ঢাকা ০৫:৪১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
গণতন্ত্র রক্ষার দাবিতে আমেরিকা জুড়ে ট্রাম্পবিরোধী ‘নো কিংস’ ঝড় লিবিয়া থেকে দেশে ফিরছেন আরও ৩০০ বাংলাদেশি পাটপণ্যের পুনর্জাগরণে ১০০ কোটি টাকার ফান্ড, টেকসই উন্নয়নে নতুন দিগন্তের আহ্বান কার্গো ভিলেজে আগুনে ছাই ১২ হাজার কোটি টাকার পণ্য, পুড়েছে স্বপ্নও ১ নভেম্বর থেকে এমপিও শিক্ষকদের নতুন বাড়িভাড়া ভাতা কার্যকর ভিসতা-ডিআরইউ ক্রীড়া উৎসব পুরুষ আর্চারিতে চ্যাম্পিয়ন তামিম হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গত এক যুগের অগ্নিকাণ্ড ঢাকার প্রধান বিমানবন্দরে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ড, ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ জুলাই সনদ অনুষ্ঠান ঘিরে সংঘর্ষ-উত্তেজনা,  মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের ঘটনায় ৯০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা বিশাখাপত্তনমে খুলছে ভারতের দীর্ঘতম গ্লাস স্কাইওয়াক, আকাশ, পাহাড় আর সমুদ্র মিলবে এক সেতুবন্ধনে

কার্গো ভিলেজে আগুনে ছাই ১২ হাজার কোটি টাকার পণ্য, পুড়েছে স্বপ্নও

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:১৩:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫ ৫৯ বার পড়া হয়েছে

ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড : ছবি সংগ্রহ

ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

  থমকে গেছে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম

আমিনুল হক ভূইয়া, ঢাকা

ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ভস্মীভূত হয়েছে শত শত টন আমদানি-রপ্তানি পণ্য। আগুনে শুধু পণ্যই নয়, পুড়ে ছাই হয়ে গেছে বহু ব্যবসায়ীর স্বপ্নও। ইন্টারন্যাশনাল এয়ার এক্সপ্রেস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি কবির আহমেদের মতে, এই অগ্নিকাণ্ডে আনুমানিক বিলিয়ন ডলারেরও বেশি ক্ষতি হয়েছে। প্রতি ডলার ১২২ টাকা ১৩ পয়সা হিসেবে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ১২ হাজার ২১৪ কোটি টাকা

শনিবার দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে আগুনের সূত্রপাত হয় বিমানবন্দরের আমদানি কার্গো এলাকায়। ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিটের পাশাপাশি সিভিল এভিয়েশন ও বিমান বাহিনীর অগ্নিনির্বাপণ ইউনিট যোগ দিয়ে প্রায় সাত ঘণ্টা পর রাত ৯টা ১৮ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। অগ্নিকাণ্ডে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ২৪টি ফ্লাইটের সময়সূচি বিপর্যস্ত হয়, কিছু ফ্লাইট চট্টগ্রাম ও সিলেটের দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়।

অন্তর্বর্তী সরকারের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে জানান, আগুন যেখানে লেগেছে তা সম্পূর্ণ আমদানি কার্গো এলাকা, রপ্তানি অংশ নিরাপদ রয়েছে। তবে আগুনে বিমানবন্দরের অবকাঠামো, ওয়্যারহাউজ, কার্গো এক্সপ্রেস অফিস, ও শুল্ক বিভাগের নথিপত্রের বড় ক্ষতি হয়েছে।

কার্গো ভিলেজ দেশের পণ্য আমদানি-রপ্তানির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। এখানেই সংরক্ষিত থাকে রপ্তানির অপেক্ষমাণ তৈরি পোশাক, পচনশীল ফলমূল, শাকসবজি ও অন্যান্য মূল্যবান পণ্য। আমদানিকারকরা শুল্কায়ন শেষে এখান থেকে পণ্য খালাস করে থাকেন। ফলে এই অগ্নিকাণ্ডে দেশের সামগ্রিক বাণিজ্য কার্যক্রমে বড় ধরনের ধাক্কা লাগবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

আরএমকে গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামরুজ্জামান ইবনে আমিন সোহাইল সংবাদমাধ্যমকে জানান, অসংখ্য আমদানিকারকের পণ্য এই অগ্নিকাণ্ডে সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পরই প্রকৃত ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ সম্ভব হবে, আর বিমা দাবির প্রক্রিয়া শুরু করতেও সময় লাগবে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই বিপর্যয় বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি শৃঙ্খলে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলবে। রপ্তানিমুখী শিল্পে লিড টাইম সংকট তৈরি হবে এবং বৈদেশিক ক্রেতাদের আস্থা অর্জনেও সময় লাগবে। আন্তর্জাতিক সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশনের (ICAO) নিয়ম অনুযায়ী, বিমানবন্দরের পূর্ণাঙ্গ নিরাপত্তা মূল্যায়ন সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত নিয়মিত কার্যক্রম পুরোপুরি পুনরায় শুরু করা যাবে না।

এই অগ্নিকাণ্ড শুধু ব্যবসা নয়, দেশের অর্থনীতির গতি ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চেইনে এক গভীর দগদগে ক্ষতচিহ্ন রেখে গেল।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

কার্গো ভিলেজে আগুনে ছাই ১২ হাজার কোটি টাকার পণ্য, পুড়েছে স্বপ্নও

আপডেট সময় : ১২:১৩:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫

  থমকে গেছে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম

আমিনুল হক ভূইয়া, ঢাকা

ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ভস্মীভূত হয়েছে শত শত টন আমদানি-রপ্তানি পণ্য। আগুনে শুধু পণ্যই নয়, পুড়ে ছাই হয়ে গেছে বহু ব্যবসায়ীর স্বপ্নও। ইন্টারন্যাশনাল এয়ার এক্সপ্রেস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি কবির আহমেদের মতে, এই অগ্নিকাণ্ডে আনুমানিক বিলিয়ন ডলারেরও বেশি ক্ষতি হয়েছে। প্রতি ডলার ১২২ টাকা ১৩ পয়সা হিসেবে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ১২ হাজার ২১৪ কোটি টাকা

শনিবার দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে আগুনের সূত্রপাত হয় বিমানবন্দরের আমদানি কার্গো এলাকায়। ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিটের পাশাপাশি সিভিল এভিয়েশন ও বিমান বাহিনীর অগ্নিনির্বাপণ ইউনিট যোগ দিয়ে প্রায় সাত ঘণ্টা পর রাত ৯টা ১৮ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। অগ্নিকাণ্ডে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ২৪টি ফ্লাইটের সময়সূচি বিপর্যস্ত হয়, কিছু ফ্লাইট চট্টগ্রাম ও সিলেটের দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়।

অন্তর্বর্তী সরকারের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে জানান, আগুন যেখানে লেগেছে তা সম্পূর্ণ আমদানি কার্গো এলাকা, রপ্তানি অংশ নিরাপদ রয়েছে। তবে আগুনে বিমানবন্দরের অবকাঠামো, ওয়্যারহাউজ, কার্গো এক্সপ্রেস অফিস, ও শুল্ক বিভাগের নথিপত্রের বড় ক্ষতি হয়েছে।

কার্গো ভিলেজ দেশের পণ্য আমদানি-রপ্তানির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। এখানেই সংরক্ষিত থাকে রপ্তানির অপেক্ষমাণ তৈরি পোশাক, পচনশীল ফলমূল, শাকসবজি ও অন্যান্য মূল্যবান পণ্য। আমদানিকারকরা শুল্কায়ন শেষে এখান থেকে পণ্য খালাস করে থাকেন। ফলে এই অগ্নিকাণ্ডে দেশের সামগ্রিক বাণিজ্য কার্যক্রমে বড় ধরনের ধাক্কা লাগবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

আরএমকে গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামরুজ্জামান ইবনে আমিন সোহাইল সংবাদমাধ্যমকে জানান, অসংখ্য আমদানিকারকের পণ্য এই অগ্নিকাণ্ডে সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পরই প্রকৃত ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ সম্ভব হবে, আর বিমা দাবির প্রক্রিয়া শুরু করতেও সময় লাগবে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই বিপর্যয় বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি শৃঙ্খলে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলবে। রপ্তানিমুখী শিল্পে লিড টাইম সংকট তৈরি হবে এবং বৈদেশিক ক্রেতাদের আস্থা অর্জনেও সময় লাগবে। আন্তর্জাতিক সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশনের (ICAO) নিয়ম অনুযায়ী, বিমানবন্দরের পূর্ণাঙ্গ নিরাপত্তা মূল্যায়ন সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত নিয়মিত কার্যক্রম পুরোপুরি পুনরায় শুরু করা যাবে না।

এই অগ্নিকাণ্ড শুধু ব্যবসা নয়, দেশের অর্থনীতির গতি ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চেইনে এক গভীর দগদগে ক্ষতচিহ্ন রেখে গেল।