অনানুষ্ঠানিক শ্রমিকদের সংখ্যা বেশি, কিন্তু স্বীকৃতি কম: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
- আপডেট সময় : ০৮:০৪:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ২২ বার পড়া হয়েছে
বাংলাদেশে শ্রমবাজারে অনানুষ্ঠানিক শ্রমিকের সংখ্যা অত্যধিক হলেও তাদের বেশির ভাগই এখনও কোনো ধরনের স্বীকৃতি, সুরক্ষা বা প্রাতিষ্ঠানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
আজ বিকেলে তেজগাঁওয়ের আলোকি কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত অনানুষ্ঠানিক ও প্রান্তিক আনুষ্ঠানিক খাতের নারী শ্রমিক সম্মেলন ২০২৫”-এর প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে অক্সফ্যাম ইন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ নারী চা শ্রমিক জোট, গৃহকর্মী জাতীয় ফোরাম, নারী গৃহভিত্তিক তৈরি পোশাক শ্রমিক নেটওয়ার্ক এবং নারী মৎস্য শ্রমিক নেটওয়ার্ক।
উপদেষ্টা বলেন, দেশের শ্রমবাজারে ৮৫ শতাংশ শ্রমিকই অনানুষ্ঠানিক খাতে কাজ করেন। অথচ স্বীকৃতি বা নিরাপত্তাহীনতার কারণে তারা অধিকাংশ অধিকার থেকে বঞ্চিত থাকেন। তিনি বলেন, “চা শ্রমিক, মৎস্যজীবী, গৃহশ্রমিকদের অবদান ছাড়া দেশের অর্থনীতি সচল রাখা সম্ভব নয়। কিন্তু অর্থনীতিবিদরা প্রায়শই শুধু আনুষ্ঠানিক খাতকে গুরুত্ব দেন। ফলে অনানুষ্ঠানিক শ্রমিকদের প্রকৃত অবদান পরিমাপ হয় না এবং স্বীকৃতিও পাওয়া যায় না।”
তিনি আরও বলেন, নেতৃত্ব গঠনের প্রক্রিয়া এককভাবে হয় না—সমষ্টিগত উদ্যোগেই তা তৈরি হয়। যদিও প্রতিটি শ্রমিকের সমস্যা আলাদা, কিন্তু নারীরা দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক ও অর্থনৈতিক শোষণের শিকার। নারী শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করা জাতীয় উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত জরুরি।
“শ্রমিকদের কথা বলতে গেলে বঞ্চনার কথাই সামনে আসে,” উল্লেখ করে তিনি বলেন, “তারা কঠোর পরিশ্রম করেও প্রাপ্য সম্মান, সুরক্ষা বা অধিকার পান না।”
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কর্মজীবী নারী সংগঠনের অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালক সুনজিদা সুলতানা।
বিশেষ অতিথি শ্রম সংস্কার কমিশনের সাবেক প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ বলেন, চা বাগান থেকে মৎস্য খাত—আমাদের সম্মিলিত শক্তিই স্বীকৃতি ও ন্যায়ের পথ তৈরি করে। সিদ্ধান্ত গ্রহণের জায়গায় নারী শ্রমিকদের অংশগ্রহণ অপরিহার্য; কারণ তারাই দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড।
অক্সফ্যাম ইন বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর আশীষ দামলে বলেন, নারীরা যখন সংগঠিত হয়, কথা বলে এবং নেতৃত্ব দেয়—তখন পরিবর্তন সম্ভব হয়। অনানুষ্ঠানিক নারী শ্রমিকদের অধিকার, মর্যাদা ও নেতৃত্ব নিশ্চিত করা উন্নয়নের পূর্বশর্ত।
প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন, ফওজিয়া খন্দকার (নির্বাহী পরিচালক, প্রাগ্রসর), তাসলিমা আখতার (সভাপতি, ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশন ও অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়),
ফারহিন আখতার খুশি (গৃহকর্মী নেত্রী), অ্যাডভোকেট শারমিন সুলতানা মৌসুমি (ভাইস প্রেসিডেন্ট, শ্রম আদালত বার অ্যাসোসিয়েশন), শাহাজাদি বেগম (প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর, অক্সফ্যাম ইন বাংলাদেশ), একে এম আশরাফ উদ্দিন (নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ লেবার ফাউন্ডেশন)।
অনুষ্ঠানে চা বাগান, মৎস্য, গৃহশ্রম ও হোম-বেইজড গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন খাতের নারী শ্রমিকরা একত্রিত হয়ে National Non-unionised Women Workers Forum গঠনের ঘোষণা দেন।



















