ঢাকা ১০:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিপ্লব বসত করে যেখানে : পারমাণবিক জ্বালানি যুগে বাংলাদেশ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:১৬:২০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৩ ১১৪ বার পড়া হয়েছে

রূপপুর পিামাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র : সকল ছবি সংগ্রহ (ফাইল)

ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ইউরেনিয়াম হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি

রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্রের ইউরেনিয়াম হস্তান্তরের এই দিনটি বিশ্ব ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকবে

বিশ্বের চোখ রূপপুরে 

 

বিশেষ প্রতিনিধি

পদ্মার নদীর তীরে রূপপুর। হার্ডিঞ্জ রেল সেতুর নান্দনিক স্থাপনা খুব কাছেই। জায়গাটি বাংলাদেশের পাবনার রূপপুর। এই রূপপুরের ১ হাজার ৬২ একর জমিজুড়ের স্বপ্নে চাষাবাদের বাস্তবরূপ পেল। আজ (৫ অক্টোবর) প্রথম চুল্লিতে ইউরেনিয়াম সংযোজনের পালা।

এই উপলক্ষ্যে রূপপুর সেজে ওঠেছে নবসাজে। আকাশে-বাতাসে প্রাপ্তির আনন্দ। আজকের শিশুটিও এই উন্নয়নের গর্বিত অংশিদার। সর্বশ্রেণীর মানুষের মধ্যে একটা প্রাপ্তির অহংকার। রূপপুরের শরতের আকাশ হাসছে। দুধসাদা মেঘেরা রূপুপুরে থেমে যাচ্ছে। ধবল মেঘের দল আকাশে সে কি লুটোপুটি। আত্মহারা আনন্দের বন্যা বইছে রূপপুর ঘিরে।

রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্রের ইউরেনিয়াম হস্তান্তরের এই দিনটি বিশ্ব ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকবে। বঙ্গবন্ধুর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে সফল হলো বাংলাদেশ। ইতিমধ্যেই বিদ্যুৎকেন্দ্রটির প্রথম ইউনিটের জন্য রাশিয়া থেকে এসেছে ‘ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল’ বা ইউরেনিয়াম।

শুরুটা হয়েছিল ১৯৬১ সালে। তারপর দীর্ঘ ৬২ বছরের অপেক্ষার ইতি টেনে শেখ হাসিনা নেতৃত্বে বিশ্বের ৩২তম পারমাণবি জ্বালানির কাতারে বাংলাদেশ। অথচ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। প্রকল্পের কাজ কিছুটা এগোতে শুরু করলেও ৭৫’র পটপরিবর্তনের পর প্রকল্পের কাজ মুখ থুবড়ে পড়ে। এভাবেই নানা প্রতিকূলতায় কেটে যায় ছয় দশক। অবশেষে শেখ হাসিনার হাত ধরে ইউরেনিয়াম জ্বালানির যুগে প্রবেশ করছে বাংলাদেশ।

পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২৪ সালের মার্চ মাসে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করার কথা। আর দ্বিতীয় ইউনিট উৎপাদনে আসবে ২০২৫ সালের মাঝামাঝি।

২০০৮ সালের নির্বাচনে শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে জয়লাভ করে। এরপরই রূপপুর প্রকল্প বাস্তাবায়নে হাত লাগান। শেঞ হাসিনার টানা ১৫ শাষনামলে প্রকল্প কাজ শেষ করেন।

২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র মেঘাপ্রকল্প বাস্তবায়নের অঙ্গীকার ছিল। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভের পর শেখ হাসিনা সরকার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে উদ্যোগ নেয়।

২০০৯ সালের ১৩ মে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন এবং রাশান ফেডারেশনের স্টেট অ্যাটমিক এনার্জি করপোরেশনের (রোসাটোম) মধ্যে ‘পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার’ বিষয়ক একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়।

প্রকল্পটি সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একটি জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর সভাপতিত্বে কারিগরি কমিটি এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিবের নেতৃত্বে একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ এবং আটটি সাব-গ্রুপ গঠন করে সরকার। একই বছরের ১০ নভেম্বর জাতীয় সংসদে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়।

২০১০ সালের ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মহাপরিচালক মি. ইউকিআ আমানো বাংলাদেশ সফর করেন। তিনি রূপপুর প্রকল্প বাস্তবায়নে আইএইএ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেন। ২০১১ সালের ২ নভেম্বর বাংলাদেশ সরকার এবং রাশান ফেডারেশন সরকারের মধ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন সংক্রান্ত আন্তঃরাষ্ট্রীয় সহযোগিতা চুক্তি সই হয়। বাংলাদেশের পারমাণবিক অবকাঠামোর সার্বিক অবস্থা মূল্যায়নের জন্য ২০১১ সালের ৯ থেকে ১৫ নভেম্বর সময়ে আইএইএ ইন্টেগ্রেটেড নিউক্লিয়ার ইনফ্রাস্ট্রাকচার রিভিউ (আইএনআইআর) মিশন পরিচালিত হয়।

২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারে বাংলাদেশ ও ভারত সরকার এবং গ্লোবাল সেন্টার ফর নিউক্লিয়ার এনার্জি পার্টনারশিপ (জিসিএনইপি), ভারতের পরমাণু শক্তি সংস্থা, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় বাংলাদেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে সহযোগিতা চুক্তি সই করে।

২০১৭ সালের ৩ জুলাই রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেন আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার মহাপরিচালক ইউকিয়া আমানো। তিনি এ কেন্দ্র স্থাপনে সব আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। ৩০ নভেম্বর বিদ্যুৎকেন্দ্রটির ১ নম্বর ইউনিটের প্রথম কংক্রিট ঢালাইয়ের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হতে থাকে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের নির্মাণকাজ।

২০২১ সালের ১০ অক্টোবর এবং ২০২২ সালের ১৮ অক্টোবর বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ও দ্বিতীয় ইউনিটের পারমাণবিক চুল্লিপাত্র বা রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল স্থাপনের কাজ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

চলতি বছরের গত ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় রাশিয়া থেকে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের জন্য ‘ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল’ বা ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান বাংলাদেশে আসে। ২৯ সেপ্টেম্বর সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ নিরাপত্তা বলয়ে সড়কপথে এ চালান ঢাকা থেকে রূপপুরে নেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ‘ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল’ বা ইউরেনিয়াম হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমানে কাছে এ ইউরেনিয়ামের চালান আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করবেন রোসাটমের মহাপরিচালক অ্যালেক্সিই লিখাচেভ। এর মধ্য দিয়ে ইউরেনিয়াম জ্বালানির যুগে প্রবেশ করবে বাংলাদেশ।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published.

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

বিপ্লব বসত করে যেখানে : পারমাণবিক জ্বালানি যুগে বাংলাদেশ

আপডেট সময় : ০৯:১৬:২০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৩

ইউরেনিয়াম হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি

রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্রের ইউরেনিয়াম হস্তান্তরের এই দিনটি বিশ্ব ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকবে

বিশ্বের চোখ রূপপুরে 

 

বিশেষ প্রতিনিধি

পদ্মার নদীর তীরে রূপপুর। হার্ডিঞ্জ রেল সেতুর নান্দনিক স্থাপনা খুব কাছেই। জায়গাটি বাংলাদেশের পাবনার রূপপুর। এই রূপপুরের ১ হাজার ৬২ একর জমিজুড়ের স্বপ্নে চাষাবাদের বাস্তবরূপ পেল। আজ (৫ অক্টোবর) প্রথম চুল্লিতে ইউরেনিয়াম সংযোজনের পালা।

এই উপলক্ষ্যে রূপপুর সেজে ওঠেছে নবসাজে। আকাশে-বাতাসে প্রাপ্তির আনন্দ। আজকের শিশুটিও এই উন্নয়নের গর্বিত অংশিদার। সর্বশ্রেণীর মানুষের মধ্যে একটা প্রাপ্তির অহংকার। রূপপুরের শরতের আকাশ হাসছে। দুধসাদা মেঘেরা রূপুপুরে থেমে যাচ্ছে। ধবল মেঘের দল আকাশে সে কি লুটোপুটি। আত্মহারা আনন্দের বন্যা বইছে রূপপুর ঘিরে।

রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্রের ইউরেনিয়াম হস্তান্তরের এই দিনটি বিশ্ব ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকবে। বঙ্গবন্ধুর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে সফল হলো বাংলাদেশ। ইতিমধ্যেই বিদ্যুৎকেন্দ্রটির প্রথম ইউনিটের জন্য রাশিয়া থেকে এসেছে ‘ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল’ বা ইউরেনিয়াম।

শুরুটা হয়েছিল ১৯৬১ সালে। তারপর দীর্ঘ ৬২ বছরের অপেক্ষার ইতি টেনে শেখ হাসিনা নেতৃত্বে বিশ্বের ৩২তম পারমাণবি জ্বালানির কাতারে বাংলাদেশ। অথচ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। প্রকল্পের কাজ কিছুটা এগোতে শুরু করলেও ৭৫’র পটপরিবর্তনের পর প্রকল্পের কাজ মুখ থুবড়ে পড়ে। এভাবেই নানা প্রতিকূলতায় কেটে যায় ছয় দশক। অবশেষে শেখ হাসিনার হাত ধরে ইউরেনিয়াম জ্বালানির যুগে প্রবেশ করছে বাংলাদেশ।

পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২৪ সালের মার্চ মাসে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করার কথা। আর দ্বিতীয় ইউনিট উৎপাদনে আসবে ২০২৫ সালের মাঝামাঝি।

২০০৮ সালের নির্বাচনে শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে জয়লাভ করে। এরপরই রূপপুর প্রকল্প বাস্তাবায়নে হাত লাগান। শেঞ হাসিনার টানা ১৫ শাষনামলে প্রকল্প কাজ শেষ করেন।

২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র মেঘাপ্রকল্প বাস্তবায়নের অঙ্গীকার ছিল। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভের পর শেখ হাসিনা সরকার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে উদ্যোগ নেয়।

২০০৯ সালের ১৩ মে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন এবং রাশান ফেডারেশনের স্টেট অ্যাটমিক এনার্জি করপোরেশনের (রোসাটোম) মধ্যে ‘পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার’ বিষয়ক একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়।

প্রকল্পটি সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একটি জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর সভাপতিত্বে কারিগরি কমিটি এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিবের নেতৃত্বে একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ এবং আটটি সাব-গ্রুপ গঠন করে সরকার। একই বছরের ১০ নভেম্বর জাতীয় সংসদে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়।

২০১০ সালের ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মহাপরিচালক মি. ইউকিআ আমানো বাংলাদেশ সফর করেন। তিনি রূপপুর প্রকল্প বাস্তবায়নে আইএইএ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেন। ২০১১ সালের ২ নভেম্বর বাংলাদেশ সরকার এবং রাশান ফেডারেশন সরকারের মধ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন সংক্রান্ত আন্তঃরাষ্ট্রীয় সহযোগিতা চুক্তি সই হয়। বাংলাদেশের পারমাণবিক অবকাঠামোর সার্বিক অবস্থা মূল্যায়নের জন্য ২০১১ সালের ৯ থেকে ১৫ নভেম্বর সময়ে আইএইএ ইন্টেগ্রেটেড নিউক্লিয়ার ইনফ্রাস্ট্রাকচার রিভিউ (আইএনআইআর) মিশন পরিচালিত হয়।

২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারে বাংলাদেশ ও ভারত সরকার এবং গ্লোবাল সেন্টার ফর নিউক্লিয়ার এনার্জি পার্টনারশিপ (জিসিএনইপি), ভারতের পরমাণু শক্তি সংস্থা, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় বাংলাদেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে সহযোগিতা চুক্তি সই করে।

২০১৭ সালের ৩ জুলাই রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেন আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার মহাপরিচালক ইউকিয়া আমানো। তিনি এ কেন্দ্র স্থাপনে সব আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। ৩০ নভেম্বর বিদ্যুৎকেন্দ্রটির ১ নম্বর ইউনিটের প্রথম কংক্রিট ঢালাইয়ের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হতে থাকে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের নির্মাণকাজ।

২০২১ সালের ১০ অক্টোবর এবং ২০২২ সালের ১৮ অক্টোবর বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ও দ্বিতীয় ইউনিটের পারমাণবিক চুল্লিপাত্র বা রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল স্থাপনের কাজ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

চলতি বছরের গত ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় রাশিয়া থেকে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের জন্য ‘ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল’ বা ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান বাংলাদেশে আসে। ২৯ সেপ্টেম্বর সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ নিরাপত্তা বলয়ে সড়কপথে এ চালান ঢাকা থেকে রূপপুরে নেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ‘ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল’ বা ইউরেনিয়াম হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমানে কাছে এ ইউরেনিয়ামের চালান আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করবেন রোসাটমের মহাপরিচালক অ্যালেক্সিই লিখাচেভ। এর মধ্য দিয়ে ইউরেনিয়াম জ্বালানির যুগে প্রবেশ করবে বাংলাদেশ।