নির্বাচন বানচালের প্রচেষ্টা দেশপ্রেমিক জনগণ প্রতিহত করবে

- আপডেট সময় : ০৭:৪১:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ অগাস্ট ২০২৫ ১৫৮ বার পড়া হয়েছে
অন্তর্বর্তী সরকারের বিবৃতি
জনগণের ইচ্ছা জয়ী হবে, কোনো অশুভ শক্তিকে গণতন্ত্রের পথে আমাদের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে দেওয়া হবে না
আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন নির্বাচন বানচালের প্রচেষ্টা গণতন্ত্রপ্রেমী দেশপ্রেমিক জনগণ প্রতিহত করবে। সরকারের তরফে জারি করা বিবৃতিতে এমন হুশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়। তাতে বলা হয়, নির্বাচন বানচালের চেষ্টাকারীদের কঠোরভাবে দমন করা হবে। শনিবার নির্বাচন ইস্যু নিয়ে কড়া ভাষায় জারি করা বিবৃতিতে একথা জানায় অন্তর্বর্তী সরকার।
শুক্রবার রাতে ঢাকার বিজয় নগরে জাতীয় পার্টি অফিসের সামনে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এর একদিনের মাথায় শনিবার সন্ধ্যার পর জাতীয় পার্টি অফিস ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
এদিন সরকারের জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়, ২০১৮ সালে শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে কোটা সংস্কার আন্দোলনে নুরুল হক নুর ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছিলেন উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, একজন ছাত্রনেতা হিসেবে তিনি তরুণদের সংগঠিত করেছিলেন, বিভিন্ন মত ও কণ্ঠকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে নির্ভীকভাবে দাঁড়িয়েছিলেন।
চব্বিশের জুলাইয়ে গণঅভ্যুত্থান চলাকালে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল এবং হেফাজতে নিয়ে নির্মম নির্যাতন করা হয়েছিল। নুরুল হক নুরের ভূমিকা একটি স্বাধীন, সুষ্ঠু এবং গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের জন্য আমাদের জনগণের সম্মিলিত আকাঙ্ক্ষার প্রতীক। তার সাহস ও আত্মত্যাগ চিরকাল আমাদের জাতির ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকবে।
এই সংকটকালে অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী সকল রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির প্রতি ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বিবৃতিকে। এতে বলা হয়েছে, আমাদের সংগ্রামের অর্জন রক্ষা করতে, জনবিরোধী সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে এবং গণতন্ত্রে আমাদের সফল উত্তরণ নিশ্চিত করতে সবার ঐক্যবদ্ধ হওয়া অপরিহার্য। নির্বাচন ইস্যু নিয়ে কড়া ভাষায় বিবৃতি জারি করে দেশটির অন্তর্বর্তী সরকার।
তাতে বলা হয়েছে, সরকার দৃঢ়ভাবে নিশ্চিত করছে যে, জাতীয় নির্বাচন ২৬-এর ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশের জনগণের প্রতি সরকারের একনিষ্ঠ অঙ্গীকার। নির্বাচন বিলম্বিত বা বানচাল করার সকল ষড়যন্ত্র, বাধা অথবা প্রচেষ্টা অন্তর্বর্তী সরকার এবং দেশের গণতন্ত্রপ্রেমী দেশপ্রেমিক জনগণ দৃঢ়ভাবে প্রতিহত করবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, জনগণের ইচ্ছা জয়ী হবে, কোনো অশুভ শক্তিকে গণতন্ত্রের পথে আমাদের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে দেওয়া হবে না। সরকারের এই বিবৃতিতে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা জানানো হয়। প্রয়োজনে সরকারি খরচে তাকে বিদেশে পাঠানো হবে।
শুক্রবার রাতে বিজয়নগরে নুরুল হক নুরের ওপর হামলা হয়। গুরুতর আহতাবস্থায় বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন।
হামলার কথা তুলে ধরে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কেবল নুরুল হক নুরের ওপরই নয়, এই ধরনের সহিংসতা ন্যায়বিচার ও জবাবদিহি নিশ্চিতের ঐতিহাসিক সংগ্রামে জাতিকে একত্রিত করা গণতান্ত্রিক আন্দোলনের স্পিরিটের ওপরেও আঘাত বলে মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার।
অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণকে আশ্বস্ত করছে যে, এই নৃশংস ঘটনার একটি পূর্ণাঙ্গ ও নিরপেক্ষ তদন্ত সর্বোচ্চ গুরুত্ব সহকারে সম্পন্ন করা হবে। প্রভাব বা পদমর্যাদা যাই হোক না কেন, জড়িত কোনো ব্যক্তি জবাবদিহি থেকে রেহাই পাবে না।
স্বচ্ছতা এবং দ্রুততার সাথে এর বিচার সম্পন্ন করা হবে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, তাৎক্ষণিকভাবে নুরুল হক নুর এবং তার দলের অন্যান্য আহত সদস্যদের চিকিৎসা কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের জন্য একটি বিশেষায়িত মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে।
তাদের সর্বোচ্চমানের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রয়োজনে তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য রাষ্ট্রীয় খরচে বিদেশে পাঠানো হবে। এই সংকটময় সময়ে নুর, তার দলের আহত সদস্য এবং তাদের পরিবারের সঙ্গে পুরো জাতির প্রার্থনা এবং সংহতি রয়েছে।