলিবিদ্ধ হাদিকে দেখতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মির্জা আব্বাস ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ, অবস্থা সংকটজনক রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ ডেকে আনতে পারে: ট্রাম্পের সতর্কবার্তা

কোর্ট মার্শাল ১৪ বছরের কারাদণ্ড পাকিস্তানের আইএসআই-এর সাবেক প্রধান ফয়েজ হামিদের

ভয়েস ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০২:১৯:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫ ৬১ বার পড়া হয়েছে

কোর্ট মার্শাল ১৪ বছরের কারাদণ্ড পাকিস্তানের আইএসআই-এর সাবেক প্রধান ফয়েজ হামিদের

ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

পাকিস্তানে এই প্রথমবারের মতো গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর সাবেক প্রধানকে কোর্ট মার্শালের মাধ্যমে সাজা দেওয়া হলো। অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফয়েজ হামিদ, যিনি ২০১৭ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত আইএসআই-এর কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স উইংয়ের (ডিজি-সি) প্রধান এবং পরবর্তী সময়ে আইএসআই মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

তাকে চারটি গুরুতর অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে ১৪ বছরের কঠোর কারাদণ্ড দিয়েছে সামরিক আদালত।

বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর জনসংযোগ শাখা (আইএসপিআর) এক বিবৃতিতে জানায়, ২০২৪ সালের ১২ আগস্ট শুরু হওয়া ১৫ মাসব্যাপী ফিল্ড জেনারেল কোর্ট মার্শাল আইনি প্রক্রিয়া শেষে এই রায় ঘোষণা করেছে।

অভিযুক্তকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকা, অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট লঙ্ঘন, সরকারি ক্ষমতা ও সম্পদের অপব্যবহার এবং সাধারণ নাগরিকদের ক্ষতিসাধনের অভিযোগে বিচার করা হয়।

আইএসপিআর জানিয়েছে, পূর্ণাঙ্গ আইনি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করে অভিযুক্তকে তার পছন্দের আইনজীবীসহ সব আইনগত অধিকার দেওয়া হয়েছে। রায়ের বিরুদ্ধে যথাযথ ফোরামে আপিল করার সুযোগও রাখা হয়েছে। তবে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সঙ্গে অভিযুক্তের সম্ভাব্য যোগসাজশের বিষয়টি আলাদাভাবে তদন্ত করা হচ্ছে।

কীভাবে শুরু হলো ফয়েজ হামিদের বিরুদ্ধে মামলা?

বিবিসির সঙ্গে আলাপচারিতায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জাজ অ্যাডভোকেট জেনারেল শাখার সঙ্গে যুক্ত কর্নেল (অব.) ইনাম-উর-রহিম জানান, ফয়েজ হামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রথমে সুপ্রিম কোর্টে উত্থাপিত হয়। আদালত আবেদনকারীকে বিবেচনামূলক ফোরামে যেতে নির্দেশ দিলে সেনাবাহিনী একটি মেজর জেনারেলের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠন করে।

আর্মি অ্যাক্ট অনুযায়ী, অবসরের ছয় মাস পর সাধারণত কোর্ট মার্শাল করা না গেলেও ৩১ এবং ৪০ নম্বর ধারা বিদ্রোহ প্ররোচনা, দুর্নীতি ও জালিয়াতির মতো অভিযোগে অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকেও বিচার করার সুযোগ দেয়, এই ধারাগুলোই প্রয়োগ হয়েছে ফয়েজ হামিদের ক্ষেত্রে।

মামলাটি শুরু হয় টপ সিটি হাউজিং সোসাইটির মালিক মুইজ আহমেদ খানের আবেদনের ভিত্তিতে। তিনি অভিযোগ করেন, ২০১৭ সালের ১২ মে আইএসআই ও রেঞ্জার্সের সদস্যরা সন্ত্রাসবাদ সংশ্লিষ্ট একটি মামলায় তার অফিস ও বাসভবনে অভিযান চালায় এবং সেখানে থাকা স্বর্ণ ও মূল্যবান সম্পদ নিয়ে যায়।

আবেদনকারীর দাবি, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) ফয়েজ হামিদের ভাই সরদার নাজাফ মধ্যস্থতা করে সমাধানের চেষ্টা করেন, এবং ফয়েজ হামিদ ৪০০ তোলা স্বর্ণ ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বললেও নগদ অর্থ ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানান।

এছাড়া অভিযোগ রয়েছে, অবসরপ্রাপ্ত দুই ব্রিগেডিয়ার মুইজ আহমেদ খানকে জোরপূর্বক চার কোটি রুপি দিতে এবং একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেল স্পনসর করতে বাধ্য করেছিলেন।

জটিল অভিযোগ ও দীর্ঘ তদন্ত শেষে পাকিস্তানের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো আইএসআই-এর সাবেক প্রধানকে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি করা হলো, যা দেশটির সামরিক-রাজনৈতিক অঙ্গনে বড় ধরনের নজিরবিহীন ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

কোর্ট মার্শাল ১৪ বছরের কারাদণ্ড পাকিস্তানের আইএসআই-এর সাবেক প্রধান ফয়েজ হামিদের

আপডেট সময় : ০২:১৯:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫

পাকিস্তানে এই প্রথমবারের মতো গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর সাবেক প্রধানকে কোর্ট মার্শালের মাধ্যমে সাজা দেওয়া হলো। অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফয়েজ হামিদ, যিনি ২০১৭ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত আইএসআই-এর কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স উইংয়ের (ডিজি-সি) প্রধান এবং পরবর্তী সময়ে আইএসআই মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

তাকে চারটি গুরুতর অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে ১৪ বছরের কঠোর কারাদণ্ড দিয়েছে সামরিক আদালত।

বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর জনসংযোগ শাখা (আইএসপিআর) এক বিবৃতিতে জানায়, ২০২৪ সালের ১২ আগস্ট শুরু হওয়া ১৫ মাসব্যাপী ফিল্ড জেনারেল কোর্ট মার্শাল আইনি প্রক্রিয়া শেষে এই রায় ঘোষণা করেছে।

অভিযুক্তকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকা, অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট লঙ্ঘন, সরকারি ক্ষমতা ও সম্পদের অপব্যবহার এবং সাধারণ নাগরিকদের ক্ষতিসাধনের অভিযোগে বিচার করা হয়।

আইএসপিআর জানিয়েছে, পূর্ণাঙ্গ আইনি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করে অভিযুক্তকে তার পছন্দের আইনজীবীসহ সব আইনগত অধিকার দেওয়া হয়েছে। রায়ের বিরুদ্ধে যথাযথ ফোরামে আপিল করার সুযোগও রাখা হয়েছে। তবে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সঙ্গে অভিযুক্তের সম্ভাব্য যোগসাজশের বিষয়টি আলাদাভাবে তদন্ত করা হচ্ছে।

কীভাবে শুরু হলো ফয়েজ হামিদের বিরুদ্ধে মামলা?

বিবিসির সঙ্গে আলাপচারিতায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জাজ অ্যাডভোকেট জেনারেল শাখার সঙ্গে যুক্ত কর্নেল (অব.) ইনাম-উর-রহিম জানান, ফয়েজ হামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রথমে সুপ্রিম কোর্টে উত্থাপিত হয়। আদালত আবেদনকারীকে বিবেচনামূলক ফোরামে যেতে নির্দেশ দিলে সেনাবাহিনী একটি মেজর জেনারেলের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠন করে।

আর্মি অ্যাক্ট অনুযায়ী, অবসরের ছয় মাস পর সাধারণত কোর্ট মার্শাল করা না গেলেও ৩১ এবং ৪০ নম্বর ধারা বিদ্রোহ প্ররোচনা, দুর্নীতি ও জালিয়াতির মতো অভিযোগে অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকেও বিচার করার সুযোগ দেয়, এই ধারাগুলোই প্রয়োগ হয়েছে ফয়েজ হামিদের ক্ষেত্রে।

মামলাটি শুরু হয় টপ সিটি হাউজিং সোসাইটির মালিক মুইজ আহমেদ খানের আবেদনের ভিত্তিতে। তিনি অভিযোগ করেন, ২০১৭ সালের ১২ মে আইএসআই ও রেঞ্জার্সের সদস্যরা সন্ত্রাসবাদ সংশ্লিষ্ট একটি মামলায় তার অফিস ও বাসভবনে অভিযান চালায় এবং সেখানে থাকা স্বর্ণ ও মূল্যবান সম্পদ নিয়ে যায়।

আবেদনকারীর দাবি, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) ফয়েজ হামিদের ভাই সরদার নাজাফ মধ্যস্থতা করে সমাধানের চেষ্টা করেন, এবং ফয়েজ হামিদ ৪০০ তোলা স্বর্ণ ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বললেও নগদ অর্থ ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানান।

এছাড়া অভিযোগ রয়েছে, অবসরপ্রাপ্ত দুই ব্রিগেডিয়ার মুইজ আহমেদ খানকে জোরপূর্বক চার কোটি রুপি দিতে এবং একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেল স্পনসর করতে বাধ্য করেছিলেন।

জটিল অভিযোগ ও দীর্ঘ তদন্ত শেষে পাকিস্তানের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো আইএসআই-এর সাবেক প্রধানকে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি করা হলো, যা দেশটির সামরিক-রাজনৈতিক অঙ্গনে বড় ধরনের নজিরবিহীন ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।