ঢাকা ০৫:৩৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

মহালয়ার পুণ্য তিথিতে ভানবাসি মানুষের মধ্যে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ

ড: বিরাজলক্ষ্মী ঘোষ
  • আপডেট সময় : ১১:০০:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ অক্টোবর ২০২১ ৪৮০ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

জলের ওপর দিয়ে শন শন করে বাতাস বয়ে যাচ্ছে। সামান্য আওয়াজও জলের ওপর দিয়ে বাতাসের সঙ্গে ছড়িয়ে পড়ছে। যতদূর চোখ যায়, কেবল জল আর জল। সরিসৃপের মতো ঘিরে ফেলেছে গ্রামের পর গ্রামের মানুষদের। ভানের জলের সঙ্গে জলবন্দি মানুষদের দুঃখকষ্ট একাকার! অভাব অনটনে দিশেহারা। এমন দৃশ্য বার বারই মনে করিয়ে দিচ্ছিল বিশ্ব নন্দিত কণ্ঠশিল্পী ভূপেন হাজারিকার কালজয়ী গান।

‘ও বেহুলা বাংলা
আমার দুখিনী বাংলা
তোর কপালের সিঁদুরে টিপ মুছিয়ে দিল ঝড়’

শনিবার রাতের ঘটনা। অকস্মাত রূপনারায়ণ নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় খানাকুল-২ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা। নদী তীরবর্তী ধান্যঘরি এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রাম চলে যায় জলের তলায়। খানাকুল-২ নম্বর ব্লকের রাজহাটী, রামচন্দ্রপুর, জগৎপুর, মারোখানা, বাসাবাটি এলাকা এখনও জলের তলায়। বহু মাটির বাড়ি ধ্বসে পড়েছে। বেশ কিছু পাকা বাড়ির এক তলা অবধি জলমগ্ন। এ অবস্থায় বিশুদ্ধ খাবার জলতো দূরের কথা একমুঠো খাবার জোটানোটাই অনেকের পক্ষে কষ্টসাধ্য ব্যাপার। এ অবস্থায়ই ত্রাণ কর্তায় যথাসাধ্য সহযোগিতা নিয়ে সেখানে পৌছানো স্বয়ং ঈশ্বরের আর্শিবাদ হিসেবেই নিয়েছে ভানবাসী মানুষ।


অন্য দিকে, দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে দফায় দফায় জল ছাড়ার পর মুণ্ডেশ্বরী ও কানা দামোদরের জল বেড়ে যাওয়ায় প্লাবিত হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর ব্লক। এদিন দুপুরের পর থেকে জল ঢুকতে শুরু করে। সন্ধের পর থেকে প্লাবিত হয়ে যায় গোটা এলাকা। মোট ১১টা গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ৭টি জলমগ্ন। কয়েক হাজার একর জমির ফসল জলের নীচে।

উদয়নারায়ণপুরে সব্জি চাষে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। বহু এলাকাতেই পানীয় জলের সঙ্কট তীব্র। বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর ও আমতায়। উদয়নারায়ণপুরের ৮৫টি গ্রাম জলমগ্ন। আমতা-২ ব্লকের বিভিন্ন এলাকা নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। আমতা ১ নম্বর ব্লকের রসপুর এলাকাতেও জল ঢুকছে। হাওড়া-হুগলি সংযোগকারী রাজ্য সড়ক এখন জলমগ্ন।

ইতিপূর্বে সুন্দরবন ও অন্যান্য স্থানে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে বিধ্বস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছে প্রজেক্ট গ্রীন বাংলা এবং  Blood Donor What’s App Group.

আবারো বন্যাকবলিত মানুষের জন্য শুকনো খাবার (বেবি ফুড, দুধ, চিঁড়ে, মুড়ি, বিস্কুট, ছাতু, সোয়াবিন), মোমবাতি, মাস্ক, স্যানিটাইজার, সাবান ও পরমা প্রকল্প গ্রীন বাংলার তরফ থেকে প্রতিটি মা বোনের জন্য স্যানিটারি ন্যাপকিন নিয়ে ভানভাসী মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হলো সম্মিলিত উদ্যোগের সহযোগিতায় মাতৃপক্ষের পুণ্যতিথিতে।

‘কবি গুরু বলেছিলেন যাঁরা বলেন তেত্রিশ কোটির (তৎ কালীন দেশের জনসংখ্যা) জন্য কি করতে পারবে তারা আসলে ফাঁকি দেবার চেষ্টা করেন। আপনার চারপাশের সমস্যায় পড়া মানুষ গুলোর পাশে যদি কিছুটা দাঁড়াতে পারেন সেটাই যথেষ্ট। এই টুকু ভাবনায় আসতে আসতে ছড়িয়ে পড়বে সমগ্র দেশে। আসুন এই ভাবনা আমরা ছড়িয়ে দেই দিকে দিকে। আমরা বিশ্বাস করি ‘সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সমৃদ্ধ আগামী’।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

মহালয়ার পুণ্য তিথিতে ভানবাসি মানুষের মধ্যে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ

আপডেট সময় : ১১:০০:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ অক্টোবর ২০২১

জলের ওপর দিয়ে শন শন করে বাতাস বয়ে যাচ্ছে। সামান্য আওয়াজও জলের ওপর দিয়ে বাতাসের সঙ্গে ছড়িয়ে পড়ছে। যতদূর চোখ যায়, কেবল জল আর জল। সরিসৃপের মতো ঘিরে ফেলেছে গ্রামের পর গ্রামের মানুষদের। ভানের জলের সঙ্গে জলবন্দি মানুষদের দুঃখকষ্ট একাকার! অভাব অনটনে দিশেহারা। এমন দৃশ্য বার বারই মনে করিয়ে দিচ্ছিল বিশ্ব নন্দিত কণ্ঠশিল্পী ভূপেন হাজারিকার কালজয়ী গান।

‘ও বেহুলা বাংলা
আমার দুখিনী বাংলা
তোর কপালের সিঁদুরে টিপ মুছিয়ে দিল ঝড়’

শনিবার রাতের ঘটনা। অকস্মাত রূপনারায়ণ নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় খানাকুল-২ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা। নদী তীরবর্তী ধান্যঘরি এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রাম চলে যায় জলের তলায়। খানাকুল-২ নম্বর ব্লকের রাজহাটী, রামচন্দ্রপুর, জগৎপুর, মারোখানা, বাসাবাটি এলাকা এখনও জলের তলায়। বহু মাটির বাড়ি ধ্বসে পড়েছে। বেশ কিছু পাকা বাড়ির এক তলা অবধি জলমগ্ন। এ অবস্থায় বিশুদ্ধ খাবার জলতো দূরের কথা একমুঠো খাবার জোটানোটাই অনেকের পক্ষে কষ্টসাধ্য ব্যাপার। এ অবস্থায়ই ত্রাণ কর্তায় যথাসাধ্য সহযোগিতা নিয়ে সেখানে পৌছানো স্বয়ং ঈশ্বরের আর্শিবাদ হিসেবেই নিয়েছে ভানবাসী মানুষ।


অন্য দিকে, দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে দফায় দফায় জল ছাড়ার পর মুণ্ডেশ্বরী ও কানা দামোদরের জল বেড়ে যাওয়ায় প্লাবিত হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর ব্লক। এদিন দুপুরের পর থেকে জল ঢুকতে শুরু করে। সন্ধের পর থেকে প্লাবিত হয়ে যায় গোটা এলাকা। মোট ১১টা গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ৭টি জলমগ্ন। কয়েক হাজার একর জমির ফসল জলের নীচে।

উদয়নারায়ণপুরে সব্জি চাষে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। বহু এলাকাতেই পানীয় জলের সঙ্কট তীব্র। বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর ও আমতায়। উদয়নারায়ণপুরের ৮৫টি গ্রাম জলমগ্ন। আমতা-২ ব্লকের বিভিন্ন এলাকা নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। আমতা ১ নম্বর ব্লকের রসপুর এলাকাতেও জল ঢুকছে। হাওড়া-হুগলি সংযোগকারী রাজ্য সড়ক এখন জলমগ্ন।

ইতিপূর্বে সুন্দরবন ও অন্যান্য স্থানে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে বিধ্বস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছে প্রজেক্ট গ্রীন বাংলা এবং  Blood Donor What’s App Group.

আবারো বন্যাকবলিত মানুষের জন্য শুকনো খাবার (বেবি ফুড, দুধ, চিঁড়ে, মুড়ি, বিস্কুট, ছাতু, সোয়াবিন), মোমবাতি, মাস্ক, স্যানিটাইজার, সাবান ও পরমা প্রকল্প গ্রীন বাংলার তরফ থেকে প্রতিটি মা বোনের জন্য স্যানিটারি ন্যাপকিন নিয়ে ভানভাসী মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হলো সম্মিলিত উদ্যোগের সহযোগিতায় মাতৃপক্ষের পুণ্যতিথিতে।

‘কবি গুরু বলেছিলেন যাঁরা বলেন তেত্রিশ কোটির (তৎ কালীন দেশের জনসংখ্যা) জন্য কি করতে পারবে তারা আসলে ফাঁকি দেবার চেষ্টা করেন। আপনার চারপাশের সমস্যায় পড়া মানুষ গুলোর পাশে যদি কিছুটা দাঁড়াতে পারেন সেটাই যথেষ্ট। এই টুকু ভাবনায় আসতে আসতে ছড়িয়ে পড়বে সমগ্র দেশে। আসুন এই ভাবনা আমরা ছড়িয়ে দেই দিকে দিকে। আমরা বিশ্বাস করি ‘সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সমৃদ্ধ আগামী’।