প্রবীণদের মর্যাদাপূর্ণ জীবন নিশ্চিতে দীর্ঘমেয়াদি যত্নব্যবস্থা গড়ে তোলার আহ্বান বিশেষজ্ঞদের
- আপডেট সময় : ১১:৩৬:২৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫ ৫৬ বার পড়া হয়েছে
বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৯.৩ শতাংশ মানুষ ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সের, যা ২০৫০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশেরও বেশি হবে
বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
বাংলাদেশের প্রবীণ জনগোষ্ঠীর সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। ২০৫০ সালের মধ্যে দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩০ শতাংশই ওঠে আসবে বৃদ্ধের তালিকায়। এমন পূর্বাভাস তুলে ধরে এখনই টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক দীর্ঘমেয়াদি যত্নব্যবস্থা গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
মঙ্গলবার ঢাকার একটি হোটেলে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) ও আয়াত এডুকেশন ফাউন্ডেশন আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এমনই আহ্বান জানানো হয়। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রথম দীর্ঘমেয়াদি পরিচর্যার দেশগত নিরীক্ষা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
আয়াত এডুকেশন ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন তাহসিন আমানের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সরকারের নীতিনির্ধারক, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
প্রতিবেদনে প্রবীণ জনগোষ্ঠীর জন্য সাশ্রয়ী, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও জেন্ডার-সংবেদনশীল যত্নব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রমাণভিত্তিক দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ আবু ইউসুফ বলেন, সমাজসেবা অধিদফতর ইতিমধ্যেই প্রবীণ জনগোষ্ঠীর কল্যাণে নানা উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু এসব কর্মসূচি এখন বৃহত্তর যত্নব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত করা জরুরি। শুধু ভাতা নয়, প্রবীণদের প্রয়োজন প্রকৃত যত্ন ও সহায়তা।
তিনি আরও বলেন,আমাদের নীতিমালা আছে, কিন্তু শুধুমাত্র আর্থিক সহায়তা যথেষ্ট নয়। এখন সময় একটি সমন্বিত যত্নব্যবস্থা গড়ে তোলা, যেখানে প্রশিক্ষিত যত্নদাতা, টেকসই অর্থায়ন ও সবার জন্য সমান সেবা নিশ্চিত হবে।
এডিবি’র প্রিন্সিপাল সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট স্পেশালিস্ট (সোশ্যাল ইনক্লুশন) ফ্রান্সেস্কো টর্নিয়েরি বলেন, এই গবেষণা বাংলাদেশের জন্য একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ দিয়েছে। এটি এমন একটি মানুষকেন্দ্রিক যত্নব্যবস্থার ভিত্তি তৈরি করবে, যেখানে প্রতিটি প্রবীণ নাগরিক মর্যাদার সঙ্গে জীবনযাপন করতে পারবেন।
আয়াত এডুকেশন ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন তাহসিন আমান বলেন, উন্নয়ন কেবল অর্থনীতিতে নয়, সহমর্মিতা ও মানবিক যত্নেও প্রতিফলিত হতে হবে। দীর্ঘমেয়াদি যত্নে বিনিয়োগ শুধু নৈতিক দায়িত্ব নয়, এটি অর্থনৈতিক সুযোগও বটে।
গবেষণার মূল ফলাফল উপস্থাপন করেন এডিবি বাংলাদেশ রেসিডেন্ট মিশনের প্রিন্সিপাল সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অফিসার নাশিবা সেলিম ও আয়াত এডুকেশন ফাউন্ডেশনের চিফ অপারেটিং অফিসার ইমরান চৌধুরী।
তারা জানান, বর্তমানে বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৯.৩ শতাংশ মানুষ ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সের, যা ২০৫০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশেরও বেশি হবে। ফলে যত্নের চাহিদা বহুগুণে বাড়ছে, অথচ যত্ন প্রদান এখনো প্রধানত নারী-নির্ভর ও অনানুষ্ঠানিক পারিবারিক ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বাস্তবতায় এখনই প্রয়োজন একটি জাতীয় দীর্ঘমেয়াদি যত্ননীতি ও কৌশল প্রণয়ন করা। এ নীতি বিদ্যমান সামাজিক সুরক্ষা ও স্বাস্থ্যব্যবস্থার সঙ্গে সংহত হতে হবে। পাশাপাশি যত্নদাতাদের দক্ষতা বৃদ্ধি, ডিজিটাল স্বাস্থ্য প্রযুক্তির ব্যবহার এবং টেকসই অর্থায়নের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।


















