জুয়েলার্স লুটের পেছনে পেশাদার চক্র, গোয়েন্দা জালে ৪

- আপডেট সময় : ০৪:২৫:৩৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫ ২৫ বার পড়া হয়েছে
৫০০ ভরি স্বর্ণ চুরির রহস্য উদঘাটন
চক্রটি অত্যন্ত সংগঠিত ও অভিজ্ঞ। ২০২১ সালে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী মার্কেটে স্বর্ণ চুরির সঙ্গেও জড়িত ছিল। জামিনে মুক্তি পেয়ে ফের একই ধরনের অপরাধে জড়ায়
আমিনুল হক ভূইয়া, ঢাকা
ঢাকার মালিবাগের ফরচুন শপিং মলের শম্পা জুয়েলার্সে সংঘটিত ৫০০ ভরি স্বর্ণালংকার চুরির রহস্য উদঘাটন করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এই চাঞ্চল্যকর ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার এবং উদ্ধার করা হয়েছে ১৯০ ভরি চোরাই স্বর্ণ।
ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম জানান, চক্রটি প্রায় তিন মাস ধরে ফরচুন মার্কেটের দোকান ও আশপাশের এলাকা পর্যবেক্ষণ করছিল। চুরি ঘটনায় এক নারীসহ ৪জনকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দারা।
ঘটনার আগের দিন তারা শপিং মলের বাথরুমের জানালায় চিকন সুতা বেঁধে যায়। রাতে এসে সেই সুতার সঙ্গে রশি বেঁধে ওপরে উঠে গ্রিল কেটে মার্কেটে প্রবেশ করে। এরপর দোকানের তালা ভেঙে স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যায়।
চুরির ঘটনার পর রমনা থানায় মামলা হলে ডিবি ছায়া তদন্ত শুরু করে। সিসিটিভি ফুটেজ, তথ্য-প্রযুক্তি ও মাঠের তথ্যের সমন্বয়ে টানা ৭২ ঘণ্টার অভিযানে বিভিন্ন জেলায় অভিযান চালায় গোয়েন্দারা।
প্রথমে চট্টগ্রাম থেকে শাহিন মাতব্বরকে গ্রেফতারের পর ফরিদপুর থেকে আংশিক স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়। বরিশাল থেকে উত্তম চন্দ্র সূর ও অনিতা রায় এবং ঢাকায় অভিযান চালিয়ে সমন্বয়কারী নুরুল ইসলামকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দারা।
অতিরিক্ত কমিশনার শফিকুল ইসলাম বলেন, চক্রটি অত্যন্ত সংগঠিত ও অভিজ্ঞ। ২০২১ সালে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী মার্কেটে স্বর্ণ চুরির সঙ্গেও জড়িত ছিল। জামিনে মুক্তি পেয়ে ফের একই ধরনের অপরাধে জড়ায়।
তদন্তে জানা গেছে, উত্তমের স্ত্রী অনিতা রায়ও স্বামীর অপরাধ সম্পর্কে জানতেন এবং কিছু ক্ষেত্রে সহযোগিতা করেছেন। জড়িত অপর পলাতক রয়েছে। গোয়েন্দাদের ধারণা, তার কাছেই বাকি স্বর্ণের একটি বড় অংশ থাকতে পারে।
পুলিশ জানায়, উদ্ধার হওয়া ১৯০ ভরি স্বর্ণের কিছু অংশ গলানো অবস্থায় ছিল। বাকি স্বর্ণ বিক্রি করা হয়নি বলেও প্রমাণ মিলেছে। চোরচক্রের সদস্যরা বাইরে থেকে কৃষিকাজ বা গরুর খামারের সঙ্গে যুক্ত থেকে গোপনে বড় ধরনের চুরির পরিকল্পনা করত। সুযোগ পেলেই স্বর্ণ বা অন্যান্য মূল্যবান জিনিস চুরি করাই ছিল তাদের পেশা।
৮ অক্টোবর দিবাগত রাতে স্বর্ণের দোকানে চুরির ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, বোরকা পরা অবস্থায় দুই ব্যক্তি দোকানের তালা কেটে ভেতরে প্রবেশ করে। দেশজুড়ে আলোচিত এই ঘটনার পর ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।
মাহানগর গোয়েন্দা পুলিশের দ্রুত তৎপরতায় চুরির মূল রহস্য উদঘাটিত হওয়ায় নতুন করে স্বস্তি ফিরে এসেছে মালিবাগের স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের মধ্যে।
গ্রেফতাররা হলো, শাহিন মাতব্বর ওরফে শাহিন (৪৬), নুরুল ইসলাম (৩৩), উত্তম চন্দ্র সূর (৪৯) এবং তার স্ত্রী অনিতা রায় (৩১)। তারা সবাই একটি সংঘবদ্ধ ও পেশাদার চোরচক্রের সদস্য।