তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরবে কি না, মানুষের নজর এখন আপিল বিভাগে
- আপডেট সময় : ১২:১০:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ নভেম্বর ২০২৫ ২০ বার পড়া হয়েছে
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহালের দাবিতে দাখিল করা একাধিক রিভিউ আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি ষষ্ঠ দিনে প্রবেশ করেছে। রোববার (২ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুরু হয় এই শুনানি। দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন ও সাধারণ মানুষের নজর এখন আদালতের করিডরে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার বিলোপসহ বেশ কিছু বিষয়ে আনা পঞ্চদশ সংশোধনী আইন ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয়। ২০১১ সালের ৩ জুলাই এ–সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়।
বাংলাদেশে ১৯৯৬ সালে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সাংবিধানিকভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালু করা হয় এবং ১৯৯৬ সালের ৩০ মার্চ মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে প্রথম তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হয়।
এর আগে ১৯৯০ সালে স্বৈরাচারী শাসনের অবসানের পর রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা হস্তান্তরের মাধ্যমে একটি অনানুষ্ঠানিক তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হয়েছিল।
২০০৮ সালে এই বছর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি। অন্য চারজন হলেন- তোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজউদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া ও জাহরা রহমান।
আপিল বিভাগের ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ১৬ অক্টোবর একটি আবেদন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এ ছাড়া রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে গত বছরের ২৩ অক্টোবর আরেকটি আবেদন করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।
পরে নওগাঁর রানীনগরের নারায়ণপাড়ার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেন আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে গত বছর একটি আবেদন করেন।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরাতে চূড়ান্ত আপিল শুনানি ৬ষ্ঠ দিনের মতো শুরু হয়েছে। রোববর (২ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চে এ শুনানি শুরু হয়েছে।
আদালতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের পক্ষে শুনানি করছেন সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন।
এর আগে গত ২১, ২২, ২৩, ২৮ ও ২৯ অক্টোবর শুনানি হয়। এ ৫ দিনে ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ ৫ জনের পক্ষে আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া, ইন্টারভেনার হিসেবে আইনজীবী এহসান এ সিদ্দিক, জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে আইনজীবী শিশির মনির ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেনের পক্ষে আইনজীবী এস এম শাহরিয়ার শুনানি সম্পন্ন করেছেন।
এর আগে ২৭ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা আবেদনের শুনানি শেষে আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়।
সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হয় ১৯৯৬ সালে। এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগ এ রিট খারিজ করেন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করা হয়।
এই সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম সলিমউল্লাহসহ অন্যরা ১৯৯৮ সালে হাইকোর্টে রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল দেন। হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট রায় দেন।
এ রায়ের বিরুদ্ধে সরাসরি আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় ২০০৫ সালে আপিল করে রিট আবেদনকারী পক্ষ। এই আপিল মঞ্জুর করে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন।
বাংলাদেশে ১৯৯৬ সালে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সাংবিধানিকভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালু করা হয় এবং ১৯৯৬ সালের ৩০ মার্চ মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে প্রথম তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হয়। এর আগে ১৯৯০ সালে স্বৈরাচারী শাসনের অবসানের পর রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা হস্তান্তরের মাধ্যমে একটি অনানুষ্ঠানিক তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হয়েছিল।











