শিশুদের হাতে মোবাইল না দিতে আহ্বান বাসস চেয়ারম্যানের
- আপডেট সময় : ০৮:২৮:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫ ৫৭ বার পড়া হয়েছে
আবৃত্তি গ বিভাগে প্রথম পঙ্ক্তির হাতে পুরষ্কা তুলে দিচ্ছেন, অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বাসস চেয়ারম্যান আনোয়ার আলদীন
ডিআরইউ শিশু-কিশোর সাংস্কৃতিক উৎসবে শিশুদের সৃজনশীল বিকাশে সাংস্কৃতিক চর্চার ওপর জোর
যেন সত্যিই প্রমাণিত হয়, মোবাইল নয়, সাংস্কৃতিক চর্চাই শিশুদের প্রকৃত আনন্দ ও বিকাশের উৎস
আমিনুল হক ভূইয়া, ঢাকা
শিশুদের হাতে মোবাইল ফোন তুলে দেওয়া তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে উল্লেখ করে অভিভাবকদের প্রতি সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) চেয়ারম্যান আনোয়ার আলদীন। তিনি বলেন, ১৪-১৫ বছর বয়সের আগে শিশুদের হাতে স্মার্টফোন দেওয়া উচিত নয়, আর ১৩ বছর বয়সের আগে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার একেবারেই অনুচিত।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) শফিকুল কবির মিলনায়তনে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত শিশু-কিশোর সাংস্কৃতিক উৎসবের পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই আহ্বান আনোয়ার আলদীন।
বাসস চেয়ারম্যান বলেন, অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার শিশুর মনোযোগ কমিয়ে দেয়, ঘুমের সমস্যা তৈরি করে এবং সামাজিক বিচ্ছিন্নতা বাড়ায়। এতে শিশুরা সৃষ্টিশীলতা হারাচ্ছে, মেধাহীন হয়ে পড়ছে। তিনি আরও বলেন, শিশুদের হাতে মোবাইল না দিয়ে তাদের চিত্রাঙ্কন, গান, আবৃত্তির মতো সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে উৎসাহিত করলে তারা মেধাবী ও আত্মপ্রত্যয়ী হয়ে উঠবে।
ডিআরইউ সভাপতি আবু সালেহ আকনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সহ-সভাপতি গাজী আনোয়ার হোসেন ও সাবেক সভাপতি মুরসালিন নোমানী।

সাংস্কৃতিক সম্পাদক মো. এমদাদুল হক খানের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল হাই তুহিন, দপ্তর সম্পাদক রফিক রাফি, নারী বিষয়ক সম্পাদক রোজিনা রোজী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মিজান চৌধুরী, ক্রীড়া সম্পাদক মো. মজিবুর রহমান, আপ্যায়ন সম্পাদক মোহাম্মদ ছলিম উল্লাহ (মেজবাহ), কার্যনির্বাহী সদস্য জুনায়েদ হোসাইন (জুনায়েদ শিশির), আকতারুজ্জামান, আমিনুল হক ভূইয়া ও মো. সলিম উল্লাহ (এস.ইউ সেলিম) প্রমুখ।
প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ডিআরইউ শিশু-কিশোর সাংস্কৃতিক উৎসবটি অনুষ্ঠিত হয় উৎসবমুখর পরিবেশে। সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়ে দিনব্যাপী এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় ডিআরইউ সদস্যদের শতাধিক সন্তান। চিত্রাঙ্কন, সঙ্গীত ও আবৃত্তি এই তিন বিভাগে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতায় ক, খ ও গ গ্রুপে মোট ২৭ জন বিজয়ীকে পুরস্কৃত করা হয়।

চিত্রাঙ্কন বিভাগে বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ইত্তেফাকের সিনিয়র আর্টিস্ট অভিজিৎ চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সহকারী অধ্যাপক কামাল উদ্দিন ও চিত্রশিল্পী শায়লা আক্তার। সঙ্গীত বিভাগের বিচারক ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহযোগী অধ্যাপক ড. অণিমা রায় এবং কণ্ঠশিল্পী ও সঙ্গীত পরিচালক আলম মাহমুদ। আবৃত্তি বিভাগের বিচারক ছিলেন বাচিক শিল্পী রেজিনা ওয়ালী লীনা, ফয়জুল আলম পাপ্পু ও শিশু একাডেমির প্রশিক্ষক রূপশ্রী চক্রবর্তী।
অনুষ্ঠান শেষে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অতিথিরা। উৎসব শেষে শিশুদের প্রাণোচ্ছল উপস্থিতিতে মিলনায়তন মুখর হয়ে ওঠে করতালি ও হাসির উচ্ছ্বাসে-যেন সত্যিই প্রমাণিত হয়, মোবাইল নয়, সাংস্কৃতিক চর্চাই শিশুদের প্রকৃত আনন্দ ও বিকাশের উৎস।

তৃতীয় মারজুকা জয়নবের হাতে পুরষ্কার তুলে দিচ্ছেন, অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাসস চেয়ারম্যান আনোয়ার আলদীন
প্রতিযোগিতায় বিজয়ীরা হলো, চিত্রাঙ্কন ক বিভাগে প্রথম হোসেন রিজভান রাউসিফ, দ্বিতীয় আরাবি আল আবিদ, তৃতীয় ফাতেমা তাছনিম, খ বিভাগে প্রথম হয়েছে হোসেন রাজভীন রাউনাফ, দ্বিতীয় মেহজুবা ইবনাত সিমলা, তৃতীয় সানদিহা জাহান দিবা, গ বিভাগে প্রথম হয়েছে জাওয়াদ খান, দ্বিতীয় মারজুকা জয়নব, তৃতীয় অদ্বিতীয়া পূণ্য।
সঙ্গীত ক বিভাগে প্রথম হয়েছে, মুয়ান্তিরা রহমান সানাইয়া, দ্বিতীয় জাওয়াদ ইনাম সানান, তৃতীয় অরুন্ধতী কর গল্প, খ বিভাগে প্রথম তাসনুভা মাহরিন তানিশা, দ্বিতীয় আরাত্রিকা দাস বৃদ্ধি, তৃতীয় ওয়াজিহা মাহবুব শাইরা, গ বিভাগে প্রথম জেরিন ফেরদৌস পঙক্তি, দ্বিতীয় রাদিতা জাহান নুভা, তৃতীয় মাকসুদা রুকাইয়া।
আবৃত্তি ক বিভাগে প্রথম অরুন্ধতী কর গল্প, দ্বিতীয় তাহসিন হক আনিকা, তৃতীয় সুহায়লা জাইমা। খ বিভাগে প্রথম সানদিয়া জাহান দিবা, হোসেন রাজভীন রাউনাফ, আইনুন নাহার আকসা। গ বিভাগে প্রথম জেরিন ফেরদৌস পঙক্তি, দ্বিতীয় আনান মুস্তাফিজ, তৃতীয় মারজুকা জয়নব।








