ঢাকা ০৫:০০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
মেঘনা পারে উৎসবের আমেজ: মধ্য রাতে নদীতে নামেন উপকূলের জেলেরা চিড়িয়াখানার প্রাণিদের যথাযথ সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে : প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা গাজা উপত্যকায় শিশুদের মধ্যে অপুষ্টির হার ভয়ঙ্কর রূপ নিচ্ছে জীবিত মানুষের কবরস্থান : বিধ্বস্ত গাজায় বেঁচে থাকার লড়াই বিশ্বের সবচেয়ে বড় মার্কিন রণতরী জেরাল্ড  আর ফোর্ড ক্যারিবিয়ানে ৫১তম অঙ্গরাজ্যের বিতর্কে ফের আমেরিকা–ইসরায়েল সম্পর্ক পক্ষপাতদুষ্ট চিন্তা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে অভ্যস্ত নই : জ্বালানি উপদেষ্টা মুম্বাইয়ে ট্রান্সজেন্ডার ধৃত নারী,  অভিযুক্ত মানবপাচার-জাল নথি তৈরি ভারতের অন্ধ্র প্রদেশে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় ২৫ জনের প্রাণহানি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ নেই আওয়ামী লীগের: প্রেসসচিব

জীবিত মানুষের কবরস্থান : বিধ্বস্ত গাজায় বেঁচে থাকার লড়াই

ভয়েস ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০১:৪১:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫ ৩৩ বার পড়া হয়েছে

মলিন বিছানার ওপর মা শুইয়ে দিলেন তার শিশুকে, যেন জীবিতই কবর দিলেন আশ্রয়ের আশায় : সংগ্রহ

ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

মানবতার আর্তনাদ শুনছে না সভ্য পৃথিবী

একবিংশ শতাব্দীর পৃথিবীতে, গাজার মানুষ আজ শুধু জীবনের জন্য নয়, মানবতার অস্তিত্বের জন্য লড়ছে

গাজার বর্তমান পরিস্থিতি মানবতার সীমা অতিক্রম করেছে

দৃশ্য-১ : চারপাশে ধসে পড়া ভবনের ধ্বংসস্তূপ। এক ব্যক্তি দৌড়াচ্ছেন কোলে নিথর শিশুকে নিয়ে, তার চোখ বন্ধ, মুখে ধুলা জমে আছে। পেছনে এক কিশোর শঙ্কিত চোখে তাকিয়ে ছুটছে। যেন মৃত্যুর রাজ্যে একটু জীবনের সন্ধান।

দৃশ্য-২: বিশাল কবরস্থান, চারপাশে সারি সারি কবর আর স্মৃতিস্তম্ভ। এক মলিন বিছানার ওপর মা শুইয়ে দিলেন তার শিশুকে, যেন জীবিতই কবর দিলেন আশ্রয়ের আশায়।

ইসরায়েলি অব্যাহত হামলায় গাজা এখন ভগ্নস্তূপে পরিণত। জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সংস্থা (ওসিএইচএ) জানিয়েছে, গাজার ৮০ শতাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলো উপচে পড়ায় অনেকে বাধ্য হচ্ছেন কবরস্থান, ধসে পড়া ভবন ও ভাঙা টানেলে আশ্রয় নিতে।

জীবিত মানুষের কবরস্থান : বিধ্বস্ত গাজায় বেঁচে থাকার লড়াই
এক ব্যক্তি দৌড়াচ্ছেন কোলে নিথর শিশুকে নিয়ে, তার চোখ বন্ধ, মুখে ধুলা জমে আছে। পেছনে এক কিশোর শঙ্কিত চোখে তাকিয়ে ছুটছে : ছবি সংগ্রহ

স্থানীয়রা এসব ভূগর্ভস্থ অন্ধকার আশ্রয়কে বলছে জিন্দা কবর, জীবিত মানুষের কবরস্থান। সেখানে নেই আলো, নেই বিশুদ্ধ বাতাস বা খাবার-পানি। শিশু ও বয়স্করা শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হচ্ছেন, অনেকেই প্রাণ হারাচ্ছেন অক্সিজেনের অভাবে।

এক ফিলিস্তিনি নারী কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমরা এখন কবরের নিচে বাঁচি, যেন মৃত্যুর অপেক্ষায় আছি। এই একবিংশ শতাব্দীর পৃথিবীতে, গাজার মানুষ আজ শুধু জীবনের জন্য নয়, মানবতার অস্তিত্বের জন্য লড়ছে।

 এমনি ভাবেই দিনে দিনে মানুষ হত্যার সংখ্যা বাড়ছে।  সভ্য পৃথিবীর চোখের সামনে নির্বিচার এই হত্যাকান্ড।

গাজার উত্তরাঞ্চলের সাংবাদিক সূত্রে জানা গেছে, বেইত লাহিয়া ও খান ইউনিস এলাকায় বোমাবর্ষণের পর অনেক পরিবার গর্ত ও ভগ্ন দেয়ালের নিচে অস্থায়ী আশ্রয় তৈরি করেছে। সেখানে বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা নেই, খাবার ও পানির ঘাটতি প্রকট। তবু তারা বলছেন, উপরে থাকলে মরব, নিচে থাকলে হয়তো বাঁচব।

জীবিত মানুষের কবরস্থান : বিধ্বস্ত গাজায় বেঁচে থাকার লড়াই
বিধ্বস্ত গাজায় বেঁচে থাকার লড়াই

এক নারী বলেছেন, আমরা এখন কবরের নিচে বাঁচি, যেন মৃত্যুর অপেক্ষায় আছি। শিশুদের অনেকেই দিনের পর দিন সূর্যের আলো দেখছে না। চিকিৎসা বা খাদ্য পৌঁছানোও প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বলছে, গাজার বর্তমান পরিস্থিতি মানবতার সীমা অতিক্রম করেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে তারা তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি ও মানবিক করিডর খোলার আহ্বান জানিয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, জিন্দা কবর এখন শুধু আশ্রয়ের জায়গা নয়, এটি গাজার মানুষের বেঁচে থাকার প্রতীক হয়ে উঠেছে, যেখানে জীবন আর মৃত্যুর সীমারেখা প্রতিদিন ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে।

এমন ভয়াবহ বাস্তবতায় গাজা আজ সত্যিই পরিণত হয়েছে জীবিতদের কবরখানায়।

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ২০ লাখের বেশি ফিলিস্তিনির বসবাস। কর্তৃপক্ষ বলছে, আগামী ৩০ বছরের মধ্যে এ সংখ্যা হবে দ্বিগুণ। অথচ গাজা শহরে নতুন করে বসতি গড়ার মতো আর কোনো জমি নেই। ফলে বাড়ছে গৃহহীনের সংখ্যা। অন্যদিকে সংকট দেখা দিয়েছে সমাধিক্ষেত্রেরও।

 

 

 

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

জীবিত মানুষের কবরস্থান : বিধ্বস্ত গাজায় বেঁচে থাকার লড়াই

আপডেট সময় : ০১:৪১:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫

মানবতার আর্তনাদ শুনছে না সভ্য পৃথিবী

একবিংশ শতাব্দীর পৃথিবীতে, গাজার মানুষ আজ শুধু জীবনের জন্য নয়, মানবতার অস্তিত্বের জন্য লড়ছে

গাজার বর্তমান পরিস্থিতি মানবতার সীমা অতিক্রম করেছে

দৃশ্য-১ : চারপাশে ধসে পড়া ভবনের ধ্বংসস্তূপ। এক ব্যক্তি দৌড়াচ্ছেন কোলে নিথর শিশুকে নিয়ে, তার চোখ বন্ধ, মুখে ধুলা জমে আছে। পেছনে এক কিশোর শঙ্কিত চোখে তাকিয়ে ছুটছে। যেন মৃত্যুর রাজ্যে একটু জীবনের সন্ধান।

দৃশ্য-২: বিশাল কবরস্থান, চারপাশে সারি সারি কবর আর স্মৃতিস্তম্ভ। এক মলিন বিছানার ওপর মা শুইয়ে দিলেন তার শিশুকে, যেন জীবিতই কবর দিলেন আশ্রয়ের আশায়।

ইসরায়েলি অব্যাহত হামলায় গাজা এখন ভগ্নস্তূপে পরিণত। জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সংস্থা (ওসিএইচএ) জানিয়েছে, গাজার ৮০ শতাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলো উপচে পড়ায় অনেকে বাধ্য হচ্ছেন কবরস্থান, ধসে পড়া ভবন ও ভাঙা টানেলে আশ্রয় নিতে।

জীবিত মানুষের কবরস্থান : বিধ্বস্ত গাজায় বেঁচে থাকার লড়াই
এক ব্যক্তি দৌড়াচ্ছেন কোলে নিথর শিশুকে নিয়ে, তার চোখ বন্ধ, মুখে ধুলা জমে আছে। পেছনে এক কিশোর শঙ্কিত চোখে তাকিয়ে ছুটছে : ছবি সংগ্রহ

স্থানীয়রা এসব ভূগর্ভস্থ অন্ধকার আশ্রয়কে বলছে জিন্দা কবর, জীবিত মানুষের কবরস্থান। সেখানে নেই আলো, নেই বিশুদ্ধ বাতাস বা খাবার-পানি। শিশু ও বয়স্করা শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হচ্ছেন, অনেকেই প্রাণ হারাচ্ছেন অক্সিজেনের অভাবে।

এক ফিলিস্তিনি নারী কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমরা এখন কবরের নিচে বাঁচি, যেন মৃত্যুর অপেক্ষায় আছি। এই একবিংশ শতাব্দীর পৃথিবীতে, গাজার মানুষ আজ শুধু জীবনের জন্য নয়, মানবতার অস্তিত্বের জন্য লড়ছে।

 এমনি ভাবেই দিনে দিনে মানুষ হত্যার সংখ্যা বাড়ছে।  সভ্য পৃথিবীর চোখের সামনে নির্বিচার এই হত্যাকান্ড।

গাজার উত্তরাঞ্চলের সাংবাদিক সূত্রে জানা গেছে, বেইত লাহিয়া ও খান ইউনিস এলাকায় বোমাবর্ষণের পর অনেক পরিবার গর্ত ও ভগ্ন দেয়ালের নিচে অস্থায়ী আশ্রয় তৈরি করেছে। সেখানে বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা নেই, খাবার ও পানির ঘাটতি প্রকট। তবু তারা বলছেন, উপরে থাকলে মরব, নিচে থাকলে হয়তো বাঁচব।

জীবিত মানুষের কবরস্থান : বিধ্বস্ত গাজায় বেঁচে থাকার লড়াই
বিধ্বস্ত গাজায় বেঁচে থাকার লড়াই

এক নারী বলেছেন, আমরা এখন কবরের নিচে বাঁচি, যেন মৃত্যুর অপেক্ষায় আছি। শিশুদের অনেকেই দিনের পর দিন সূর্যের আলো দেখছে না। চিকিৎসা বা খাদ্য পৌঁছানোও প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বলছে, গাজার বর্তমান পরিস্থিতি মানবতার সীমা অতিক্রম করেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে তারা তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি ও মানবিক করিডর খোলার আহ্বান জানিয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, জিন্দা কবর এখন শুধু আশ্রয়ের জায়গা নয়, এটি গাজার মানুষের বেঁচে থাকার প্রতীক হয়ে উঠেছে, যেখানে জীবন আর মৃত্যুর সীমারেখা প্রতিদিন ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে।

এমন ভয়াবহ বাস্তবতায় গাজা আজ সত্যিই পরিণত হয়েছে জীবিতদের কবরখানায়।

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ২০ লাখের বেশি ফিলিস্তিনির বসবাস। কর্তৃপক্ষ বলছে, আগামী ৩০ বছরের মধ্যে এ সংখ্যা হবে দ্বিগুণ। অথচ গাজা শহরে নতুন করে বসতি গড়ার মতো আর কোনো জমি নেই। ফলে বাড়ছে গৃহহীনের সংখ্যা। অন্যদিকে সংকট দেখা দিয়েছে সমাধিক্ষেত্রেরও।