গাজা উপত্যকায় শিশুদের মধ্যে অপুষ্টির হার ভয়ঙ্কর রূপ নিচ্ছে
- আপডেট সময় : ০৩:৩৪:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫ ৭৫ বার পড়া হয়েছে
ইসরায়েল গাজায় বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে ক্ষুধাকে যুদ্ধের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। এটি ফিলিস্তিনিদের ওপর গণহত্যা চালানোর একটি কৌশল বলে দাবি করেছে সংস্থাটি।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় ৫৬ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ইসরায়েল ও হামাস উভয়ই যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির কাছে এসেছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। অবশ্য কয়েকটি মূল বিষয় এখনও অমীমাংসিত রয়েছে।গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৬৬ ফিলিস্তিনি শিশু অনাহারে মারা গেছে।
এদিকে গাজার চিকিৎসকরা বলছেন, সময় ফুরিয়ে আসছে। ডা. আল-ফাররা বলেন, ‘শিশুদের অবস্থা দেখলে বুঝতে পারবেন, ওরা শুধু হাড্ডি-চর্মসার হয়ে গেছে। এটি ভয়ঙ্কর। প্রকৃত সমাধান হলো যুদ্ধ বন্ধ করা, সীমান্ত খুলে দেওয়া এবং শিশুখাদ্য প্রবেশ করতে দেওয়া।

গাজা উপত্যকায় শিশুদের মধ্যে অপুষ্টির হার ভয়ঙ্কর রূপ নিচ্ছে। UNICEF–সহ একাধিক আন্তর্জাতিক সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের মে মাসে মাত্র একই মাসে ৬ মাস থেকে ৫ বছর বয়সী ৫,১১৯ জন শিশুকে একিউট অপুষ্টির কারণে চিকিৎসা কেন্দ্রে ভর্তি করতে হয়েছে।
এর মধ্যে “সিভিয়ার একিউট ম্যালনিউট্রিশন (SAM) নামে পরিচিত সবচেয়ে প্রাণঘাতী ধরনের পড়েছে ৬৩৬ জন শিশুর ক্ষেত্রে।
এতে দেখা যাচ্ছে, এপ্রিল মাসে ভর্তি হয়েছিল ৩,৪৪৪ জন, যা মে মাসে প্রায় ৫০ % বাড়ছে। এছাড়া ফেব্রুয়ারি মাসে যখন একটি শান্তিচুক্তি সক্রিয় ছিল, তখন মাত্র ২,০৬৮ জন শিশু ভর্তি হয়েছিল, এর থেকে মে মাসে প্রায় ১৫০ % বৃদ্ধি।
চোক্তার দৃষ্টিকোণ থেকে আরও ভয়ঙ্কর তথ্য রয়েছে: World Health Organization (WHO) জানিয়েছে, ২০২৫ সালের জুলাই মাসে মাত্র একটিতে ১১,৮৭৭ জন ৫ বছরের কম বয়সী শিশু আঘাত পেয়েছে একিউট অপুষ্টিতে, যা ওই অঞ্চলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ একমাসের রেকর্ড।

এক গবেষণায় বলা হয়েছে, গাজায় প্রায় ৫৪,৬০০ জন ৫ বছরের কম বয়সী শিশু এখন একিউট অপুষ্টিতে রয়েছে, যার মধ্যে ১২,৮০০ জন শিশু সেভিয়ার বা সর্বাধিক ঝুঁকিপূর্ণ পর্যায়ে।
এই পরিস্থিতির পেছনে দুটি বড় কারণ রয়েছে, এক, খাদ্য, পানি, চিকিৎসাসেবা ও মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাঁধা। দুই, যুদ্ধ ও অব্যাহত লকডাউন বা সাপ্লাই বন্ধের কারণে খাদ্য নিরাপত্তার অবনতি।
নিষ্কর্ষে, গাজায় শিশুরা শুধু ক্ষুধায় নয়, ভাষ্করিত জীবনের জন্য যুদ্ধে প্রবেশ করছে। সময়মতো সহায়তা না পৌঁছালে এই শিশুদের মধ্যে বৃদ্ধিতে জটিলতা, রোগপ্রবণতা ও মৃত্যুর ঝুঁকি দ্রুত বাড়ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এখনই অব্যাহত ও বৃহৎ মাত্রায় খাদ্য, পুষ্টি ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে হবে।


















