ঢাকা ০৫:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
শেরপুর-ময়মনসিংহ সীমান্তে বিজিবির অভিযানে বিপুল ভারতীয় মদ ও চোরাচালানী মাল জব্দ ২৬-এর ১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন পরীক্ষা বন্ধ রাখলে শিক্ষকদের শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে : শিক্ষা উপদেষ্টা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর শিক্ষায় বিজিবির মানবিক উদ্যোগ খালেদা জিয়াকে নিয়ে সরকারের  বিশেষ বৈঠকে যেসব সিদ্ধান্ত খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় যুক্তরাজ্য থেকে বিশেষজ্ঞ আসছেন: ডা. জাহিদ হোসেন সমুদ্র বিপর্যয় ঠেকাতে এখনই বাড়াতে হবে বৈশ্বিক সহযোগিতা:মৎস্য উপদেষ্টা হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি শুরু, পঞ্চদশ সংশোধনী নিয়ে আপিল বিভাগে বিতর্ক ভারতের প্রধানমন্ত্রী  নরেন্দ্র মোদিকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে বিএনপি খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি

শীতের সবজিতে ভরে উঠেছে বাজার, বৈচিত্র্য বাড়লেও দাম চড়া

আমিনুল হক ভূইয়া, ঢাকা
  • আপডেট সময় : ০৫:২৫:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫ ৯২ বার পড়া হয়েছে

শীতের সবজিতে ভরে উঠেছে বাজার, বৈচিত্র্য বাড়লেও দাম চড়া

ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

শীতের হালকা পরশে গ্রামীণ হাটবাজার ও শহরের সবজির দোকানে নতুন নতুন শীতকালীন সবজি উঠতে শুরু করেছে। ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, শিম, বেগুন, গাজর, টমেটো, লাউসহ নানা রকম সবজিতে ভরে উঠেছে বাজার। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, সবজির বৈচিত্র্য বাড়লেও দাম কমছে না বরং ক্রেতার কাঁধে চাপছে বাড়তি বোঝা। ফলে শীতের আগমন আনন্দ নয়, উদ্বেগ বাড়াচ্ছে সাধারণ ক্রেতাদের মধ্যে।

ঢাকার কারওয়ান বাজার, যাত্রাবাড়ী ও মিরপুর কৃষিপণ্যের পাইকারী বাজারে ফুলকপি ও বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়। খুচরা বাজারে প্রতিটি ফুল কপি ৫০ এবং বাঁধা কপি প্রতিটি ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।  মুলা ও শিম প্রতি কেজি ৭০ থেকে ৯০ টাকা, বেগুন ৮০ টাকা, গাজর ১০০ টাকা, আর টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। এমনকি পটল ও করলা, যেগুলো সাধারণত গ্রীষ্মে পাওয়া যায়, সেগুলোর দামও কমেনি।

শান্তি নগরের শফিক মামুন জানান, নিয়ন্ত্রণহীন বাজার। বছরের এই সময়টিতে সাধারণত সবজির দাম কিছুটা কমে যায়। কিন্তু এবার ক্ষেতের ফলন ভালো হলেও পরিবহন খরচ ও পাইকারি বাজারে সিন্ডিকেটের কারণে দাম নিয়ন্ত্রণে আসছে না। খুচরা বিক্রেতারাও বলছেন, পাইকারিতে দাম বেশি হওয়ায় তারাও কম দামে বিক্রি করতে পারছেন না। গৃহিণী  মিসেস রেজাউল বলেন, শীতের শুরুতেই বাজারে এত সবজি এসেছে দেখে ভেবেছিলাম দাম কমবে। কিন্তু আগের চেয়ে সবজির দাম আরও বেড়েছে।

শীতের সবজিতে ভরে উঠেছে বাজার, বৈচিত্র্য বাড়লেও দাম চড়া
শীতের সবজিতে ভরে উঠেছে বাজার, বৈচিত্র্য বাড়লেও দাম চড়া

প্রতিদিন বাজার করতে গিয়ে বেতন সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। অন্যদিকে কৃষকরা বলছেন, মাঠে সবজির উৎপাদন খারাপ হয়নি। নওগাঁ, যশোর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ এবং ভোলার চরাঞ্চলের কৃষকরা জানান,   প্রাথমিক পর্যায়ে উৎপাদন ভালো হলেও বাজারে পৌঁছাতে খরচ বেড়ে গেছে। ডিজেলের দাম, পরিবহন ভাড়া ও শ্রমিকের মজুরি বেড়ে যাওয়ায় তাদেরও বিক্রয়মূল্য তুলনামূলক বেশি রাখতে হচ্ছে।

সবজি ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে নতুন সবজি এলেও সরবরাহ এখনো পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। চাহিদা বেশি, কিন্তু যোগান সীমিত থাকায় দাম কিছুটা বেশি। তারা আশা করছেন, ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে মাঠে বড় আকারে ফুলকপি, বাঁধাকপি, গাজর, টমেটো ও শিম ওঠার পর দাম ধীরে ধীরে কমে আসবে। বাজার বিশ্লেষকরা মনে করেন, সবজির দামের এই অস্বাভাবিক বৃদ্ধি সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।  সরকারকে বাজার মনিটরিং ও পরিবহন খরচ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

সব মিলিয়ে, শীতের আগমনে বাজারে সবজির বাহার বাড়লেও সেই শীতলতা ছুঁয়ে যাচ্ছে না ক্রেতার পকেট। বরং গরম হয়ে উঠেছে সবজির বাজার, আর সাধারণ মানুষের মুখে এখন একটাই প্রশ্ন শীতের সবজির স্বাদ কি এবারও পেতে হবে দামে দগ্ধ হয়ে?

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

শীতের সবজিতে ভরে উঠেছে বাজার, বৈচিত্র্য বাড়লেও দাম চড়া

আপডেট সময় : ০৫:২৫:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫

শীতের হালকা পরশে গ্রামীণ হাটবাজার ও শহরের সবজির দোকানে নতুন নতুন শীতকালীন সবজি উঠতে শুরু করেছে। ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, শিম, বেগুন, গাজর, টমেটো, লাউসহ নানা রকম সবজিতে ভরে উঠেছে বাজার। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, সবজির বৈচিত্র্য বাড়লেও দাম কমছে না বরং ক্রেতার কাঁধে চাপছে বাড়তি বোঝা। ফলে শীতের আগমন আনন্দ নয়, উদ্বেগ বাড়াচ্ছে সাধারণ ক্রেতাদের মধ্যে।

ঢাকার কারওয়ান বাজার, যাত্রাবাড়ী ও মিরপুর কৃষিপণ্যের পাইকারী বাজারে ফুলকপি ও বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়। খুচরা বাজারে প্রতিটি ফুল কপি ৫০ এবং বাঁধা কপি প্রতিটি ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।  মুলা ও শিম প্রতি কেজি ৭০ থেকে ৯০ টাকা, বেগুন ৮০ টাকা, গাজর ১০০ টাকা, আর টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। এমনকি পটল ও করলা, যেগুলো সাধারণত গ্রীষ্মে পাওয়া যায়, সেগুলোর দামও কমেনি।

শান্তি নগরের শফিক মামুন জানান, নিয়ন্ত্রণহীন বাজার। বছরের এই সময়টিতে সাধারণত সবজির দাম কিছুটা কমে যায়। কিন্তু এবার ক্ষেতের ফলন ভালো হলেও পরিবহন খরচ ও পাইকারি বাজারে সিন্ডিকেটের কারণে দাম নিয়ন্ত্রণে আসছে না। খুচরা বিক্রেতারাও বলছেন, পাইকারিতে দাম বেশি হওয়ায় তারাও কম দামে বিক্রি করতে পারছেন না। গৃহিণী  মিসেস রেজাউল বলেন, শীতের শুরুতেই বাজারে এত সবজি এসেছে দেখে ভেবেছিলাম দাম কমবে। কিন্তু আগের চেয়ে সবজির দাম আরও বেড়েছে।

শীতের সবজিতে ভরে উঠেছে বাজার, বৈচিত্র্য বাড়লেও দাম চড়া
শীতের সবজিতে ভরে উঠেছে বাজার, বৈচিত্র্য বাড়লেও দাম চড়া

প্রতিদিন বাজার করতে গিয়ে বেতন সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। অন্যদিকে কৃষকরা বলছেন, মাঠে সবজির উৎপাদন খারাপ হয়নি। নওগাঁ, যশোর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ এবং ভোলার চরাঞ্চলের কৃষকরা জানান,   প্রাথমিক পর্যায়ে উৎপাদন ভালো হলেও বাজারে পৌঁছাতে খরচ বেড়ে গেছে। ডিজেলের দাম, পরিবহন ভাড়া ও শ্রমিকের মজুরি বেড়ে যাওয়ায় তাদেরও বিক্রয়মূল্য তুলনামূলক বেশি রাখতে হচ্ছে।

সবজি ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে নতুন সবজি এলেও সরবরাহ এখনো পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। চাহিদা বেশি, কিন্তু যোগান সীমিত থাকায় দাম কিছুটা বেশি। তারা আশা করছেন, ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে মাঠে বড় আকারে ফুলকপি, বাঁধাকপি, গাজর, টমেটো ও শিম ওঠার পর দাম ধীরে ধীরে কমে আসবে। বাজার বিশ্লেষকরা মনে করেন, সবজির দামের এই অস্বাভাবিক বৃদ্ধি সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।  সরকারকে বাজার মনিটরিং ও পরিবহন খরচ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

সব মিলিয়ে, শীতের আগমনে বাজারে সবজির বাহার বাড়লেও সেই শীতলতা ছুঁয়ে যাচ্ছে না ক্রেতার পকেট। বরং গরম হয়ে উঠেছে সবজির বাজার, আর সাধারণ মানুষের মুখে এখন একটাই প্রশ্ন শীতের সবজির স্বাদ কি এবারও পেতে হবে দামে দগ্ধ হয়ে?