ঢাকা ১২:৫৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ৩০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
জগন্নাথ হল ট্রাজেডি : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক দিবস পালিত মিরপুরের রূপনগরে ১৬ জনের মৃত্যু বিষাক্ত গ্যাসে নয়, আগুনে পুড়েই ১৭ কোটি মানুষের খাদ্যের যোগান দিচ্ছি, আশ্রয়ে রয়েছে ১৩ লাখ রোহিঙ্গা ২৬-এর নির্বাচনে প্রার্থিতার দৌড়ে ছাত্রদলের শীর্ষ নেতারা ডিআরইউ-ভিসতা ইনডোর গেমস শুরু ১৭ অক্টোবর, খেলাধুলায় প্রাণ ফেরাচ্ছে রিপোর্টার্স ইউনিটি মানবতাবিরোধী অপরাধে ১৫ সেনা কর্মকর্তা হেফাজতে : সেনা সদর দপ্তর জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা সম্মেলন, বিশ্ব শান্তির নতুন দিগন্তে ভারত ধানের শীষ নিয়ে টানাটানি কেন, প্রশ্ন মির্জা ফখরুলের নোবেল শান্তি পুরস্কার থেকে ট্রাম্পের নাম বাদ কেন? জানালো কমিটি সাহিত্যাঙ্গনে শোকের ছায়া: চলে গেলেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম

পুলিশের হাতে মারণাস্ত্র থাকছে না, পুনর্গঠিত হচ্ছে র‌্যাব

ভয়েস ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৯:১৫:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ মে ২০২৫ ২১৫ বার পড়া হয়েছে

পুলিশের হাতে মারণাস্ত্র থাকছে না, পুনর্গঠিত হচ্ছে র‌্যাব

ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

অস্ত্র থাকবে আর্মড পুলিশের হাতে 

চব্বিশে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পুলিশকে দলীয় গুন্ডবাহিনীর মতো ব্যাহার করেছে হাসিনা সরকার। রাতের আধারে ভোট চুরি, মিথ্যা মামলা, গুম, জঙ্গী আখ্যা দিয়ে মানুষ হত্যা ইত্যাদি ভয়ানক অপরাধ ছিলো কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তার তৈরি প্লান। পুলিশের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তারা সাক্ষাত যমদূতের ভূমিকায় ছিলেন। যাদের সবাই আত্মগোপনে আবার কেউ কেউ দেশ ছেড়ে বিদেশে পালিয়ে গেছেন। এসব কারণে সাধারণ মানুষ “পুলিশকে গুন্ডবাহিনী” মনে করতেন। গত বছরের ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী পদ ছেড়ে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাবার পর দেখা গেলো পুলিশের একটা বড় অংশ কর্তব্য পালন থেকে বিরত ছিলো। কারণ, তারা যে অপকর্ম করেছে, সেজন্য সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

গত বছরের ৮ আগস্ট নোবেল জয়ী ড. মুহ্ম¥দ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর পুলিশ বাহিনীকে ঢেলে সাজাতে নানা রকমের আলোচনা সামনে আসে। পুলিশ, র‌্যাব এবং আনসারের পোশাক পরিবর্তনের বিষয়টি নিয়েও আলোচনা করা হয়। তবে, এটাই নতুন নয়। গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাতদিন পুলিশ সদস্যদের প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। কাজে যোগ দেওয়ার বিষয়েও নানান শর্ত জুড়ে দিয়েছিলো তারা।

একপর্যায়ে সেনাবাহিনীর সহায়তায় কাজে ফিরতে শুরু করে। বাহিনীটি সচল করতে অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। এর মধ্যে অন্যতম ছিল পোশাক পরিবর্তন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় পুলিশ বাহিনীর কর্মকান্ডে ক্ষুব্ধ ছিল গোটা দেশের মানুষ। পুলিশ সদস্যদের পোশাকও অনেকের কাছে আতঙ্ক হয়ে দাঁড়ায়। আবার পুলিশ সদস্যরা পোশাক পরে বের হতেও সংকোচবোধ করতো। অনেক পুলিশ সদস্য ট্রমায় ভুগেছে দীর্ঘদিন। সরকার পতনের পর থেকে আলোচনায় থাকলেও অবশেষে চূড়ান্ত হয়েছে পুলিশ বাহিনীর নতুন পোশাক।

এসব আলোচনার মধ্যেই এবারে পুলিশকে নিরস্ত্র অবস্থার বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন, স্বয়ং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। সোমবার সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে কেবলমাত্র আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) হাতে মারণাস্ত্র থাকবে। সাংবাদিকদের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, র‌্যাব পুনর্গঠনের বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে। উপদেষ্টা বলেন, র‌্যাব পুনর্গঠন কীভাবে হবে, এই নাম থাকবে কি না, তাদের ড্রেস ঠিক থাকবে কি না, এই ফোর্স থাকবে কি না, কীভাবে অর্গানাইজ হবে, সেজন্য ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাফ জানিয়ে দিয়েচেন, পুলিশের কাছে কোনো প্রাণঘাতী বা মারণাস্ত্র থাকবে না।

পুলিশের হাতে মারণাস্ত্র থাকছে না, পুনর্গঠিত হচ্ছে র‌্যাব
পুলিশের হাতে মারণাস্ত্র থাকছে না, পুনর্গঠিত হচ্ছে র‌্যাব

খুব শিগগিরই পুলিশের কাছে থাকা সব মারণাস্ত্র জমা নেওয়া হবে। পাশাপাশি র‌্যাব পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এজন্য প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিশেষ সহকারী অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল আবদুল হাফিজের নেতৃত্বে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে।

আর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিযুক্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখস চৌধুরীকে প্রধান করে আরেকটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটি পুলিশের হাতে কোন কোন ধরনের অস্ত্র রাখা যাবে, কীভাবে কাজ করবে, সে বিষয়গুলো ঠিক করবে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, সভায় গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন ঈদের আগে পরিশোধ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। কোরবানির হাটে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য রাজধানীর প্রতিটি হাটে হাট ১০০ জন করে আনসার নিয়োগ করতে করতে হবে। ঈদে হাইওয়ে পুলিশ সড়কে কাজ করবে।

যাতায়াত নির্বিঘ্ন করা এবং চাঁদাবাজি বন্ধ করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। গেল বছর জুলাই-অগাস্টের আন্দোলন দমনে নির্বিচার অস্ত্র ব্যবহার করে ভাবমূর্তির সংকটে থাকা পুলিশ বাহিনীকে আর কোনো মারণাস্ত্র না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তবে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে কিছুটা সময়ের প্রয়োজন। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পর বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) প্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, গত কয়েকদিনে বিএসএফ ২০২ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে। এদের মধ্যে পাঁচজন ভারতীয়।

বিষয়গুলো পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সে দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জানানো হয়েছে। এখনো বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে মানুষজনকে বাংলাদেশে পাঠানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। বৈঠকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

পুলিশের হাতে মারণাস্ত্র থাকছে না, পুনর্গঠিত হচ্ছে র‌্যাব

আপডেট সময় : ০৯:১৫:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ মে ২০২৫

অস্ত্র থাকবে আর্মড পুলিশের হাতে 

চব্বিশে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পুলিশকে দলীয় গুন্ডবাহিনীর মতো ব্যাহার করেছে হাসিনা সরকার। রাতের আধারে ভোট চুরি, মিথ্যা মামলা, গুম, জঙ্গী আখ্যা দিয়ে মানুষ হত্যা ইত্যাদি ভয়ানক অপরাধ ছিলো কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তার তৈরি প্লান। পুলিশের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তারা সাক্ষাত যমদূতের ভূমিকায় ছিলেন। যাদের সবাই আত্মগোপনে আবার কেউ কেউ দেশ ছেড়ে বিদেশে পালিয়ে গেছেন। এসব কারণে সাধারণ মানুষ “পুলিশকে গুন্ডবাহিনী” মনে করতেন। গত বছরের ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী পদ ছেড়ে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাবার পর দেখা গেলো পুলিশের একটা বড় অংশ কর্তব্য পালন থেকে বিরত ছিলো। কারণ, তারা যে অপকর্ম করেছে, সেজন্য সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

গত বছরের ৮ আগস্ট নোবেল জয়ী ড. মুহ্ম¥দ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর পুলিশ বাহিনীকে ঢেলে সাজাতে নানা রকমের আলোচনা সামনে আসে। পুলিশ, র‌্যাব এবং আনসারের পোশাক পরিবর্তনের বিষয়টি নিয়েও আলোচনা করা হয়। তবে, এটাই নতুন নয়। গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাতদিন পুলিশ সদস্যদের প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। কাজে যোগ দেওয়ার বিষয়েও নানান শর্ত জুড়ে দিয়েছিলো তারা।

একপর্যায়ে সেনাবাহিনীর সহায়তায় কাজে ফিরতে শুরু করে। বাহিনীটি সচল করতে অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। এর মধ্যে অন্যতম ছিল পোশাক পরিবর্তন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় পুলিশ বাহিনীর কর্মকান্ডে ক্ষুব্ধ ছিল গোটা দেশের মানুষ। পুলিশ সদস্যদের পোশাকও অনেকের কাছে আতঙ্ক হয়ে দাঁড়ায়। আবার পুলিশ সদস্যরা পোশাক পরে বের হতেও সংকোচবোধ করতো। অনেক পুলিশ সদস্য ট্রমায় ভুগেছে দীর্ঘদিন। সরকার পতনের পর থেকে আলোচনায় থাকলেও অবশেষে চূড়ান্ত হয়েছে পুলিশ বাহিনীর নতুন পোশাক।

এসব আলোচনার মধ্যেই এবারে পুলিশকে নিরস্ত্র অবস্থার বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন, স্বয়ং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। সোমবার সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে কেবলমাত্র আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) হাতে মারণাস্ত্র থাকবে। সাংবাদিকদের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, র‌্যাব পুনর্গঠনের বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে। উপদেষ্টা বলেন, র‌্যাব পুনর্গঠন কীভাবে হবে, এই নাম থাকবে কি না, তাদের ড্রেস ঠিক থাকবে কি না, এই ফোর্স থাকবে কি না, কীভাবে অর্গানাইজ হবে, সেজন্য ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাফ জানিয়ে দিয়েচেন, পুলিশের কাছে কোনো প্রাণঘাতী বা মারণাস্ত্র থাকবে না।

পুলিশের হাতে মারণাস্ত্র থাকছে না, পুনর্গঠিত হচ্ছে র‌্যাব
পুলিশের হাতে মারণাস্ত্র থাকছে না, পুনর্গঠিত হচ্ছে র‌্যাব

খুব শিগগিরই পুলিশের কাছে থাকা সব মারণাস্ত্র জমা নেওয়া হবে। পাশাপাশি র‌্যাব পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এজন্য প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিশেষ সহকারী অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল আবদুল হাফিজের নেতৃত্বে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে।

আর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিযুক্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখস চৌধুরীকে প্রধান করে আরেকটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটি পুলিশের হাতে কোন কোন ধরনের অস্ত্র রাখা যাবে, কীভাবে কাজ করবে, সে বিষয়গুলো ঠিক করবে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, সভায় গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন ঈদের আগে পরিশোধ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। কোরবানির হাটে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য রাজধানীর প্রতিটি হাটে হাট ১০০ জন করে আনসার নিয়োগ করতে করতে হবে। ঈদে হাইওয়ে পুলিশ সড়কে কাজ করবে।

যাতায়াত নির্বিঘ্ন করা এবং চাঁদাবাজি বন্ধ করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। গেল বছর জুলাই-অগাস্টের আন্দোলন দমনে নির্বিচার অস্ত্র ব্যবহার করে ভাবমূর্তির সংকটে থাকা পুলিশ বাহিনীকে আর কোনো মারণাস্ত্র না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তবে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে কিছুটা সময়ের প্রয়োজন। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পর বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) প্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, গত কয়েকদিনে বিএসএফ ২০২ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে। এদের মধ্যে পাঁচজন ভারতীয়।

বিষয়গুলো পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সে দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জানানো হয়েছে। এখনো বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে মানুষজনকে বাংলাদেশে পাঠানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। বৈঠকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।