ঢাকা ১২:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ১৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে সশস্ত্র আনসার মোতায়েন থাকবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ২০২৬ সালের গ্রীষ্মে  ফুটবলের ঈশ্বর আবারও আলো ছড়াবেন হিমালয় সীমান্তে চীনের সামরিক অবকাঠামো বাড়ছে, উদ্বেগে ভারত উপকূলের আড়ত ও মাছঘাটে ডিমওয়ালা ইলিশের আমদানি অষ্টমবারের মতো ক্যামেরুনের প্রেসিডেন্ট ৯২ বছরের পল  বাংলাদেশকে করাচি বন্দর ব্যবহারের প্রস্তাব পাকিস্তানের প্রেসেঞ্জা’র ঢাকা ব্যুরো অফিস উদ্বোধন, বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার নতুন দিগন্তের সূচনা দক্ষিণ চীন সাগরে আধা ঘণ্টার ব্যবধানে বিধ্বস্ত মার্কিন হেলিকপ্টার ও যুদ্ধবিমান প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর নির্ধারিত পথে মেট্রোর চলাচল শুরু সংবাদপত্র ও সাংবাদিকদের কল্যাণে অন্তর্বর্তী সরকারের গুচ্ছ পদক্ষেপ

 বাংলাদেশকে করাচি বন্দর ব্যবহারের প্রস্তাব পাকিস্তানের

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৭:৪৪:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫ ৪৬ বার পড়া হয়েছে

ঢাকায় অনুষ্ঠিত জে ই সি বৈঠক : ছবি সংগ্রহ

ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আমিনুল হক ভূইয়া, ঢাকা

চীনের সঙ্গে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে করাচি বন্দর ব্যবহারের প্রস্তাব দিয়েছে পাকিস্তান। ইসলামাবাদের মতে, এ উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে আঞ্চলিক সংযোগ জোরদার হওয়ার পাশাপাশি একটি বিকল্প সমুদ্র রুট উন্মুক্ত হবে। প্রায় দুই দশকের বিরতির পর সোমবার ঢাকায়  পরিকল্পনা বাংলাদেশ-পাকিস্তানের নবম যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের (জেইসি) বৈঠক।

দীর্ঘ প্রতীক্ষিত এ বৈঠকে মূল আলোচ্য বিষয় ছিল দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদার করা। বৈঠকে বাংলাদেশ পক্ষ থেকে পাকিস্তানি বাজারে বাংলাদেশের পণ্যের শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার চাওয়া হয়েছে। বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ভারসাম্য পাকিস্তানের পক্ষে থাকায় এ সুবিধা বাংলাদেশের রপ্তানিকে উৎসাহিত করবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।

বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে কারিগরি প্রশিক্ষণ দিতে পাকিস্তানের আগ্রহ প্রকাশ, উন্নত মানের গবাদি পশুর সিমেন আমদানির মাধ্যমে পশুর জাত উন্নয়নে সহযোগিতা এবং যৌথ উদ্যোগের আওতায় টিকা তৈরি, গবেষণা ও স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা জোরদার করা। বাংলাদেশের পরিবার পরিকল্পনা ও প্রজনন স্বাস্থ্য মডেল গ্রহণেও আগ্রহ দেখিয়েছে ইসলামাবাদ। এছাড়াও আলোচ্যসূচির মধ্যে ডিজিটাল পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট ডিজিটালাইজেশনে সহায়তার প্রস্তাব, বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ৫০০ নতুন বৃত্তি প্রদানের প্রস্তাব এবং বাংলাদেশে একটি পাকিস্তানি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস স্থাপনের প্রস্তাবও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

বাংলাদেশকে করাচি বন্দর ব্যবহারের প্রস্তাব পাকিস্তানের
বাংলাদেশকে করাচি বন্দর ব্যবহারের প্রস্তাব পাকিস্তানের

সূত্র জানায়, যানবাহন ও দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান-সংক্রান্ত তথ্য বিনিময়সহ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার মতো বিষয়েও দুই দেশ সহযোগিতার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে। প্রায় তিন ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠকে বাংলাদেশ পক্ষের নেতৃত্ব দেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং পাকিস্তান পক্ষের নেতৃত্ব দেন জ্বালানিমন্ত্রী আলী পারভেজ মালিক। বৈঠকে কৃষি গবেষণা, হালাল ফুড সার্টিফিকেশন, তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি), নৌপরিবহন, শিক্ষা ও জ্বালানি খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে একাধিক সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) নিয়ে আলোচনা হয়। অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, নৌচলাচল, আকাশপথে যোগাযোগ, বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও সার্ককে পুনরুজ্জীবিত করার বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি। দুই দেশই সহযোগিতা বাড়াতে আগ্রহী।

পাকিস্তানের জ্বালানিমন্ত্রী আলী পারভেজ মালিক বলেন, এই আলোচনা দুই দেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক আরও গভীর করবে। বাংলাদেশ থেকে পাট ও ওষুধ আমদানি বৃদ্ধির বিষয়েও ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। বৈঠক শেষে উভয় পক্ষই জানান, অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য একটি যৌথ কার্যপরিকল্পনা তৈরি করা হবে। দুই দেশের কর্মকর্তারা আশা প্রকাশ করেছেন, এই বৈঠককে কেন্দ্র করে ঢাকা ও ইসলামাবাদের মধ্যে দীর্ঘদিনের স্থবির সম্পর্ক নতুন মাত্রা পাবে।

২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ পাকিস্তান থেকে ৭৮৭ মিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে, রপ্তানি করেছে ৮০ মিলিয়ন ডলারের পণ্য। পাকিস্তান থেকে মূলত তুলা, সুতা, কাপড়, রাসায়নিক, লোহা-ইস্পাত ও ওষুধ আমদানি হয়; আর বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হয় পাট ও পাটজাত পণ্য, তৈরি পোশাক, সিরামিক, চামড়া, প্লাস্টিক ও ওষুধজাত দ্রব্য।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

 বাংলাদেশকে করাচি বন্দর ব্যবহারের প্রস্তাব পাকিস্তানের

আপডেট সময় : ০৭:৪৪:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫

আমিনুল হক ভূইয়া, ঢাকা

চীনের সঙ্গে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে করাচি বন্দর ব্যবহারের প্রস্তাব দিয়েছে পাকিস্তান। ইসলামাবাদের মতে, এ উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে আঞ্চলিক সংযোগ জোরদার হওয়ার পাশাপাশি একটি বিকল্প সমুদ্র রুট উন্মুক্ত হবে। প্রায় দুই দশকের বিরতির পর সোমবার ঢাকায়  পরিকল্পনা বাংলাদেশ-পাকিস্তানের নবম যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের (জেইসি) বৈঠক।

দীর্ঘ প্রতীক্ষিত এ বৈঠকে মূল আলোচ্য বিষয় ছিল দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদার করা। বৈঠকে বাংলাদেশ পক্ষ থেকে পাকিস্তানি বাজারে বাংলাদেশের পণ্যের শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার চাওয়া হয়েছে। বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ভারসাম্য পাকিস্তানের পক্ষে থাকায় এ সুবিধা বাংলাদেশের রপ্তানিকে উৎসাহিত করবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।

বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে কারিগরি প্রশিক্ষণ দিতে পাকিস্তানের আগ্রহ প্রকাশ, উন্নত মানের গবাদি পশুর সিমেন আমদানির মাধ্যমে পশুর জাত উন্নয়নে সহযোগিতা এবং যৌথ উদ্যোগের আওতায় টিকা তৈরি, গবেষণা ও স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা জোরদার করা। বাংলাদেশের পরিবার পরিকল্পনা ও প্রজনন স্বাস্থ্য মডেল গ্রহণেও আগ্রহ দেখিয়েছে ইসলামাবাদ। এছাড়াও আলোচ্যসূচির মধ্যে ডিজিটাল পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট ডিজিটালাইজেশনে সহায়তার প্রস্তাব, বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ৫০০ নতুন বৃত্তি প্রদানের প্রস্তাব এবং বাংলাদেশে একটি পাকিস্তানি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস স্থাপনের প্রস্তাবও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

বাংলাদেশকে করাচি বন্দর ব্যবহারের প্রস্তাব পাকিস্তানের
বাংলাদেশকে করাচি বন্দর ব্যবহারের প্রস্তাব পাকিস্তানের

সূত্র জানায়, যানবাহন ও দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান-সংক্রান্ত তথ্য বিনিময়সহ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার মতো বিষয়েও দুই দেশ সহযোগিতার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে। প্রায় তিন ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠকে বাংলাদেশ পক্ষের নেতৃত্ব দেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং পাকিস্তান পক্ষের নেতৃত্ব দেন জ্বালানিমন্ত্রী আলী পারভেজ মালিক। বৈঠকে কৃষি গবেষণা, হালাল ফুড সার্টিফিকেশন, তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি), নৌপরিবহন, শিক্ষা ও জ্বালানি খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে একাধিক সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) নিয়ে আলোচনা হয়। অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, নৌচলাচল, আকাশপথে যোগাযোগ, বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও সার্ককে পুনরুজ্জীবিত করার বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি। দুই দেশই সহযোগিতা বাড়াতে আগ্রহী।

পাকিস্তানের জ্বালানিমন্ত্রী আলী পারভেজ মালিক বলেন, এই আলোচনা দুই দেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক আরও গভীর করবে। বাংলাদেশ থেকে পাট ও ওষুধ আমদানি বৃদ্ধির বিষয়েও ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। বৈঠক শেষে উভয় পক্ষই জানান, অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য একটি যৌথ কার্যপরিকল্পনা তৈরি করা হবে। দুই দেশের কর্মকর্তারা আশা প্রকাশ করেছেন, এই বৈঠককে কেন্দ্র করে ঢাকা ও ইসলামাবাদের মধ্যে দীর্ঘদিনের স্থবির সম্পর্ক নতুন মাত্রা পাবে।

২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ পাকিস্তান থেকে ৭৮৭ মিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে, রপ্তানি করেছে ৮০ মিলিয়ন ডলারের পণ্য। পাকিস্তান থেকে মূলত তুলা, সুতা, কাপড়, রাসায়নিক, লোহা-ইস্পাত ও ওষুধ আমদানি হয়; আর বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হয় পাট ও পাটজাত পণ্য, তৈরি পোশাক, সিরামিক, চামড়া, প্লাস্টিক ও ওষুধজাত দ্রব্য।