বিদ্রোহী কবির স্মৃতিবিজড়িত কক্ষে কিছুক্ষণ

- আপডেট সময় : ০৯:৪২:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ অগাস্ট ২০২৩ ২০১ বার পড়া হয়েছে
অনিরুদ্ধ
ভেজানো দরজা ঠেলে শান্ত পায়ে এগিয়ে গেলো। ঘরের মেঝেতে এমন ভাবে পা টিপে ধীর লয়ে এগিয়ে গেলো, যেন তার ঘুম ভেঙ্গে না যায়। কক্ষের মাঝ খানে দাড়িয়ে গেলো সে, তারপর চারপাশটা দেখ নিল ভালোভাবে। দেয়ালের দিকে তার চোখে যেতেই স্থির হয়ে গেল। ডাগর ডাগর চোখে অথচ শান্ত নয়নে তাকিয়ে আছেন তিনি। দু’চোখে মানুষের মঙ্গল বার্তা ঝরে পড়ছে। কবি যেন বলতে চাইছেন,
‘গাহি সাম্যের গান-
মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান!
নাই দেশ-কাল-পাত্রের ভেদ, অভেদ ধর্ম জাতি,
সব দেশে, সব কালে, ঘরে ঘরে তিনি মানুষের জ্ঞাতি।’

পা তার নড়ছে না। কিছুক্ষণ ঠায় দাড়িয়ে থেকে নিজেকে সামলে নিয়ে কক্ষের চারপাশটা ঘুরে দেখলো সে। সামনের দেয়ালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হাসিমুখে জাতীয় কবিকে ফুলের মালা পড়িয়ে দিচ্ছেন। সেই ছবিটি ঝলঝল করছে।
বলছিলাম মানুষের কবি, সাম্যের কবি, ভালোবাসার কবি, বিদ্রোহী কবির ও বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কথা।
এই কক্ষটি সরকারীভাবে সংরক্ষণ করা হয়েছে। মৃত্যু আগে পর্যন্ত অসুস্থ কবি তৎকালীন পিজি বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়ের বি-ব্লকের দ্বিতীয় তলায় ১১৭ নম্বর কক্ষটিতে ছিলেন।
বিদ্রোহী কবির স্মৃতিবিজড়িত এই কক্ষটিতেই সেদিন সময় কাটালেন উদীয়মান সঙ্গীত শিল্পী ও লেখক আদিবাহ ইসমত। সময় বয়ে যায় আপন গতিতে। আরও একটু সময় কাটানো গেলে ভালো লাগতো। কিন্তু সময় তাকে সেই ঋণ দেয়নি।
আদিবাহ ইসমত সেই ঐতিহাসিক কক্ষটি ঘুরে এসে ছোট্ট করে লিখেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১৭ নম্বর কক্ষে (বি ব্লকের দ্বিতীয় তলা) যেখানে আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম শেষ দিনগুলো কাটিয়েছিলেন।
১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট সেই কক্ষেই তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। কবির স্মৃতি বিজড়িত সেই কক্ষটি সংরক্ষিত। এটি এখন ইতিহাসের অংশ।