অর্থনীতির চালিকাশক্তি হিসেবে এসএমই খাতকে রূপান্তরের সরকারি উদ্যোগ
- আপডেট সময় : ০৫:১৮:১৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ নভেম্বর ২০২৫ ৩৯ বার পড়া হয়েছে
বিনিয়োগ সমন্বয় কমিটির টানা বৈঠকে নীতিগত সংস্কার ও বাস্তব পদক্ষেপের অগ্রগতি
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠান (এসএমই) খাতকে জাতীয় অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তিতে পরিণত করতে ধারাবাহিক পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার। এ লক্ষ্যে বিনিয়োগ সমন্বয় কমিটি সম্প্রতি টানা চারটি বৈঠক করেছে, যেখানে সরকারি ও বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। এসব বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি ও প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী। উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ. মনসুর এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সভাগুলোতে উদ্যোক্তাদের সরাসরি অংশগ্রহণের মাধ্যমে এসএমই খাতকে জাতীয় অর্থনীতির মূলধারায় অন্তর্ভুক্ত করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। ইতোমধ্যে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের পথে রয়েছে—যেমন বৈদেশিক অর্ডার থেকে প্রাপ্ত অর্থের ১০ শতাংশ ব্যাংকে জমা রাখার বাধ্যবাধকতা প্রত্যাহারের উদ্যোগ এবং এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য বছরে ন্যূনতম ৩ হাজার মার্কিন ডলারের বৈদেশিক মুদ্রা কোটা বরাদ্দের প্রস্তাব।
গত ৯ অক্টোবর বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত বৈঠকে চারটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, নতুন ফাইন্যানশিয়াল প্রোডাক্ট ডিজাইন, নীতিমালার কার্যকারিতা মূল্যায়ন, ট্রেড লাইসেন্সবিহীন উদ্যোক্তাদের ঋণ প্রদানের সম্ভাব্যতা যাচাই এবং সুদের হার পুনর্বিবেচনা।
এর আগে ২৮ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এসএমই খাতের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা হয়। পরবর্তী বৈঠকগুলোতে উদ্যোক্তাদের অভিজ্ঞতা, প্রস্তাব ও সমস্যাগুলো তুলে ধরা হয়, যা পর্যালোচনা শেষে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সংস্থাগুলোর কাছে পাঠানো হয়েছে।
বাস্তবায়নাধীন অন্যান্য উদ্যোগগুলোর মধ্যে রয়েছে, স্যাম্পল ক্লিয়ারেন্স প্রক্রিয়া সহজীকরণ, ডিজিটাল ওয়ালেট সুবিধা সম্প্রসারণ, অনলাইন বিক্রির অর্থ দ্রুত ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমার নির্দেশনা, অনলাইন রফতানিতে বি২বি ও বি২সি মডেল অন্তর্ভুক্তকরণ, সচেতনতা কার্যক্রম চালু, বৈদেশিক মুদ্রা কার্ড প্রবর্তন এবং ওপেন অ্যাকাউন্টে রফতানি অনুমোদন। এছাড়া ব্যাংক গ্যারান্টি ছাড়াই আগাম পেমেন্ট সীমা ২০ হাজার মার্কিন ডলারে উন্নীত করার সিদ্ধান্তও গৃহীত হয়েছে।
বিনিয়োগ সমন্বয় কমিটির সভাপতি লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, এসএমই খাত আমাদের অর্থনীতির প্রাণশক্তি, কিন্তু তাদের কণ্ঠ অনেক সময় শোনা যায় না। তাই এই খাতের উদ্যোক্তাদের প্রতিটি পর্যায়ে সহায়তা দিতে হবে, অর্থায়ন, পেমেন্ট ও লজিস্টিকসসহ সব ক্ষেত্রে সরকারকে সহযোগী হতে হবে, বাধা নয়।
এসএমই খাতকে গতিশীল করতে এসব সংস্কার ও বাস্তব পদক্ষেপ অর্থনীতিতে নতুন গতি সঞ্চার করবে বলে আশা প্রকাশ করেন অংশগ্রহণকারীরা।









