অষ্ট্রেলিয়া-বাংলাদেশের মধ্যে টিফা চুক্তি স্বাক্ষর, লক্ষ্য বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি

- আপডেট সময় : ০৯:২৩:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ ২৭১ বার পড়া হয়েছে
‘অষ্ট্রেলিয়ার বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার বহাল রাখার বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন মন্ত্রী’
বাংলাদেশ-অষ্ট্রেলিয়ার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের বিষয়ে একটি ফ্রেমওয়ার্ক
ব্যবস্থা স্বাক্ষরিত হয়েছে। বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এবং অষ্ট্রেলিয়ার বাণিজ্য,
পর্যটন ও বিনিয়োগমন্ত্রী ড্যান তেহান বুধবার এক ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে এই চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন।
গত পাঁচ দশকের মধ্যে অষ্ট্রেলিয়া-বাংলাদেশের প্রথম প্রাতিষ্ঠানিক অর্থনৈতিক কাঠামো হচ্ছে ট্রেড এন্ড ইনভেস্টমেন্ট ফ্রেমওয়ার্ক অ্যারেঞ্জমেন্ট তথা টিফা। করার আশা করা হচ্ছে। টিফার অধীনে একটি যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হবে যাতে দু’দেশের সংশ্লিষ্ট সেক্টর ও সাব-সেক্টরের
যথাযথ প্রতিনিধিত্ব থাকবে এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগের পূর্ণ সম্ভাবনা অর্জন করার জন্য আলোচনা এগিয়ে নিতে মূখ্য ভূমিকা রাখবে। বুধবার বিদেশমন্ত্র এক সংবাদ বার্তায় এই তথ্য জানায়।
অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এমন একটি সময় অষ্ট্রেলিয়ার সঙ্গে টিফা স্বাক্ষর করলো, যখন বাংলাদেশ তার স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর
রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন করছে। বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা আশা করবো এই
ফ্রেমওয়ার্ক বাংলাদেশের এলডিসি থেকে উত্তরণ পরবর্তী সময়ে শুল্ক মুক্ত ও কোটা মুক্ত
((DFQF) সুবিধা ধরে রাখা, বাণিজ্য উদারীকরণ এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগের প্রবাহ বৃদ্ধির
অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টিসহ সকল প্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে কাজ করবে। তিনি অষ্ট্রেলিয়ার মন্ত্রী তেহানকে অতিসত্ত্বর বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী।

আমন্ত্রণ গ্রহণ করে অষ্ট্রেলিয়ার মন্ত্রী তেহান বলেছেন, তিনি উপযুক্ত বাণিজ্য ও বিনিয়োগ প্রতিনিধি দল নিয়ে আগামী বছর সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফর করবেন। তিনি বলেন, অষ্ট্রেলিয়ার বর্তমান সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ প্রসার এবং তা অধিকতর
গতিশীল করতে কাজ করে যাচ্ছে। তেহান বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি এই ধরণের অর্থনৈতিক কাঠামোর মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের উভয় দেশে কর্মসংস্থান ও বাণিজ্যের সুযোগ সৃষ্টিতে আরও অবদান রাখতে পারবো। বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান শিক্ষা, কারিগরি প্রশিক্ষণ এবং
জ্বালানি চাহিদা পূরণে অষ্ট্রেলিয়ার সহযোগিতা করার সুযোগ রয়েছে। তিনি অষ্ট্রেলিয়ার বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার বহাল রাখার বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন মন্ত্রী। অষ্ট্রেলিয়া
কৃষি ও অবকাঠামো উন্নয়নে বিশ্বমানের দক্ষতা প্রদান করে থাকে, যা থেকে বাংলাদেশ ও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা গ্রহণ করতে পারবে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ-অষ্ট্রেলিয়ার দ্বি-পাক্ষিক বাণিজ্য গত দশকে প্রায় ছয় গুণ বেড়ে গত বছরে
২.৬ বিলিয়ন অষ্ট্রেলিয়ান ডলারে পৌঁছেছে। আইনগত বাধ্যবাধকতা না থাকলেও টিফা উভয়
দেশ থেকে নতুন পণ্যের বাণিজ্যিক ক্ষেত্র সৃষ্টি এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহজ করতে সহায়তা করবে। টিফা কাঠামোর মাধ্যমে তৈরি পোশাক, কৃষিপণ্য, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, তথ্য
ও প্রযুক্তি, দক্ষতা উন্নয়ন ও শিক্ষা সেবা ছাড়াও উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতার ভিত্তিতে সব
ধরণের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনার সুযোগ থাকবে। এই টিফার আওতায় অষ্ট্রেলিয়া যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের উদ্বোধনী সভা ২০২২ সালের প্রারম্ভে আয়োজনের প্রস্তাব করেছে।
অনুষ্ঠানে অষ্ট্রেলিয়াস্থ বাংলাদেশের হাইকমিশনার সুফিউর রহমান এবং বাংলাদেশস্থ অষ্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার জেরিমিব্রুয়ার বক্তব্য রাখেন। বাংলাদেশের হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশ
ও এর আশেপাশের দক্ষিণ এশিয়ার স্থল বেষ্টিত অঞ্চলে ৩০০ মিলিয়ন জনগণের বাজারে প্রবেশের জন্য অষ্ট্রেলিয়া বাংলাদেশকে প্রবেশ পথ হিসেবে ব্যবহার করতে পারে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চল সমূহে অষ্ট্রেলিয়া যেমন বিনিয়োগ করতে পারে তেমনি
অষ্ট্রেলিয়ার শিল্পজাত পণ্যের সরবরাহকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে বিবেচনা করতে পারে। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষও উপস্থিত ছিলেন। বাণিজ্য মন্ত্রক, বিদেশ
মন্ত্রক এবং দু’দেশের হাইকমিশনের আধিকারীকগণও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।