ঢাকা ০৩:৩৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
মানবতাবিরোধী অপরাধে ১৫ সেনা কর্মকর্তা হেফাজতে : সেনা সদর দপ্তর জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা সম্মেলন, বিশ্ব শান্তির নতুন দিগন্তে ভারত ধানের শীষ নিয়ে টানাটানি কেন, প্রশ্ন মির্জা ফখরুলের নোবেল শান্তি পুরস্কার থেকে ট্রাম্পের নাম বাদ কেন? জানালো কমিটি সাহিত্যাঙ্গনে শোকের ছায়া: চলে গেলেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম প্রজননকালীন নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই পদ্মা পারে প্রকাশ্যে ইলিশ বিক্রির হাট! খুলনার দাকোপে বেড়িবাঁধ ভেঙে ৮ গ্রাম প্লাবিত সংকট, ক্ষতির শতকোটি টাকা ফিলিপাইনে ভূমিকম্প ও বিপর্যয়ের  এক বছরের চিত্র অন্তর্বর্তী সরকার কেন যুদ্ধবিমান কিনছে, চীনের ২০টি জে-১০ সিই ক্রয়ে বিতর্ক ১৫ অক্টোবর স্বাক্ষরিত হবে ‘জুলাই জাতীয় সনদ’ ঐতিহাসিক দলিলে নেতৃত্ব দেবেন ড. ইউনূস

ফিলিপাইনে ভূমিকম্প ও বিপর্যয়ের  এক বছরের চিত্র

ভয়েস ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১২:২৬:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫ ৭২ বার পড়া হয়েছে

ফিলিপাইনে ভূমিকম্প ও বিপর্যয়ের  এক বছরের চিত্র

ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ফিলিপাইন দীর্ঘদিন ধরেই রিং অফ ফায়ার  অঞ্চলভুক্ত থাকার কারণে ভূমিকম্প, আগ্নেয়গিরি কম্পন ও প্রাকৃতিক বিপর্যয় প্রায় সময় নতুন করে চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসে। গত এক বছরে দেশটিতে বেশ কিছু শক্তিশালী ভূমিক্প হয়েছে, যার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিল সেবু ও মাইন্ডানাও  অঞ্চলে ঘটিত দুর্ঘটনাগুলি।

রিং অফ ফায়ার তথা পৃথিবীর প্রশান্ত মহাসাগর-এর চারপাশে অবস্থিত একটি অঞ্চল, যেখানে পৃথিবীর বেশিরভাগ আগ্নেয়গিরি ও ভূমিকম্প ঘটে।  এটি  টেকটোনিক প্লেটগুলোর মিলনের একটি অঞ্চল, যা সাবডাকশন  অর্থাৎ এক প্লেট অন্য প্লেটের নিচে ঢুকে যাওয়া প্রক্রিয়ার কারণে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত ও শক্তিশালী ভূমিকম্পের জন্ম দেয়। বিশ্বের প্রায় ৭৫ শতাংশ  সক্রিয় আগ্নেয়গিরি এবং ৯০ শতাংশ ভূমিকম্প এই অঞ্চলে ঘটে থাকে।

২০২৫ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর গভীর রাতের দিকে সেন্ট্রাল ফিলিপাইনের সেবু প্রদেশে মাত্রা ৬. একটি ভূমিক্প আঘাত হানে। এই ভূমিক্প ছিল দেশটিতে দশকের মধ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতী একটি ভূমিক্প। প্রাথমিকভাবে জানানো হয় ৬৯ জনের মৃত্যু, কিন্তু পরে ঘাটতির পুনর্মূল্যায়ন শেষে ৭২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়।  আহতদের সংখ্যা প্রায় ২৯৪ জন বা তারও বেশি বলে জানানো হয়েছে।

সেবুর এই ভূমিকম্পে ঘরবাড়ি, হাসপাতাল, সেতু, প্রাচীন মঠ ও পুরাতন ভবনগুলো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভূমিকম্প ও ভূসলীলা  নিহতদের মধ্যে বেশির ভাগই বিনষ্ট ভবনের ধ্বংসাবশেষে চাপা পড়ে মারা যায়।

২০২৫ সালের ১০ অক্টোবর, সেবুর সেই ভয়াবহ ক্ষতির মাত্র ১১ দিনের মাথায়  ফিলিপাইনের মাইন্ডানাও অঞ্চলে মাত্রা ৭. একটি ভূমিকম্প আঘাত হানে। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল প্রায় ২৩ কিলোমিটার গভীরে। প্রাথমিক হিসাবে, জন নিহত হয়েছে এবং কমপক্ষে কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।

এই ভূমিকম্পে সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়েছিল, যদিও পরে সতর্কতা তুলে নেওয়া হয়।

যদিও মাইন্ডানাও অঞ্চলে ৭.৪ মাত্রার ভূমিকম্পে এখনও বিশাল স্তরের মৃত্যু-ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি, তবে ক্ষয়ক্ষতি ও মৃত্যুর পরিসরের জরুরি মূল্যায়ন চলছে। স্থানীয় ভবনগুলোতে ফাটল দেখা দিয়েছে, স্কুল ও হাসপাতাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এবং অনেক মানুষ আতঙ্কে রাস্তায় নেমে এসেছে।

ফিলিপাইন ভূমিকম্প-প্রবণ একটি দেশ। সাধারণত মাঝারি মাত্রার কম্পন প্রায় দিনই অনুভূত হয়, কিন্তু বড় কম্পন এবং ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি বেশি হয়, বিশেষ করে অবকাঠামো দুর্বল ও জনবহুল অঞ্চলে। সুনামি সতর্কতা ব্যবস্থা, তড়িৎ উদ্ধার ও পুনর্বাসন সক্ষমতা  এসবই হয় গুরুত্বপূর্ণ।

সেবু ও মাইন্ডানাও অঞ্চলে সাম্প্রতিক দু’টি বড় ভূমিকম্পের মধ্য দিয়ে ফিলিপাইন সরকার ও স্থানীয় প্রশাসনকে দ্রুত প্রস্তুতির ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। বিশেষ করে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ ও উপকূলবর্তী এলাকায় অবকাঠামো মজবুত করা, ভবন-নির্মাণ মানদণ্ড কঠোর করা, অ্যারিজেন্সি প্রস্তুতি ও জনসচেতনতা বাড়ানো।  এগুলো এখন সময়োপযোগী এবং নিত্যনতুন চ্যালেঞ্জ।

এছাড়া, মৃতদের পরিবার ও আহতদের সহায়তা, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় দ্রুত পুনর্বাসন প্রকল্প ও আন্তর্জাতিক সহায়তা জরুরি।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

ফিলিপাইনে ভূমিকম্প ও বিপর্যয়ের  এক বছরের চিত্র

আপডেট সময় : ১২:২৬:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫

ফিলিপাইন দীর্ঘদিন ধরেই রিং অফ ফায়ার  অঞ্চলভুক্ত থাকার কারণে ভূমিকম্প, আগ্নেয়গিরি কম্পন ও প্রাকৃতিক বিপর্যয় প্রায় সময় নতুন করে চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসে। গত এক বছরে দেশটিতে বেশ কিছু শক্তিশালী ভূমিক্প হয়েছে, যার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিল সেবু ও মাইন্ডানাও  অঞ্চলে ঘটিত দুর্ঘটনাগুলি।

রিং অফ ফায়ার তথা পৃথিবীর প্রশান্ত মহাসাগর-এর চারপাশে অবস্থিত একটি অঞ্চল, যেখানে পৃথিবীর বেশিরভাগ আগ্নেয়গিরি ও ভূমিকম্প ঘটে।  এটি  টেকটোনিক প্লেটগুলোর মিলনের একটি অঞ্চল, যা সাবডাকশন  অর্থাৎ এক প্লেট অন্য প্লেটের নিচে ঢুকে যাওয়া প্রক্রিয়ার কারণে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত ও শক্তিশালী ভূমিকম্পের জন্ম দেয়। বিশ্বের প্রায় ৭৫ শতাংশ  সক্রিয় আগ্নেয়গিরি এবং ৯০ শতাংশ ভূমিকম্প এই অঞ্চলে ঘটে থাকে।

২০২৫ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর গভীর রাতের দিকে সেন্ট্রাল ফিলিপাইনের সেবু প্রদেশে মাত্রা ৬. একটি ভূমিক্প আঘাত হানে। এই ভূমিক্প ছিল দেশটিতে দশকের মধ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতী একটি ভূমিক্প। প্রাথমিকভাবে জানানো হয় ৬৯ জনের মৃত্যু, কিন্তু পরে ঘাটতির পুনর্মূল্যায়ন শেষে ৭২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়।  আহতদের সংখ্যা প্রায় ২৯৪ জন বা তারও বেশি বলে জানানো হয়েছে।

সেবুর এই ভূমিকম্পে ঘরবাড়ি, হাসপাতাল, সেতু, প্রাচীন মঠ ও পুরাতন ভবনগুলো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভূমিকম্প ও ভূসলীলা  নিহতদের মধ্যে বেশির ভাগই বিনষ্ট ভবনের ধ্বংসাবশেষে চাপা পড়ে মারা যায়।

২০২৫ সালের ১০ অক্টোবর, সেবুর সেই ভয়াবহ ক্ষতির মাত্র ১১ দিনের মাথায়  ফিলিপাইনের মাইন্ডানাও অঞ্চলে মাত্রা ৭. একটি ভূমিকম্প আঘাত হানে। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল প্রায় ২৩ কিলোমিটার গভীরে। প্রাথমিক হিসাবে, জন নিহত হয়েছে এবং কমপক্ষে কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।

এই ভূমিকম্পে সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়েছিল, যদিও পরে সতর্কতা তুলে নেওয়া হয়।

যদিও মাইন্ডানাও অঞ্চলে ৭.৪ মাত্রার ভূমিকম্পে এখনও বিশাল স্তরের মৃত্যু-ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি, তবে ক্ষয়ক্ষতি ও মৃত্যুর পরিসরের জরুরি মূল্যায়ন চলছে। স্থানীয় ভবনগুলোতে ফাটল দেখা দিয়েছে, স্কুল ও হাসপাতাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এবং অনেক মানুষ আতঙ্কে রাস্তায় নেমে এসেছে।

ফিলিপাইন ভূমিকম্প-প্রবণ একটি দেশ। সাধারণত মাঝারি মাত্রার কম্পন প্রায় দিনই অনুভূত হয়, কিন্তু বড় কম্পন এবং ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি বেশি হয়, বিশেষ করে অবকাঠামো দুর্বল ও জনবহুল অঞ্চলে। সুনামি সতর্কতা ব্যবস্থা, তড়িৎ উদ্ধার ও পুনর্বাসন সক্ষমতা  এসবই হয় গুরুত্বপূর্ণ।

সেবু ও মাইন্ডানাও অঞ্চলে সাম্প্রতিক দু’টি বড় ভূমিকম্পের মধ্য দিয়ে ফিলিপাইন সরকার ও স্থানীয় প্রশাসনকে দ্রুত প্রস্তুতির ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। বিশেষ করে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ ও উপকূলবর্তী এলাকায় অবকাঠামো মজবুত করা, ভবন-নির্মাণ মানদণ্ড কঠোর করা, অ্যারিজেন্সি প্রস্তুতি ও জনসচেতনতা বাড়ানো।  এগুলো এখন সময়োপযোগী এবং নিত্যনতুন চ্যালেঞ্জ।

এছাড়া, মৃতদের পরিবার ও আহতদের সহায়তা, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় দ্রুত পুনর্বাসন প্রকল্প ও আন্তর্জাতিক সহায়তা জরুরি।