ঢাকা ০৫:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
গণতন্ত্র রক্ষার দাবিতে আমেরিকা জুড়ে ট্রাম্পবিরোধী ‘নো কিংস’ ঝড় লিবিয়া থেকে দেশে ফিরছেন আরও ৩০০ বাংলাদেশি পাটপণ্যের পুনর্জাগরণে ১০০ কোটি টাকার ফান্ড, টেকসই উন্নয়নে নতুন দিগন্তের আহ্বান কার্গো ভিলেজে আগুনে ছাই ১২ হাজার কোটি টাকার পণ্য, পুড়েছে স্বপ্নও ১ নভেম্বর থেকে এমপিও শিক্ষকদের নতুন বাড়িভাড়া ভাতা কার্যকর ভিসতা-ডিআরইউ ক্রীড়া উৎসব পুরুষ আর্চারিতে চ্যাম্পিয়ন তামিম হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গত এক যুগের অগ্নিকাণ্ড ঢাকার প্রধান বিমানবন্দরে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ড, ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ জুলাই সনদ অনুষ্ঠান ঘিরে সংঘর্ষ-উত্তেজনা,  মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের ঘটনায় ৯০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা বিশাখাপত্তনমে খুলছে ভারতের দীর্ঘতম গ্লাস স্কাইওয়াক, আকাশ, পাহাড় আর সমুদ্র মিলবে এক সেতুবন্ধনে

ধনী দেশগুলো সব মানুষকে টিকা দিয়েছে, অনেক গরিব দেশ এখনো টিকা পায়নি

ভয়েস ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১০:০৭:১৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৯ অক্টোবর ২০২১ ২৫৪ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ধনী দেশের টিকানীতির কৌশল অনৈতিক : আন্তোনিও গুতেরেস

‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে প্রতি মাসে দেড় বিলিয়ন টিকার ডোজ তৈরি করা হচ্ছে। এই হিসাবে এক সপ্তাহের কম উৎপাদিত টিকা দিয়েই ১০ শতাংশের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছানো সম্ভব। নিম্ন আয়ের দেশগুলো ১ শতাংশের অর্ধেকের কম টিকা পেয়েছে। আফ্রিকায় মাত্র ৫ শতাংশের কম লোকের টিকার পুরো ডোজ সম্পন্ন হয়েছে। স্বাস্থ্য সংস্থা চেয়েছিল, সেপ্টেম্বরের মধ্যেই যেন প্রতিটি দেশের অন্তত ১০ শতাংশ মানুষ টিকার পূর্ণ ডোজ পায়’

করোনার টিকা নিয়ে ধনী দেশগুলো প্রতারণা করছে। ধনী দেশগুলো তাদের সব মানুষকে টিকা দিয়েছে। কিন্তু অনেক গরিব দেশ এখনো টিকাই পায়নি। এ বিষয়টি নিয়ে ধনী দেশগুলোর সমালোচনা করেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। দেশের টিকা ব্যবহারের

কৌশলকে ‘অনৈতিক’ এবং ‘মূর্খতা’ বলে উল্লেখ করে গুতেরেস বলেন, দরিদ্র দেশগুলোকে টিকা পাওয়ার সুযোগ বন্ধ করে দেওয়ায় মহামারীর বিরুদ্ধে দেশগুলোর নিজস্ব সুরক্ষা কমার ঝুঁকিতে

রয়েছে। টিকার বৈষম্য করোনা মহামারি দীর্ঘায়িত করার প্ররোচনা দিচ্ছে। এর কারণে নতুন নতুন ধরন তৈরি হচ্ছে। যেগুলো ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ছে। এ সময় তিনি মহামারিতে মৃতদের প্রতি

সমবেদনা জানান জাতিসংঘ মহাসচিব। বৃহস্পতিবারের ভার্চুয়াল এক সংবাদ সম্মেলনে যুক্ত হয়ে এসব কথা তুলে ধরেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। যেখানে যুক্ত ছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে প্রতি মাসে দেড় বিলিয়ন টিকার ডোজ তৈরি করা হচ্ছে। এই হিসাবে এক সপ্তাহের কম উৎপাদিত টিকা দিয়েই ১০ শতাংশের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছানো সম্ভব।

উল্লেখ্য, নিম্ন আয়ের দেশগুলো ১ শতাংশের অর্ধেকের কম টিকা পেয়েছে। আফ্রিকায় মাত্র ৫ শতাংশের কম লোকের টিকার পুরো ডোজ সম্পন্ন হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বরাত দিয়ে সংবাদ সংস্থা এএফপি’র খবরে বলা হয়, যেসব দেশ তাদের জনসংখ্যার ৪০ শতাংশের বেশি টিকাদান করেছে, তারা কভিড-১৯ সংকট বন্ধ করতে খুব কম

কাজ করছে। যেখানে তাদের এটা নিশ্চিত করা উচিত যেসব দেশে ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব এখনো রয়ে গিয়েছে, সেসব দেশে টিকা পৌঁছেছে কি না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চেয়েছিল, সেপ্টেম্বরের মধ্যেই

যেন প্রতিটি দেশের অন্তত ১০ শতাংশ মানুষ টিকার পূর্ণ ডোজ পায়। একই সংবাদ সম্মেলনে যুক্ত ছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চেয়েছিল, সেপ্টেম্বরের মধ্যেই যেন প্রতিটি দেশের অন্তত ১০ শতাংশ মানুষ টিকার পূর্ণ ডোজ পায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস বলেন, বিশ্বের ৫৬টি দেশে এই লক্ষ্য পূরণ করা সম্ভব হয়নি। এর জন্য অবশ্য তারা দায়ী নয়।

চলতি বছরের ২০ মার্চ সংবাদসংস্থা বিবিসি এক প্রতিবেদনে বলেছে, ধনী দেশগুলো উন্নয়নশীল দেশগুলোর টিকা তৈরির পথ রুদ্ধ করছে। বিশেষজ্ঞদের মতামত তুলে ধরে বলেন, বিশ্বব্যাপী মহামারী প্রতিরোধের জন্য ভ্যাকসিনের সরবরাহ অপরিহার্য। উন্নয়নশীল দেশগুলো যাতে তাদের

নিজেদের জন্য টিকার উৎপাদনের সক্ষমতা অর্জন করে, সেই সহায়তার প্রস্তাব আটকে দিচ্ছে যুক্তরাজ্যসহ অন্যান্য ধনী দেশ। বিবিসি নিউজনাইট অনুষ্ঠানে এ সংক্রান্ত নথি ফাঁস হয়েছে।

বেশ কয়েকটি দরিদ্র দেশ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে বলেছিল তাদের সহায়তা করতে। আন্তর্জাতিক আইনের বিধান অনুযায়ী দরিদ্র দেশগুলোকে এই সহায়তা দেয়ার কথা থাকলেও ধনী দেশগুলো

তা উপেক্ষা করছে। এমন তথ্য পাওয়া গেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি ফাঁস হওয়া অনুলিপি থেকে। এই ধনী দেশগুলির মধ্যে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো রয়েছে।

ভাষাসহ এমন আরও অনেক বিষয় রয়েছে, যার কারণে একটি দেশের পক্ষে অভ্যন্তরিণভাবে আরও বেশি টিকা এবং ওষুধ উৎপাদন করা সহজ হয়। এর মধ্যে এমন উদ্যোগও থাকবে যা

অর্থায়নের বিষয়টিকে সহজতর করবে। অন্যদিকে যুক্তরাজ্য এ ধরণের প্রগতিশীল প্রস্তাবগুলো সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেছে, জাস্ট ট্রিটমেন্টের ডায়ারমেড ম্যাকডোনাল্ড এসব কথা বলেছেন।

বিবিসি’র প্রতিবেদনটিতে আরও উল্লেখ করা হয়, যুক্তরাজ্য সরকারের একজন মুখপাত্র বলেছেন, বিশ্বব্যাপী মহামারির জন্য একটি বিশ্বব্যাপী সমাধান প্রয়োজন এবং যুক্তরাজ্য বিশ্বজুড়ে

কোভিডের টিকা এবং এ রোগের চিকিৎসা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে, সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছে। ওই মুখপাত্র বলেছেন, চলতি বছরে উন্নয়নশীল দেশগুলো যেন করোনাভাইরাসের এক কোটি ডোজ টিকা পায় তা নিশ্চিত করার জন্য যে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা চলছে, তার অন্যতম অনুদান প্রদানকারী দেশ হল যুক্তরাজ্য। এসব ওষুধের সরবরাহ সাশ্রয়ী মূল্যে নিশ্চিত করার

ক্ষেত্রে  সরকার কখন হস্তক্ষেপ করবে কিংবা হস্তক্ষেপ করবে কিনা, সেটি একটি দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা। তবে বিভিন্ন দেশের টিকা ও ওষুধ সংগ্রহের সক্ষমতার বিষয়টি মহামারির সময়ে উঠে এসেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে মৃত্যুরোধ করতে এবং মানুষের

মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে ভ্যাকসিনের ন্যায়সঙ্গত প্রবেশাধিকার অপরিহার্য। ওষুধ নীতি এবং  মেধাসত্ব আইন বিশেষজ্ঞ এলেন টি’হোয়ান বলেছেন, বিশ্বব্যাপী ওষুধ প্রস্তুত করার সক্ষমতা রয়েছে প্রয়োজনের তিনভাগের এক ভাগ। এসব টিকা ধনী দেশগুলিতে উৎপাদিত হয়

এবং সাধারণত ধনী দেশগুলোই তা সংরক্ষণ করে থাকে। উন্নয়নশীল দেশগুলি বলছে যে তারা এই সুযোগের ভাগ চান, কেবল টিকার অংশই নয়,  এই টিকাগুলো উৎপাদন করার অধিকারেরও চেয়েছেন তারা। একটি টিকা তৈরির জন্য আপনার কেবলমাত্র ওই পেটেন্ট বা সরঞ্জামের

প্রয়োজন তা নয়, আপনার এই টিকা উৎপাদনের  অধিকারও থাকতে হবে, কীভাবে এটি তৈরি করতে হয় সে সম্পর্কে আপনার জ্ঞান থাকতে হবে। কারণ টিকা উৎপাদনের প্রযুক্তি বেশ জটিল।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই পেটেন্টগুলো পাশ কাটিয়ে যাওয়ার এখতিয়ার নেই-তবে তারা টিকা সরবরাহ কিভাবে জোরদার করা যায় তা বের করতে বিভিন্ন দেশকে সমন্বিত করার চেষ্টা করছে।

আলোচনার মধ্যে রয়েছে পেটেন্ট পাওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক আইনের বিধান ব্যবহার করা এবং দেশগুলোকে তাদের প্রযুক্তিগত দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করা।

ওষুধ শিল্পগুলো বলছে, পেটেন্ট রক্ষা করা না গেলে কোভিড এবং অন্যান্য যেকোনো রোগের চিকিৎসায় ভবিষ্যতে বিনিয়োগ করার ক্ষমতা বাধার মুখে পড়বে। এই মাসের শুরুতে, যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ শিল্পের প্রতিনিধিরা তাদের উদ্বেগ জানাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে চিঠি লেখেন।

এই সুরক্ষাগুলো তুলে নিলে মহামারির বিরুদ্ধে বৈশ্বিক প্রচেষ্টা বাধাগ্রস্ত হবে, এই চিঠিতে তারা করোনাভাইরাসের, নতুন ধরণ মোকাবেলায় চলমান প্রচেষ্টার বিষয়টিও উল্লেখ করেছে।

প্রতিনিধিরা বলেছেন, এটি এমন বিভ্রান্তি সৃষ্টি করবে যা টিকার নিরাপত্তার ব্যাপারে মানুষের মধ্যে আস্থাহীনতার সৃষ্টি করবে এবং তথ্য ভাগাভাগিতে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।

 

 

 

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

ধনী দেশগুলো সব মানুষকে টিকা দিয়েছে, অনেক গরিব দেশ এখনো টিকা পায়নি

আপডেট সময় : ১০:০৭:১৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৯ অক্টোবর ২০২১

ধনী দেশের টিকানীতির কৌশল অনৈতিক : আন্তোনিও গুতেরেস

‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে প্রতি মাসে দেড় বিলিয়ন টিকার ডোজ তৈরি করা হচ্ছে। এই হিসাবে এক সপ্তাহের কম উৎপাদিত টিকা দিয়েই ১০ শতাংশের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছানো সম্ভব। নিম্ন আয়ের দেশগুলো ১ শতাংশের অর্ধেকের কম টিকা পেয়েছে। আফ্রিকায় মাত্র ৫ শতাংশের কম লোকের টিকার পুরো ডোজ সম্পন্ন হয়েছে। স্বাস্থ্য সংস্থা চেয়েছিল, সেপ্টেম্বরের মধ্যেই যেন প্রতিটি দেশের অন্তত ১০ শতাংশ মানুষ টিকার পূর্ণ ডোজ পায়’

করোনার টিকা নিয়ে ধনী দেশগুলো প্রতারণা করছে। ধনী দেশগুলো তাদের সব মানুষকে টিকা দিয়েছে। কিন্তু অনেক গরিব দেশ এখনো টিকাই পায়নি। এ বিষয়টি নিয়ে ধনী দেশগুলোর সমালোচনা করেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। দেশের টিকা ব্যবহারের

কৌশলকে ‘অনৈতিক’ এবং ‘মূর্খতা’ বলে উল্লেখ করে গুতেরেস বলেন, দরিদ্র দেশগুলোকে টিকা পাওয়ার সুযোগ বন্ধ করে দেওয়ায় মহামারীর বিরুদ্ধে দেশগুলোর নিজস্ব সুরক্ষা কমার ঝুঁকিতে

রয়েছে। টিকার বৈষম্য করোনা মহামারি দীর্ঘায়িত করার প্ররোচনা দিচ্ছে। এর কারণে নতুন নতুন ধরন তৈরি হচ্ছে। যেগুলো ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ছে। এ সময় তিনি মহামারিতে মৃতদের প্রতি

সমবেদনা জানান জাতিসংঘ মহাসচিব। বৃহস্পতিবারের ভার্চুয়াল এক সংবাদ সম্মেলনে যুক্ত হয়ে এসব কথা তুলে ধরেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। যেখানে যুক্ত ছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে প্রতি মাসে দেড় বিলিয়ন টিকার ডোজ তৈরি করা হচ্ছে। এই হিসাবে এক সপ্তাহের কম উৎপাদিত টিকা দিয়েই ১০ শতাংশের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছানো সম্ভব।

উল্লেখ্য, নিম্ন আয়ের দেশগুলো ১ শতাংশের অর্ধেকের কম টিকা পেয়েছে। আফ্রিকায় মাত্র ৫ শতাংশের কম লোকের টিকার পুরো ডোজ সম্পন্ন হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বরাত দিয়ে সংবাদ সংস্থা এএফপি’র খবরে বলা হয়, যেসব দেশ তাদের জনসংখ্যার ৪০ শতাংশের বেশি টিকাদান করেছে, তারা কভিড-১৯ সংকট বন্ধ করতে খুব কম

কাজ করছে। যেখানে তাদের এটা নিশ্চিত করা উচিত যেসব দেশে ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব এখনো রয়ে গিয়েছে, সেসব দেশে টিকা পৌঁছেছে কি না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চেয়েছিল, সেপ্টেম্বরের মধ্যেই

যেন প্রতিটি দেশের অন্তত ১০ শতাংশ মানুষ টিকার পূর্ণ ডোজ পায়। একই সংবাদ সম্মেলনে যুক্ত ছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চেয়েছিল, সেপ্টেম্বরের মধ্যেই যেন প্রতিটি দেশের অন্তত ১০ শতাংশ মানুষ টিকার পূর্ণ ডোজ পায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস বলেন, বিশ্বের ৫৬টি দেশে এই লক্ষ্য পূরণ করা সম্ভব হয়নি। এর জন্য অবশ্য তারা দায়ী নয়।

চলতি বছরের ২০ মার্চ সংবাদসংস্থা বিবিসি এক প্রতিবেদনে বলেছে, ধনী দেশগুলো উন্নয়নশীল দেশগুলোর টিকা তৈরির পথ রুদ্ধ করছে। বিশেষজ্ঞদের মতামত তুলে ধরে বলেন, বিশ্বব্যাপী মহামারী প্রতিরোধের জন্য ভ্যাকসিনের সরবরাহ অপরিহার্য। উন্নয়নশীল দেশগুলো যাতে তাদের

নিজেদের জন্য টিকার উৎপাদনের সক্ষমতা অর্জন করে, সেই সহায়তার প্রস্তাব আটকে দিচ্ছে যুক্তরাজ্যসহ অন্যান্য ধনী দেশ। বিবিসি নিউজনাইট অনুষ্ঠানে এ সংক্রান্ত নথি ফাঁস হয়েছে।

বেশ কয়েকটি দরিদ্র দেশ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে বলেছিল তাদের সহায়তা করতে। আন্তর্জাতিক আইনের বিধান অনুযায়ী দরিদ্র দেশগুলোকে এই সহায়তা দেয়ার কথা থাকলেও ধনী দেশগুলো

তা উপেক্ষা করছে। এমন তথ্য পাওয়া গেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি ফাঁস হওয়া অনুলিপি থেকে। এই ধনী দেশগুলির মধ্যে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো রয়েছে।

ভাষাসহ এমন আরও অনেক বিষয় রয়েছে, যার কারণে একটি দেশের পক্ষে অভ্যন্তরিণভাবে আরও বেশি টিকা এবং ওষুধ উৎপাদন করা সহজ হয়। এর মধ্যে এমন উদ্যোগও থাকবে যা

অর্থায়নের বিষয়টিকে সহজতর করবে। অন্যদিকে যুক্তরাজ্য এ ধরণের প্রগতিশীল প্রস্তাবগুলো সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেছে, জাস্ট ট্রিটমেন্টের ডায়ারমেড ম্যাকডোনাল্ড এসব কথা বলেছেন।

বিবিসি’র প্রতিবেদনটিতে আরও উল্লেখ করা হয়, যুক্তরাজ্য সরকারের একজন মুখপাত্র বলেছেন, বিশ্বব্যাপী মহামারির জন্য একটি বিশ্বব্যাপী সমাধান প্রয়োজন এবং যুক্তরাজ্য বিশ্বজুড়ে

কোভিডের টিকা এবং এ রোগের চিকিৎসা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে, সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছে। ওই মুখপাত্র বলেছেন, চলতি বছরে উন্নয়নশীল দেশগুলো যেন করোনাভাইরাসের এক কোটি ডোজ টিকা পায় তা নিশ্চিত করার জন্য যে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা চলছে, তার অন্যতম অনুদান প্রদানকারী দেশ হল যুক্তরাজ্য। এসব ওষুধের সরবরাহ সাশ্রয়ী মূল্যে নিশ্চিত করার

ক্ষেত্রে  সরকার কখন হস্তক্ষেপ করবে কিংবা হস্তক্ষেপ করবে কিনা, সেটি একটি দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা। তবে বিভিন্ন দেশের টিকা ও ওষুধ সংগ্রহের সক্ষমতার বিষয়টি মহামারির সময়ে উঠে এসেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে মৃত্যুরোধ করতে এবং মানুষের

মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে ভ্যাকসিনের ন্যায়সঙ্গত প্রবেশাধিকার অপরিহার্য। ওষুধ নীতি এবং  মেধাসত্ব আইন বিশেষজ্ঞ এলেন টি’হোয়ান বলেছেন, বিশ্বব্যাপী ওষুধ প্রস্তুত করার সক্ষমতা রয়েছে প্রয়োজনের তিনভাগের এক ভাগ। এসব টিকা ধনী দেশগুলিতে উৎপাদিত হয়

এবং সাধারণত ধনী দেশগুলোই তা সংরক্ষণ করে থাকে। উন্নয়নশীল দেশগুলি বলছে যে তারা এই সুযোগের ভাগ চান, কেবল টিকার অংশই নয়,  এই টিকাগুলো উৎপাদন করার অধিকারেরও চেয়েছেন তারা। একটি টিকা তৈরির জন্য আপনার কেবলমাত্র ওই পেটেন্ট বা সরঞ্জামের

প্রয়োজন তা নয়, আপনার এই টিকা উৎপাদনের  অধিকারও থাকতে হবে, কীভাবে এটি তৈরি করতে হয় সে সম্পর্কে আপনার জ্ঞান থাকতে হবে। কারণ টিকা উৎপাদনের প্রযুক্তি বেশ জটিল।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই পেটেন্টগুলো পাশ কাটিয়ে যাওয়ার এখতিয়ার নেই-তবে তারা টিকা সরবরাহ কিভাবে জোরদার করা যায় তা বের করতে বিভিন্ন দেশকে সমন্বিত করার চেষ্টা করছে।

আলোচনার মধ্যে রয়েছে পেটেন্ট পাওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক আইনের বিধান ব্যবহার করা এবং দেশগুলোকে তাদের প্রযুক্তিগত দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করা।

ওষুধ শিল্পগুলো বলছে, পেটেন্ট রক্ষা করা না গেলে কোভিড এবং অন্যান্য যেকোনো রোগের চিকিৎসায় ভবিষ্যতে বিনিয়োগ করার ক্ষমতা বাধার মুখে পড়বে। এই মাসের শুরুতে, যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ শিল্পের প্রতিনিধিরা তাদের উদ্বেগ জানাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে চিঠি লেখেন।

এই সুরক্ষাগুলো তুলে নিলে মহামারির বিরুদ্ধে বৈশ্বিক প্রচেষ্টা বাধাগ্রস্ত হবে, এই চিঠিতে তারা করোনাভাইরাসের, নতুন ধরণ মোকাবেলায় চলমান প্রচেষ্টার বিষয়টিও উল্লেখ করেছে।

প্রতিনিধিরা বলেছেন, এটি এমন বিভ্রান্তি সৃষ্টি করবে যা টিকার নিরাপত্তার ব্যাপারে মানুষের মধ্যে আস্থাহীনতার সৃষ্টি করবে এবং তথ্য ভাগাভাগিতে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।