২৬-এর ১২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং প্রথম গণভোট
- আপডেট সময় : ০৬:৩১:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫ ৫৭ বার পড়া হয়েছে
২৬-এর ১২ ফেব্রুয়ারি বাংরাদেশে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং দেশের প্রথম গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি)এ এম এম নাসির উদ্দিন এ ঘোষণা দেন। ভাষণটি বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ২০২৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
২৬-এর ১২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একযোগে অনুষ্ঠিত হবে। বৃহস্পতিবার জাতির উদ্দেশে ভাষণে গণভোট ও সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণাকালে করেন, দেশটির প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন।
তার ধারণ করা ভাষণটি এদিন সন্ধ্যা ছয়টায় টিভি ও বেতারে প্রচার করা হয়। গণভোট ও সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলাচর আহ্বান জানান সিইসি। একই সঙ্গে কর্মকর্তাদের শিথিলতা ও গাফিলতি সহ্য করা হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন। ১২ মিনিটের ভাষণে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা এবং তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন সিইসি।
একই সঙ্গে জুলাই-আগস্ট ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মৃতির শ্রদ্ধা জানিয়ে তাদের আত্মার শান্তির কামনা করেন। বাংলাদেশে ১২ কোটি ৭৬ লাখ ৯৫ হাজার ১৮৩ জন ভোটারের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ৬ কোটি ৪৮ লাখ ১৪ হাজার ৯০৭ এবং নারী ভোটারের সংখ্যা ৬ কোটি ২৮ লাখ ৭ হাজার ৯৪২ জন।
গত এক বছরে নতুন ভোটার অন্তর্ভুক্তির পাশাপাশি ভোট বিমুখ এবং বাদ পড়া প্রায় ৪৫ লাখ ভোটারকে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এবং ২১ লক্ষাধিক মৃত ভোটারকে তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। নারী ভোটারদের যথাযথ অন্তর্ভুক্তির অভাবে পুরুষের সাথে নারী ভোটারের ব্যবধান বেডে প্রায় ২৯ লাখে গিয়ে দাঁড়ায়। বাদ পড়া নারী ভোটারদের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে সেই ব্যবধান উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে আনা হয়েছে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার তার ভাষণে বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে ২০২৪-এর ছাত্র গণঅভ্যুত্থান পর্যন্ত সার্বভৌমত্ব এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও রক্ষার সকল আন্দোলনে যারা আহত নির্যাতিত ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের প্রতি জানাই আমার আন্তরিক সমবেদনা। আহতদের দ্রুত আরোগ্য এবং স্বাভাবিক জীবনের জন্য প্রার্থনা করছি। জাতি হিসেবে আমাদের অমোঘ শক্তি হচ্ছে স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রের জন্য আমাদের ভালোবাসা ও আত্মত্যাগ।
জাতির প্রত্যাশাকে ধারণ করে আমাদের সংবিধান রাষ্ট্রের উপর জনগণের একচ্ছত্র মালিকানা নিশ্চিত করেছে। তিনি বলেন, জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল মালিকানা প্রতিষ্ঠার একমাত্র পথ হচ্ছে নির্বাচন। দুঃখজনক হলেও সত্য যে মানসম্মত নির্বাচনের অনুপস্থিতি প্রায়শই আমাদের ঐতিহ্য এবং সামষ্টির প্রত্যাশাকে ম্লান করেছে। এমনই এক প্রেক্ষাপটে ২০২৪-এর গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে।
আমাদের ভাইবোন সন্তানদের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে আমাদের অঙ্গীকার হচ্ছে, একটি সুষ্ঠ ও সুন্দর নির্বাচন অনুষ্ঠান, যা জাতি হিসেবে আমাদের প্রত্যাশা পূরণ করবে এবং বিশ্বদরবারে আমাদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আপনারা একই প্রত্যাশা ধারণ করেন এবং একই অঙ্গীকারে অঙ্গীকারাবদ্ধ।
তফসিল অনুযায়ী, প্রার্থীদের মনোনয়পত্র দাখিলের শেষ তারিখ ২৯ ডিসেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের ১১ জানুয়ারি এবং আপিল নিষ্পত্তি হবে ১২ থেকে ১৮ জানুয়ারি। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২০ জানুয়ারি। প্রতীক বরাদ্দ করা হবে ২১ জানুয়ারি। নির্বাচনী প্রচার শুরু হবে ২২ জানুয়ারি, প্রচার শেষ হবে ১০ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে সাতটা পর্যন্ত। ১২ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে ৩০০ সংসদীয় আসনে ভোটগ্রহণ করা হবে।
১২ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে একই দিনে জাতীয় সিদ্ধান্ত সংসদ নির্বাচন ও গণভোট উদযাপন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ, যা গণতান্ত্রিক যাত্রায় যোগ করবে এক নতুন মাইলফলক।



















