হিমালয় সীমান্তে চীনের সামরিক অবকাঠামো বাড়ছে, উদ্বেগে ভারত
- আপডেট সময় : ১১:১০:৪৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫ ৪৯ বার পড়া হয়েছে
অরুণাচলের সীমান্তে চীনের নতুন তৎপরতা: লুনজেতে ৩৬টি বিমান বাংকার নির্মাণ
চীন বর্তমানে সিএইচ-৪ মনুষ্যবিহীন আকাশযান (ইউএভি) ব্যবহার করছে, যা ১৬ হাজার ফুট উচ্চতা থেকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপে সক্ষম। এর ফলে হিমালয় অঞ্চলে চীনের নজরদারি ও হামলা ক্ষমতা বহুগুণে বেড়েছে
তিব্বতের লুনজে বিমানঘাঁটিতে চীন ৩৬টি শক্তিশালী বিমান বাংকার, নতুন প্রশাসনিক ভবন ও অ্যাপ্রন তৈরি করেছে। অরুণাচল প্রদেশের কৌশলগত শহর তাওয়াং থেকে মাত্র ১০৭ কিলোমিটার দূরে এই ঘাঁটিটি ভারতের জন্য নতুন কৌশলগত উদ্বেগ তৈরি করেছে। ম্যাকমোহন লাইন থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত লুনজে এখন চীনের যুদ্ধবিমান ও ড্রোন মোতায়েনের গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটিতে পরিণত হচ্ছে।
ভারতীয় বিমানবাহিনীর (আইএএফ) সাবেক প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল বি এস ধানোয়া বলেন, এই বাংকারগুলো চীনের যুদ্ধ প্রস্তুতির স্পষ্ট ইঙ্গিত। তাঁর মতে, ভূগর্ভস্থ সুড়ঙ্গে গোলাবারুদ ও জ্বালানি মজুত রাখা হয়েছে, যা ভবিষ্যতের সংঘাতে দ্রুত মোতায়েন সম্ভব করবে।
আইএএফ-এর সাবেক উপপ্রধান এয়ার মার্শাল অনিল খোসলা বলেন, লুনজে ঘাঁটির আধুনিকায়ন ভারতের জন্য গুরুতর কৌশলগত হুমকি। তিনি উল্লেখ করেন, এসব বাংকার চীনা সরঞ্জাম ছড়িয়ে রাখতে এবং ভারতীয় বিমান হামলা থেকে সুরক্ষা দিতে পারবে। এতে সংঘর্ষের শুরুতেই ঘাঁটিকে ক্ষতিগ্রস্ত করা কঠিন হবে।
সাবেক এই সেনা অফিসারের মতে, টিংরি, লুনজে ও বুরং-এর মতো বিমানঘাঁটিগুলো প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি) থেকে ৫০-১৫০ কিলোমিটারের মধ্যে। ফলে সীমান্তে কোনো উত্তেজনা দেখা দিলে চীন দ্রুত আকাশপথে প্রতিক্রিয়া জানাতে পারবে।
চীন বর্তমানে সিএইচ-৪ মনুষ্যবিহীন আকাশযান (ইউএভি) ব্যবহার করছে, যা ১৬ হাজার ফুট উচ্চতা থেকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপে সক্ষম। এর ফলে হিমালয় অঞ্চলে চীনের নজরদারি ও হামলা ক্ষমতা বহুগুণে বেড়েছে।
অন্যদিকে, ভারত ২০২৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি জেনারেল অ্যাটমিক্স-নির্মিত স্কাই গার্ডিয়ান ড্রোন পেতে যাচ্ছে। এতে ভারতের গোয়েন্দা ও আঘাত হানার সক্ষমতা বাড়বে। বর্তমানে ভারতীয় বাহিনী তুলনামূলকভাবে কম সক্ষম ইসরায়েলি ড্রোন ব্যবহার করছে।
এয়ার মার্শাল এসপি ধারকর বলেন, চীনের নতুন বিমানঘাঁটি ভারতের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। আগে ভূগোলগত সুবিধা থাকলেও আধুনিক অবকাঠামো নির্মাণের ফলে সেই সুবিধা সংকুচিত হচ্ছে।
ভূ-গোয়েন্দা বিশেষজ্ঞ ড্যামিয়েন সাইমন মনে করেন, তাওয়াং সেক্টরের বিপরীতে লুনজেতে এই বাংকার নির্মাণ চীনের বিমানশক্তি বৃদ্ধির অংশ। বেইজিং হিমালয় সীমান্ত বরাবর অন্তত ছয়টি বিমানঘাঁটি আধুনিকায়ন করছে, যার মধ্যে টিংরি, বুরং ও ইয়ুটিয়ান উল্লেখযোগ্য।
২০২০ সালের গালওয়ান সংঘর্ষের পর ভারত–চীন সম্পর্ক অচলাবস্থায় রয়েছে। সীমান্তে উভয় দেশের বিমানঘাঁটির আধুনিকায়ন সেই অচলাবস্থারই প্রতিফলন, যেখানে হিমালয় অঞ্চল নতুন এক কৌশলগত প্রতিযোগিতার মঞ্চে পরিণত হচ্ছে। সূত্র এনডিটিভি


















