ঢাকায় মা-মেয়ে হত্যাকাণ্ড: নলসিটি থেকে গ্রেপ্তার গৃহকর্মী আয়েশা, চলছে টানা অভিযান
- আপডেট সময় : ০৫:৫৯:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫ ৩৮ বার পড়া হয়েছে
রাজধানীর ঢাকার মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যার ঘটনায় পলাতক গৃহকর্মী আয়েশাকে ঝালকাঠির নলসিটি থেকে অবশেষে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ-যেন নাটকীয় অনুসন্ধানের শেষ দৃশ্য। স্বামীর বাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন তিনি। সেখান থেকে তাকে নিয়ে ঝালকাঠির বিভিন্ন স্থানে টানা অভিযান চলছে। ঢাকায় পৌঁছতে রাত গড়াতে পারে বলে জানিয়েছেন মোহাম্মদপুর থানার ওসি মেজবাহ উদ্দিন।
ওসি জানান, আয়েশার স্বীকারোক্তিতে ইতিমধ্যে নগদ অর্থ ও নেয়া মূল্যবান সামগ্রী উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। এসবের সূত্রধরেই পুলিশ ঝালকাঠির বিভিন্ন বাড়ি-ঘর তল্লাশি চালাচ্ছে।
তদন্তের শুরুটা ছিল প্রায় শূন্য হাতে, না কোনো জাতীয় পরিচয়পত্র, না ফোন নম্বর, না সঠিক ঠিকানা। তেজগাঁও বিভাগের ডিসি মো. ইবনে মিজান বলেন, প্রথমে সিসিটিভির ছায়া ধরে এগিয়েছি। রিকশা থেকে নেমে যাওয়ার পর যেন অদৃশ্য হয়ে যায় সে। তবু আমরা খুঁজে গেছি।
তদন্তের থ্রিলারধর্মী যাত্রা তাদের নিয়ে যায় আশুলিয়া, সাভার, আবার বরিশালের আরেক প্রান্তে-কিন্তু মিলছিল না কোনো চিহ্ন। অবশেষে সর্বশেষ সূত্র ধরে নলসিটির নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
হত্যাকাণ্ডের পর মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় কোনো নথি ছাড়াই তাকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তার—পুলিশ এটিকে গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য বলছে। দলটি এখনো সাভার-আশুলিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
গত সোমবার শাহজাহান রোডের একটি ফ্ল্যাটে ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড ঘটে। গৃহিণী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তার কিশোরী মেয়ে নাফিসা বিনতে আজিজকে (১৫) নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায় কাজের মেয়ে আয়েশা।
সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায়, সকাল ৭টা ৫১ মিনিটে কাজে ঢোকা আয়েশা সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে মায়ের স্কুল ড্রেস পরে বাসা থেকে বেরিয়ে পড়ে-হাতে ল্যাপটপ, মোবাইল, স্বর্ণালঙ্কারসহ মূল্যবান জিনিস।
নিহত নাফিসার বাবা আ. জ. ম. আজিজুল ইসলাম মোহাম্মদপুর থানায় হত্যা মামলা করেন। তিনি জানান, সেদিন বহুবার স্ত্রীর ফোনে যোগাযোগ ব্যর্থ হওয়ার পর বাড়িতে ফিরে পান নির্মম দৃশ্য। মেয়ে নাফিসাকে দ্রুত হাসপাতালে পাঠানো হলেও চিকিৎসক আর বাঁচাতে পারেননি।
মোহাম্মদপুরের শান্ত একটি সকাল এভাবে পরিণত হয় রক্তাক্ত বিভীষিকার দিনে; আর এখন পুরো মামলাটি গড়াচ্ছে দ্রুত তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদের দিকে।



















