ঢাকা ০৬:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ট্রাম্পের পদক্ষেপ রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা: মেদভেদেভ পানির নিচ থেকে আড়াই মাস পর ভেসে ওঠলো ঝুলন্ত সেতু হাসিনাসহ আসামিদের শাস্তি না হলে শহীদদের প্রতি অবিচার হবে: অ্যাটর্নি জেনারেল  নেটওয়ার্ক এক্স ২০২৫’-এ তিনটি পুরস্কার অর্জন  হুয়াওয়ে বেনাপোলে কোটি টাকার ব্লেড কারসাজি ধরা পড়ল ২৫ দিন পর ভিসতা-ডিআরইউ ক্রীড়া উৎসব: সাঁতারে চ্যাম্পিয়ন মিথুন অতীতের ভুলের জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলেন জামায়াত আমির শফিকুর রহমান পশ্চিম তীর দখল বিল পাসে বৈশ্বিক নিন্দা: যুক্তরাষ্ট্র-সৌদি-কাতারের কঠোর অবস্থান পারমাণবিক মহড়ার আগে বাল্টিক আকাশে রুশ বোমারু বিমানের টহল ইসরায়েল সংসদে পশ্চিম তীর দখলের বিল পাস, ফিলিস্তিনিদের অস্তিত্বের ওপর নতুন আঘাত

পশ্চিম তীর দখল বিল পাসে বৈশ্বিক নিন্দা: যুক্তরাষ্ট্র-সৌদি-কাতারের কঠোর অবস্থান

ভয়েস ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১২:৫৮:৩০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫ ৩৯ বার পড়া হয়েছে

পশ্চিম তীর দখল বিল পাসে বৈশ্বিক নিন্দা: যুক্তরাষ্ট্র-সৌদি-কাতারের কঠোর অবস্থান

ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ইসরায়েলের পার্লামেন্ট (নেসেট) দখলকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি সার্বভৌমত্ব আরোপের একটি বিতর্কিত বিলকে প্রাথমিক অনুমোদন দিয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চোখে এই পদক্ষেপ কার্যত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড সংযুক্তির সমতুল্য এবং আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন। ফলে এ নিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র প্রতিক্রিয়া।

ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্রসহ প্রভাবশালী আরব দেশ সৌদি আরব ও কাতার বিলটির কড়া বিরোধিতা করেছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সাংবাদিকদের বলেন, “নেসেটে ভোটাভুটিতে বিলটি পাস হয়েছে, কিন্তু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প স্পষ্ট করেছেন যে এখনই আমরা এর পক্ষে নই। এটি গাজা শান্তি চুক্তির জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে।” গত মাসেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইসরায়েলকে সতর্ক করে বলেছিলেন, এমন কোনো পদক্ষেপ তিনি অনুমোদন দেবেন না যা আরব দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটায় বা গাজা শান্তি প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করে।

সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে নেসেটের বিলটির তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছে, এটি অবৈধ উপনিবেশ স্থাপনকে বৈধতা দেওয়ার প্রচেষ্টা এবং ইসরায়েলের দখলদার নীতির সম্প্রসারণবাদী রূপ। রিয়াদ আরও জানায়, সৌদি আরব সব ধরনের অবৈধ বসতি স্থাপন ও দখল নীতির বিরোধিতা জানায় এবং ১৯৬৭ সালের সীমারেখা অনুযায়ী পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ঐতিহাসিক অধিকারের প্রতি তাদের দৃঢ় সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করছে।

কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও কড়া ভাষায় নিন্দা জানিয়ে বলেছে,  এই পদক্ষেপ ফিলিস্তিনি জনগণের ঐতিহাসিক অধিকারের প্রকাশ্য লঙ্ঘন এবং আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি এক চ্যালেঞ্জ। একইভাবে জর্ডানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক্সে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলেছে,  এটি আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন। এ ধরনের পদক্ষেপ দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের ভিত্তি নষ্ট করবে এবং ফিলিস্তিনি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারকে খর্ব করবে।

অন্যদিকে, ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসও নেসেটের বিলের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। ফিলিস্তিনি মন্ত্রণালয় বলেছে, “জেরুজালেম, গাজা উপত্যকা ও পশ্চিম তীর একটি অবিচ্ছিন্ন ভৌগোলিক এলাকা—এর ওপর ইসরায়েলের কোনো সার্বভৌমত্ব নেই।” হামাস এক বিবৃতিতে বলেছে, “এই বিল দখলদার ঔপনিবেশিক শক্তির কুৎসিত চেহারা প্রকাশ করেছে এবং আমরা এ পদক্ষেপকে সম্পূর্ণ অবৈধ ঘোষণা করছি।”

এদিকে, ১২০ সদস্যের নেসেটে অনুষ্ঠিত ভোটে ২৫ জন পক্ষে ও ২৪ জন বিপক্ষে ভোট দেন। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও তার লিকুদ দল বিলটির বিরোধিতা করলেও তা প্রাথমিকভাবে অনুমোদন পেয়েছে। এখন বিলটি পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা কমিটিতে পর্যালোচনার জন্য পাঠানো হবে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই পদক্ষেপ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড সরাসরি দখলের সামিল এবং মধ্যপ্রাচ্যে চলমান শান্তি প্রক্রিয়াকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

পশ্চিম তীর দখল বিল পাসে বৈশ্বিক নিন্দা: যুক্তরাষ্ট্র-সৌদি-কাতারের কঠোর অবস্থান

আপডেট সময় : ১২:৫৮:৩০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫

ইসরায়েলের পার্লামেন্ট (নেসেট) দখলকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি সার্বভৌমত্ব আরোপের একটি বিতর্কিত বিলকে প্রাথমিক অনুমোদন দিয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চোখে এই পদক্ষেপ কার্যত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড সংযুক্তির সমতুল্য এবং আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন। ফলে এ নিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র প্রতিক্রিয়া।

ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্রসহ প্রভাবশালী আরব দেশ সৌদি আরব ও কাতার বিলটির কড়া বিরোধিতা করেছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সাংবাদিকদের বলেন, “নেসেটে ভোটাভুটিতে বিলটি পাস হয়েছে, কিন্তু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প স্পষ্ট করেছেন যে এখনই আমরা এর পক্ষে নই। এটি গাজা শান্তি চুক্তির জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে।” গত মাসেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইসরায়েলকে সতর্ক করে বলেছিলেন, এমন কোনো পদক্ষেপ তিনি অনুমোদন দেবেন না যা আরব দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটায় বা গাজা শান্তি প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করে।

সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে নেসেটের বিলটির তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছে, এটি অবৈধ উপনিবেশ স্থাপনকে বৈধতা দেওয়ার প্রচেষ্টা এবং ইসরায়েলের দখলদার নীতির সম্প্রসারণবাদী রূপ। রিয়াদ আরও জানায়, সৌদি আরব সব ধরনের অবৈধ বসতি স্থাপন ও দখল নীতির বিরোধিতা জানায় এবং ১৯৬৭ সালের সীমারেখা অনুযায়ী পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ঐতিহাসিক অধিকারের প্রতি তাদের দৃঢ় সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করছে।

কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও কড়া ভাষায় নিন্দা জানিয়ে বলেছে,  এই পদক্ষেপ ফিলিস্তিনি জনগণের ঐতিহাসিক অধিকারের প্রকাশ্য লঙ্ঘন এবং আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি এক চ্যালেঞ্জ। একইভাবে জর্ডানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক্সে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলেছে,  এটি আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন। এ ধরনের পদক্ষেপ দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের ভিত্তি নষ্ট করবে এবং ফিলিস্তিনি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারকে খর্ব করবে।

অন্যদিকে, ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসও নেসেটের বিলের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। ফিলিস্তিনি মন্ত্রণালয় বলেছে, “জেরুজালেম, গাজা উপত্যকা ও পশ্চিম তীর একটি অবিচ্ছিন্ন ভৌগোলিক এলাকা—এর ওপর ইসরায়েলের কোনো সার্বভৌমত্ব নেই।” হামাস এক বিবৃতিতে বলেছে, “এই বিল দখলদার ঔপনিবেশিক শক্তির কুৎসিত চেহারা প্রকাশ করেছে এবং আমরা এ পদক্ষেপকে সম্পূর্ণ অবৈধ ঘোষণা করছি।”

এদিকে, ১২০ সদস্যের নেসেটে অনুষ্ঠিত ভোটে ২৫ জন পক্ষে ও ২৪ জন বিপক্ষে ভোট দেন। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও তার লিকুদ দল বিলটির বিরোধিতা করলেও তা প্রাথমিকভাবে অনুমোদন পেয়েছে। এখন বিলটি পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা কমিটিতে পর্যালোচনার জন্য পাঠানো হবে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই পদক্ষেপ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড সরাসরি দখলের সামিল এবং মধ্যপ্রাচ্যে চলমান শান্তি প্রক্রিয়াকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।