ঢাকা ০৩:৩৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
মানবতাবিরোধী অপরাধে ১৫ সেনা কর্মকর্তা হেফাজতে : সেনা সদর দপ্তর জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা সম্মেলন, বিশ্ব শান্তির নতুন দিগন্তে ভারত ধানের শীষ নিয়ে টানাটানি কেন, প্রশ্ন মির্জা ফখরুলের নোবেল শান্তি পুরস্কার থেকে ট্রাম্পের নাম বাদ কেন? জানালো কমিটি সাহিত্যাঙ্গনে শোকের ছায়া: চলে গেলেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম প্রজননকালীন নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই পদ্মা পারে প্রকাশ্যে ইলিশ বিক্রির হাট! খুলনার দাকোপে বেড়িবাঁধ ভেঙে ৮ গ্রাম প্লাবিত সংকট, ক্ষতির শতকোটি টাকা ফিলিপাইনে ভূমিকম্প ও বিপর্যয়ের  এক বছরের চিত্র অন্তর্বর্তী সরকার কেন যুদ্ধবিমান কিনছে, চীনের ২০টি জে-১০ সিই ক্রয়ে বিতর্ক ১৫ অক্টোবর স্বাক্ষরিত হবে ‘জুলাই জাতীয় সনদ’ ঐতিহাসিক দলিলে নেতৃত্ব দেবেন ড. ইউনূস

সাহিত্যাঙ্গনে শোকের ছায়া: চলে গেলেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম

নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা
  • আপডেট সময় : ০৭:১৯:৪৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫ ৫৭ বার পড়া হয়েছে

সাহিত্যাঙ্গনে শোকের ছায়া: চলে গেলেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম

ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

‘জন্মিলে মরিতে হবে, অমর কে কোথা কবে’ এই চিরন্তন সত্যকে মেনে সাহিত্যজগতের উজ্জ্বল নক্ষত্র, কথাসাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ ও সমালোচক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম পাড়ি জমালেন অনন্তের পথে। শুক্রবার (১০ অক্টোবর ২০২৫) বিকেলে ঢাকার ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায়  শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর মৃত্যুতে বাংলা সাহিত্য অঙ্গনে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া।

১৯৫১ সালের ১৮ জানুয়ারি সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। তাঁর পিতা সৈয়দ আমিরুল ইসলাম ও মাতা রাবেয়া খাতুন। শৈশব ও কৈশোর কেটেছে সিলেটেই। ১৯৬৬ সালে সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও ১৯৬৮ সালে সিলেট এমসি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ থেকে ১৯৭১ সালে স্নাতক এবং ১৯৭২ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। ১৯৮১ সালে কানাডার কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তাঁর গবেষণার বিষয় ছিল ইয়েটসের কবিতায় ইমানুয়েল সুইডেনবার্গের দর্শনের প্রভাব।

সাহিত্যাঙ্গনে শোকের ছায়া: চলে গেলেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম
সাহিত্যাঙ্গনে শোকের ছায়া: চলে গেলেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম

একজন প্রথিতযশা শিক্ষক হিসেবে দীর্ঘদিন তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে অধ্যাপনা করেছেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি সাহিত্যচর্চায় নিজস্ব স্বাক্ষর রেখে গেছেন কথাসাহিত্যিক হিসেবে। ভাষার শৈল্পিকতা, কাহিনির বুনন ও বাস্তবতার সাথে কল্পনার সংমিশ্রণে তাঁর রচনাগুলো পাঠকপ্রিয় হয়ে উঠেছিল।

তাঁর প্রকাশিত বইগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বেলা অবেলার গল্প (২০১২) এবং দিনরাত্রিগুলি’ (২০১৩)। প্রেম ও প্রার্থনার গল্প গ্রন্থের জন্য তিনি ১৪১১ বঙ্গাব্দে প্রথম আলো বর্ষসেরা বই পুরস্কার এবং ২০০৬ সালে  কাগজ সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য ১৯৯৬ সালে তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পান। কথাসাহিত্যে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ২০১১ সালে কথাসাহিত্য কেন্দ্র পুরস্কার পেয়েছিলেন।

তাঁর গবেষণার পরিধি বিস্তৃত ছিল মাইকেল মধুসূদন দত্ত, কাজী নজরুল ইসলাম এবং শামসুর রাহমানের সাহিত্য পর্যন্ত। একাধারে শিক্ষক, লেখক, সমালোচক ও চিন্তাবিদ সব ভূমিকাতেই তিনি ছিলেন এক আলোকিত মানুষ।

সাহিত্যপ্রেমীদের কাছে সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম চিরকাল বেঁচে থাকবেন তাঁর লেখায়, ভাবনায় ও শিক্ষার্থীদের ভালোবাসায়। আজ বাংলা সাহিত্যের আকাশ থেকে হারাল এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। অন্তিম শ্রদ্ধা এই মহিমান্বিত কথাসাহিত্যিকের প্রতি।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

সাহিত্যাঙ্গনে শোকের ছায়া: চলে গেলেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম

আপডেট সময় : ০৭:১৯:৪৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫

‘জন্মিলে মরিতে হবে, অমর কে কোথা কবে’ এই চিরন্তন সত্যকে মেনে সাহিত্যজগতের উজ্জ্বল নক্ষত্র, কথাসাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ ও সমালোচক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম পাড়ি জমালেন অনন্তের পথে। শুক্রবার (১০ অক্টোবর ২০২৫) বিকেলে ঢাকার ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায়  শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর মৃত্যুতে বাংলা সাহিত্য অঙ্গনে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া।

১৯৫১ সালের ১৮ জানুয়ারি সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। তাঁর পিতা সৈয়দ আমিরুল ইসলাম ও মাতা রাবেয়া খাতুন। শৈশব ও কৈশোর কেটেছে সিলেটেই। ১৯৬৬ সালে সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও ১৯৬৮ সালে সিলেট এমসি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ থেকে ১৯৭১ সালে স্নাতক এবং ১৯৭২ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। ১৯৮১ সালে কানাডার কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তাঁর গবেষণার বিষয় ছিল ইয়েটসের কবিতায় ইমানুয়েল সুইডেনবার্গের দর্শনের প্রভাব।

সাহিত্যাঙ্গনে শোকের ছায়া: চলে গেলেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম
সাহিত্যাঙ্গনে শোকের ছায়া: চলে গেলেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম

একজন প্রথিতযশা শিক্ষক হিসেবে দীর্ঘদিন তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে অধ্যাপনা করেছেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি সাহিত্যচর্চায় নিজস্ব স্বাক্ষর রেখে গেছেন কথাসাহিত্যিক হিসেবে। ভাষার শৈল্পিকতা, কাহিনির বুনন ও বাস্তবতার সাথে কল্পনার সংমিশ্রণে তাঁর রচনাগুলো পাঠকপ্রিয় হয়ে উঠেছিল।

তাঁর প্রকাশিত বইগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বেলা অবেলার গল্প (২০১২) এবং দিনরাত্রিগুলি’ (২০১৩)। প্রেম ও প্রার্থনার গল্প গ্রন্থের জন্য তিনি ১৪১১ বঙ্গাব্দে প্রথম আলো বর্ষসেরা বই পুরস্কার এবং ২০০৬ সালে  কাগজ সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য ১৯৯৬ সালে তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পান। কথাসাহিত্যে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ২০১১ সালে কথাসাহিত্য কেন্দ্র পুরস্কার পেয়েছিলেন।

তাঁর গবেষণার পরিধি বিস্তৃত ছিল মাইকেল মধুসূদন দত্ত, কাজী নজরুল ইসলাম এবং শামসুর রাহমানের সাহিত্য পর্যন্ত। একাধারে শিক্ষক, লেখক, সমালোচক ও চিন্তাবিদ সব ভূমিকাতেই তিনি ছিলেন এক আলোকিত মানুষ।

সাহিত্যপ্রেমীদের কাছে সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম চিরকাল বেঁচে থাকবেন তাঁর লেখায়, ভাবনায় ও শিক্ষার্থীদের ভালোবাসায়। আজ বাংলা সাহিত্যের আকাশ থেকে হারাল এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। অন্তিম শ্রদ্ধা এই মহিমান্বিত কথাসাহিত্যিকের প্রতি।