ঢাকা ০৪:৩২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
হাদির হামলাকারীদের ধরিয়ে দিলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করলো  সরকার  মেসির সঙ্গে দেখা, ছবি তোলা, কিন্তু মাঠে নামা হল না! হোটেল থেকেই ফিরলেন শাহরুখ খান যুবভারতীকাণ্ডে ব্যথিত মমতা , মেসির কাছে প্রকাশ্য ক্ষমা গুলিবিদ্ধ হাদির অবস্থা সংকটাপন্ন, জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে হাদিকে গুলি: সিসিটিভি ফুটেজে একজন শনাক্ত, তথ্যদাতাকে পুরস্কারের ঘোষণা দ্রোহ ও প্রেমের কিংবদন্তি কবি হেলাল হাফিজ’র প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী হাদির ওপর হামলাকারীরা শনাক্ত, যেকোন  মুহূর্তে  গ্রেপ্তার: ডিএমপি কমিশনার স্যার বলেছিলেন, আমি নাকি জিনাত আমানের কথা মনে করিয়ে দিই রাজনীতির মঞ্চে প্রত্যাবর্তন, ২৫ ডিসেম্বর ঢাকায় ফিরছেন তারেক রহমান রাজনীকান্ত: দক্ষিণের ‘থালাইভা’ হওয়ার অনন্য পথচলা রূপটানহীন উপস্থিতিতে যার ব্যক্তিত্ব আরও দীপ্ত

দ্রোহ ও প্রেমের কিংবদন্তি কবি হেলাল হাফিজ’র প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
  • আপডেট সময় : ০১:১০:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ২৯ বার পড়া হয়েছে

দ্রোহ ও প্রেমের কিংবদন্তি কবি হেলাল হাফিজ’র প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী

ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

কবি হেলাল হাফিজের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। দ্রোহ, প্রেম আর প্রতিবাদের অনন্য ভাষ্যকার এই কবি বাংলা কবিতায় চিরকাল উচ্চারণযোগ্য একটি নাম। ‘এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়/ এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়’, এই দুই লাইনে তিনি হয়ে উঠেছিলেন সময়ের কণ্ঠস্বর, হয়ে উঠেছিলেন কিংবদন্তি।

১৯৪৮ সালের ৭ অক্টোবর নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার বড়তলী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন হেলাল হাফিজ। ষাটের দশকের উত্তাল রাজনৈতিক বাস্তবতায় তাঁর কবিসত্তার বিকাশ ঘটে।

১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে রচিত কবিতা ‘নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’ তাঁকে এনে দেয় তুমুল জনপ্রিয়তা ও কবিখ্যাতি। তখন তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ছাত্র। সাংবাদিকতা পেশার কারণে তিনি সময়ের আন্দোলন, সংঘাত ও স্বপ্নের সঙ্গে ছিলেন নিবিড়ভাবে যুক্ত।

দ্রোহ ও প্রেমের কিংবদন্তি কবি হেলাল হাফিজ’র প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী
দ্রোহ ও প্রেমের কিংবদন্তি কবি হেলাল হাফিজ’র প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী

১৯৮৬ সালে প্রকাশিত তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ যে জলে আগুন জ্বলে’ বাংলা কবিতার ইতিহাসে এক অনন্য ঘটনা। প্রেম, দ্রোহ ও রাজনৈতিক চেতনার সম্মিলনে গ্রন্থটি পাঠকসমাজে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। এই বইটির ৩০টিরও বেশি সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছে, যা বাংলাদেশের কবিতার বইয়ের ক্ষেত্রে বিরল। ১৯৬৯ থেকে ১৯৮৫ সালের মধ্যে রচিত কবিতাগুলো আজও পাঠকের হৃদয়ে অম্লান।

দীর্ঘ বিরতির পর ২০১২ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ কবিতা একাত্তর এবং ২০১৯ সালে তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ বেদনাকে বলেছি কেঁদো না’। সংখ্যায় অল্প হলেও তাঁর কবিতার গভীরতা ও প্রভাব ছিল বিস্ময়কর।

দ্রোহ ও প্রেমের কিংবদন্তি কবি হেলাল হাফিজ’র প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী
দ্রোহ ও প্রেমের কিংবদন্তি কবি হেলাল হাফিজ’র প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী

হেলাল হাফিজ পেশাগত জীবনে দৈনিক পূর্বদেশ, দেশ ও যুগান্তর পত্রিকায় সাহিত্য সম্পাদক ও সাংবাদিক হিসেবে কাজ করেছেন। কবি ছিলেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সদস্য। কবিতায় অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৩ সালে তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন।

এছাড়া পেয়েছেন যশোর সাহিত্য পরিষদ পুরস্কার, আবুল মনসুর আহমদ সাহিত্য পুরস্কারসহ নানা সম্মাননা। ২০২৫ সালে তাঁকে মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত করা হয়।

২০২৪ সালের ১৩ ডিসেম্বর, ৭৬ বছর বয়সে ঢাকার একটি আবাসিক হোস্টেলে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। দ্রোহ ও প্রেমের এই কবি আজও বেঁচে আছেন তাঁর কবিতায়, বেঁচে আছেন প্রতিটি প্রতিবাদী উচ্চারণে। সময় বদলায়, প্রজন্ম বদলায়, কিন্তু হেলাল হাফিজ থেকে যান চিরযৌবনের কবি হয়ে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

দ্রোহ ও প্রেমের কিংবদন্তি কবি হেলাল হাফিজ’র প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী

আপডেট সময় : ০১:১০:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫

কবি হেলাল হাফিজের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। দ্রোহ, প্রেম আর প্রতিবাদের অনন্য ভাষ্যকার এই কবি বাংলা কবিতায় চিরকাল উচ্চারণযোগ্য একটি নাম। ‘এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়/ এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়’, এই দুই লাইনে তিনি হয়ে উঠেছিলেন সময়ের কণ্ঠস্বর, হয়ে উঠেছিলেন কিংবদন্তি।

১৯৪৮ সালের ৭ অক্টোবর নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার বড়তলী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন হেলাল হাফিজ। ষাটের দশকের উত্তাল রাজনৈতিক বাস্তবতায় তাঁর কবিসত্তার বিকাশ ঘটে।

১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে রচিত কবিতা ‘নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’ তাঁকে এনে দেয় তুমুল জনপ্রিয়তা ও কবিখ্যাতি। তখন তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ছাত্র। সাংবাদিকতা পেশার কারণে তিনি সময়ের আন্দোলন, সংঘাত ও স্বপ্নের সঙ্গে ছিলেন নিবিড়ভাবে যুক্ত।

দ্রোহ ও প্রেমের কিংবদন্তি কবি হেলাল হাফিজ’র প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী
দ্রোহ ও প্রেমের কিংবদন্তি কবি হেলাল হাফিজ’র প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী

১৯৮৬ সালে প্রকাশিত তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ যে জলে আগুন জ্বলে’ বাংলা কবিতার ইতিহাসে এক অনন্য ঘটনা। প্রেম, দ্রোহ ও রাজনৈতিক চেতনার সম্মিলনে গ্রন্থটি পাঠকসমাজে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। এই বইটির ৩০টিরও বেশি সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছে, যা বাংলাদেশের কবিতার বইয়ের ক্ষেত্রে বিরল। ১৯৬৯ থেকে ১৯৮৫ সালের মধ্যে রচিত কবিতাগুলো আজও পাঠকের হৃদয়ে অম্লান।

দীর্ঘ বিরতির পর ২০১২ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ কবিতা একাত্তর এবং ২০১৯ সালে তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ বেদনাকে বলেছি কেঁদো না’। সংখ্যায় অল্প হলেও তাঁর কবিতার গভীরতা ও প্রভাব ছিল বিস্ময়কর।

দ্রোহ ও প্রেমের কিংবদন্তি কবি হেলাল হাফিজ’র প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী
দ্রোহ ও প্রেমের কিংবদন্তি কবি হেলাল হাফিজ’র প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী

হেলাল হাফিজ পেশাগত জীবনে দৈনিক পূর্বদেশ, দেশ ও যুগান্তর পত্রিকায় সাহিত্য সম্পাদক ও সাংবাদিক হিসেবে কাজ করেছেন। কবি ছিলেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সদস্য। কবিতায় অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৩ সালে তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন।

এছাড়া পেয়েছেন যশোর সাহিত্য পরিষদ পুরস্কার, আবুল মনসুর আহমদ সাহিত্য পুরস্কারসহ নানা সম্মাননা। ২০২৫ সালে তাঁকে মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত করা হয়।

২০২৪ সালের ১৩ ডিসেম্বর, ৭৬ বছর বয়সে ঢাকার একটি আবাসিক হোস্টেলে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। দ্রোহ ও প্রেমের এই কবি আজও বেঁচে আছেন তাঁর কবিতায়, বেঁচে আছেন প্রতিটি প্রতিবাদী উচ্চারণে। সময় বদলায়, প্রজন্ম বদলায়, কিন্তু হেলাল হাফিজ থেকে যান চিরযৌবনের কবি হয়ে।