কাঁধে করে ঠাকুর বওয়ার রীতি, বিতর্কে কৃষ্ণনগরের সাঙ

- আপডেট সময় : ০৭:১৩:২৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ নভেম্বর ২০২১ ২৯৩ বার পড়া হয়েছে
ছবি সংগৃহিত
জগদ্ধাত্রী পুজোর জন্য বিশ্ববিখ্যাত কৃষ্ণনগর সাঙ-এর দাবিতে তোলপাড়। ঐতিহ্য ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে প্রতিবাদ অবরোধে উত্তাল মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রের জেলা। জগদ্ধাত্রী পুজোয় সাঙ প্রথা কোভিড পরিস্থিতিতে বন্ধ থাকায় এক পক্ষ যেমন এর তীব্র বিরোধিতা করে প্রশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের চরম পথ বেছে নিয়েছে। অন্যদিকে, সাঙ প্রথা বন্ধ হওয়া নিয়ে মন খারাপ থাকলেও সংক্রমণের কথা ভেবে প্রশাসনের সিদ্ধান্তেই নিমরাজি অপরপক্ষ।
কৃষ্ণনগরবাসীর দাবি, এই ‘সাঙ’ মানে যে মোটা বাঁশে কাঁধ লাগিয়ে প্রতিমা বয়ে নিয়ে যাওয়া। বেহারার কাঁধে চাপিয়ে প্রতিমা বিসর্জনের প্রথাকে ‘ঐতিহ্য’ বলে দাবি করে কৃষ্ণনগরবাসী। তাদের মতে, মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের আমল থেকেই চলে আসছে সাঙ প্রথা। মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রের হাত ধরেই কৃষ্ণনগরে শুরু হয় জগদ্ধাত্রী পুজা। কোভিডের কারণে সেই প্রথারই এবছরও অনুমতি মেলেনি। এ বছরও ঘট বিসর্জন এবং বাহকের কাঁধে করে প্রতিমা বিসর্জনের রীতি বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন।

একইসঙ্গে কোভিড বিধি মেনে জগদ্ধাত্রী পুজো করার একগুচ্ছ নির্দেশিকা দিয়েছে আদালতও। কৃষ্ণনগরের ঐতিহ্যবাহী জগদ্ধাত্রী পুজো শুরু হবে। প্রশাসনের নির্দেশের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার রাতে কৃষ্ণনগর পুরসভার সামনে ধরনায় বসে কৃষ্ণনগরের যুব সম্প্রদায়। তাদের প্রশ্ন, নির্বাচনের সময় কোনরকম বিধিনিষেধ নেই। অথচ পুজোর বেলায় কেন এত নিয়ম? কেউ কেউ আবার দুর্গাপুজোর সময় কোভিড বিধি শিকেয় ওঠার বিষয়টিও উল্লেখ করেছেন।
এসবের মাঝেই বুধবার ভোরে জগদ্ধাত্রী পুজোয় কোভিড বিধি শিথিলের দাবিতে ৩৪ নং জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সেই অবরোধ চলাকালীন যানজটে আটকে মৃত্যু হয় এক শিশুর। এরপরই ধিকিধিকি করে জ্বলতে থাকা বিতর্কের আগুনে পড়ে ঘি। সাঙ-প্রথার অপরিহার্যতা ও ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন তোলেন বঙ্গবাসীর একাংশ।
সাঙ প্রথার ভিত্তির খোঁজে কৃষ্ণনগরের প্রবীণ বাসিন্দারা সংবাদমাধ্যমকে জানান, শাস্ত্রীয় বিধান না হলেও এই প্রথা কৃষ্ণনগরের পুজোর সঙ্গে অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িয়ে। মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রের আমলে শুরু হওয়া জগদ্ধাত্রী পুজোর রীতিনীতির মতোই পালিত হচ্ছে সাঙ।