মুম্বাইয়ে ট্রান্সজেন্ডার ধৃত নারী, অভিযুক্ত মানবপাচার-জাল নথি তৈরি
- আপডেট সময় : ০৪:৪৯:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫ ২১ বার পড়া হয়েছে
ভারতের মুম্বাইয়ে কথিত বাংলাদেশি সন্দেহে বাবু অয়ন খান ওরফে গুরু মা নামে পরিচিত এক ট্রান্সজেন্ডার নারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত ১৭ অক্টোবর গোভান্দি এলাকার রফিক নগর থেকে তাকে আটক করা হয়। অভিযোগ, তিনি বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করে ভুয়া আধার কার্ড, প্যান কার্ডসহ একাধিক সরকারি নথি তৈরি করে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বসবাস করছিলেন।
মুম্বাই পুলিশের দাবি, গুরু মা নামে পরিচিত এই নারী মুম্বাই শহরের বিভিন্ন এলাকায় ট্রান্সজেন্ডার সম্প্রদায়ের বড় একটি নেটওয়ার্ক পরিচালনা করতেন। পুলিশ কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী, রফিক নগর, গোভান্দি ও দেওনারসহ বিভিন্ন এলাকায় তার ২০টিরও বেশি সম্পত্তি রয়েছে। তার অধীনে প্রায় ২০০ জনেরও বেশি ট্রান্সজেন্ডার সম্প্রদায়ের সদস্য কাজ করতেন এবং প্রতিদিন তাদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করা হতো বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শিবাজিনগর থানার সিনিয়র পুলিশ ইন্সপেক্টর অনঘা সাতভসে জানান, বাবু অয়ন খান ওরফে গুরু মাকে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। মামলার তদন্ত চলছে এবং সংশ্লিষ্ট চক্রের অন্যান্য সদস্যদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।
মুম্বাই পুলিশের অভিযোগ, নিজেকে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে দেখাতে গুরু মা ভুয়া জন্মসনদ, আধার কার্ড ও প্যান কার্ড তৈরি করেছিলেন। তদন্তে এসব নথিতে অসঙ্গতি ধরা পড়ে। পুলিশের ধারণা, এই জাল নথি তৈরির মাধ্যমে আরও অনেক বাংলাদেশি ট্রান্সজেন্ডারকে ভারতে অবৈধভাবে থাকতে সাহায্য করেছেন তিনি।
বিবিসি জানায়, এর আগে গুরু মার বিরুদ্ধে মানবপাচার ও প্রতারণাসহ একাধিক মামলা দায়ের হয়েছিল। কৃষ্ণা আদেলকার নামে এক সমাজকর্মীর অভিযোগের ভিত্তিতেই সম্প্রতি নতুন করে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। তার দাবি, মুম্বাইয়ে অবৈধভাবে বসবাসকারী বাংলাদেশি ট্রান্সজেন্ডারদের একটি বড় চক্র রয়েছে, যারা কিন্নর মা নামের সংগঠনের মাধ্যমে আশ্রয় ও জাল নথি পেয়ে থাকে।
এই অভিযোগের পর কিন্নর মা সংগঠনের ১২ সদস্য ভিখরোলি এলাকায় গণআত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, বর্তমানে তারা স্থিতিশীল আছেন। সংগঠনের সদস্যরা কৃষ্ণা আদেলকারের বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগ এনে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
অন্যদিকে, ট্রান্সজেন্ডার সম্প্রদায়ের কয়েকজন সদস্য সংবাদমাধ্যমকে জানান, গুরু মার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও বিদ্বেষমূলক। তারা বলেন, কৃষ্ণা আদেলকার ইচ্ছাকৃতভাবে আমাদের কমিউনিটিকে কলঙ্কিত করছেন।
মুম্বাই পুলিশ জানিয়েছে, শহরে অবৈধভাবে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের চিহ্নিত করতে বিশেষ অভিযান চলছে। সেই অভিযানের অংশ হিসেবেই গুরু মার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। গুরু মা বর্তমানে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রয়েছেন এবং তার সম্পত্তি ও নেটওয়ার্কের বিস্তারিত তদন্ত করছে পুলিশ। সূত্র বিবিসি


















