মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান-২০২৫: আইনের কঠোর প্রয়োগে ব্যাপক সাফল্য

- আপডেট সময় : ০৬:৪২:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫ ২৮ বার পড়া হয়েছে
আমিনুল হক ভূইয়া
ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষা ও টেকসই মৎস্য আহরণ নিশ্চিত করতে মৎস্য অধিদপ্তরের উদ্যোগে দেশব্যাপী চলছে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান-২০২৫। ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিনব্যাপী এই বিশেষ অভিযান দেশের ৩৮ জেলার ১৭৮টি উপজেলায় পরিচালিত হচ্ছে। নদী, মোহনা ও উপকূলীয় এলাকায় ইলিশ ধরা, পরিবহন, মজুদ, বাজারজাতকরণ ও বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
অভিযানের অংশ হিসেবে বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, মৎস্য অধিদপ্তর ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যৌথ ব্যবস্থাপনায় চলছে মোবাইল কোর্ট, নিষিদ্ধ জাল ধ্বংস, ইলিশ জব্দসহ বিভিন্ন কার্যক্রম। ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত ৫০৮৫টি অভিযান ও ১১৭৫টি মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয়েছে। এ সময় ১৩০১টি মামলা দায়ের ছাড়াও ১০৪৭ জনকে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। একই সাথে আদায় করা হয়েছে ৪২.৪৩ লক্ষ টাকা জরিমানা।

অভিযানে ৪২৮.৪৭ লক্ষ মিটার নিষিদ্ধ জাল ছাড়াও জব্দ করা ৫৭.১ মেট্রিক টন ইলিশ এতিমখানায় বিতরণ করা হয়েছে এবং নিষিদ্ধ জাল পুড়িয়ে ধ্বংস দেওয়া হয়। অভিযানে ব্যবহৃত নৌকা ও সরঞ্জাম নিলামে বিক্রি করে ৩১.১২৮ লক্ষ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হয়েছে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় নিষিদ্ধ মৌসুমে ৬,২০,১৪০ জন জেলের জন্য ১৫,৫০৩ মেট্রিক টন ভিজিএফ চাল বরাদ্দ দেয়, যার ৯৯.৩৪ শতাংশ বিতরণ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।
অভিযানকালে মেহেন্দিগঞ্জ, হিজলা ও ভেদরগঞ্জ উপজেলায় সহকারী কমিশনার (ভূমি), মৎস্য কর্মকর্তাসহ নৌ পুলিশের সদস্যরা আহত হন। ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার আওতায় সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী এই অভিযানে সহায়তা করছে।

চট্টগ্রাম, রায়পুর, হিজলা, শিবচরসহ কয়েকটি উপজেলায় সেনাবাহিনীর সহায়তায় অভিযান চালানো হয়। গভীর সমুদ্রে অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে যুদ্ধজাহাজ ও মেরিটাইম পেট্রোল এয়ারক্রাফট দিয়ে নজরদারি করা হচ্ছে। এ ছাড়া হেলিকপ্টারে আকাশপথে তিনটি অভিযান চালানো হয়েছে।
আগামী ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত এ অভিযান চলমান থাকবে। সরকার আশা করছে, এই কঠোর অভিযানের ফলে ইলিশের প্রজনন নিরাপদ হবে এবং ভবিষ্যতে ইলিশের উৎপাদন আরও বৃদ্ধি পাবে।