‘We Want Justice and Go Home’ : নিজদেশ মিয়ানমারে ফিরে যেতে রোহিঙ্গাদের সমাবেশ

- আপডেট সময় : ০৯:৩০:৫৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ জুন ২০২৩ ২১৩ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস ডিজিটাল ডেস্ক
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নির্যাতন ও গণহত্যার শিকার হয়ে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের কক্সবাজারের টেকনাফ ও উভিয়ার বিভিন্ন শিবিরে আশ্রয় নেয়। বর্তমানে প্রায় ১১ লাখের অধিক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী সেখানের ৩৪টি শিবিরে রয়েছেন। বাংলাদেশ সরকার এসব রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দেওয়ায় গোটা বিশ্বের প্রশংসা কুড়িয়েছে।
আশ্রিত রোহিঙ্গারা নিজেদের গণহত্যার বিচার ও দ্রুত মিয়ানমারে ফেরার দাবিতে বৃহস্পতিবার কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ২৩টি ক্যাম্পে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে। রোহিঙ্গা কমিউনিটির নেতারা এসময় বক্তব্য দেন। সেখানে তারা মিয়ানমারে ফিরে যেতে বিশ্বনেতারা দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে নিরাপদ আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশ সরকার ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান। এসময় রোহিঙ্গা নেতারা সরকার ও জনগণের মন খারাপ হয়, এমন কোনো কাজ করা থেকে রোহিঙ্গাদের বিরত থাকার আহ্বান জানান। অনেকে মাদকসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হয়ে পুরো আশ্রিত রোহিঙ্গা জাতিকে লজ্জায় ফেলেছেন বলেও রোহিঙ্গা নেতারা উল্লেখ করেন।

মধুরছরা ক্যাম্পের রোহিঙ্গা সালামত খান বলেন, আমরা মিয়ানমারের অবর্ণনীয় নিপীড়নের শিকার হয়েছি। নারীদের ধর্ষণ, শিশুদের হত্যা করে আগুনে নিক্ষেপ, অন্তঃসত্ত্বার পেট কেটে মা-বাচ্চা দুজনকেই হত্যার মতো বর্বরতা পৃথিবীর আর কোথাও ঘটেছে কি না জানি না। প্রাণ বাঁচাতে অন্যায়ভাবে সীমান্ত অতিক্রম করলেও বাংলাদেশ সরকার আমাদের আশ্রয় দিয়েছে। এখানে থেকে যাওয়া সম্ভব নয়, তাই মর্যাদায় বার্মায় (মিয়ানমার) ফিরতে চাই। বিশ্বনেতাদের প্রতি অনুরোধ, নাগরিকত্বসহ সম্মানজনক প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করুন।
টেকনাফ ক্যাম্পের রোহিঙ্গা নেতা ও হেড মাঝি বজলোর রহমান বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্র এবং নাগরিকত্ব অধিকার, বসবাসের বাড়ি ও জমি, সম্পত্তি ফেরত, জীবিকা ও চলাচলের অধিকার, নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ চারটি দাবি বাস্তবায়নে লক্ষ্যে ক্যাম্পের ভেতর মানববন্ধন ও র্যালি করেছি। আমরা চাই কোনো ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে যেন প্রত্যাবাসন কার্যক্রম বন্ধ না হয়। আমরা নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরতে চাই।
রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তায় দায়িত্বে রয়েছে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন বাংলাদেশ (এপিবিএন) একজন উপঅধিনায়ক (পুলিশ সুপার) জামাল পাশা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, উখিয়া-টেকনাফের ২৩টি ক্যাম্পের রোহিঙ্গারা ১৩টি পৃথক স্থানে স্বদেশে ফেরার আকুতি জানিয়ে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে। সেখানে বক্তব্য দিতে গিয়ে পুরোনো স্মৃতিচারণকালে অনেক রোহিঙ্গা কান্নায় ভেঙে পড়েন। সবার এক বাক্যে দাবি, গণহত্যার বিচার ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসন।

তীব্র তাপদাহ উপেক্ষা করে ‘গো ব্যাক হোম’ প্রতিপাদ্যে মানববন্ধনে নানা দাবি নিয়ে বক্তব্য রাখেন রোহিঙ্গা কমিউনিটি নেতারা। এসময় রোহিঙ্গারা ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস অ্যান্ড গো হোম’ দাবি জানায়।
দ্রুত প্রত্যাবাসন ও নিপীড়নের বিচার নিশ্চিত করার দাবিতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে মানববন্ধনে জড়ো হোন হাজারো রোহিঙ্গা। মানববন্ধন ধীরে ধীরে সমাবেশে রূপ নেয়। সমাবেশে ২০১৭ সালে তাদের ওপর ঘটে যাওয়া হত্যা, ধর্ষণসহ নিপীড়নের সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন। পূর্ণ মর্যাদা নিয়ে দ্রুত প্রত্যাবাসন কামনা করেন তারা।
এদিকে, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে নেওয়া প্রকল্প বাতিল করতে বলেছে জাতিসংঘ। আজ এক বিবৃতিতে এ কথা জানায় তারা। তাদের দাবি, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরানোর মতো পরিবেশ এখনো তৈরি হয়নি। মিয়ানমারে গেলে রোহিঙ্গারা ঝুঁকিতে পড়বেন।