দখলকৃত গাজায় চলমান সামরিক অভিযান সীমিত করার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েল সরকারের রাজনৈতিক নেতৃত্ব। দেশটির রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে পরিচালিত সামরিক রেডিও নেটওয়ার্ক ‘আর্মি রেডিও’র এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গাজায় দখল অভিযান সীমিত করার নির্দেশ দিয়েছে দখলদার ইসরায়েল সরকারের রাজনৈতিক নেতৃত্ব। শুক্রবার ইসরায়েলের রাষ্ট্রীয় সামরিক রেডিও নেটওয়ার্ক ‘আর্মি রেডিও’ এক প্রতিবেদনে জানায়, সরকার সেনাবাহিনীকে গাজায় চলমান আক্রমণাত্মক অভিযান বন্ধ রেখে শুধুমাত্র প্রতিরক্ষামূলক অবস্থানে থাকতে বলেছে। এর মাধ্যমে গাজা সিটি দখল অভিযান আপাতত স্থগিত করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রেডিওটির সামরিক সংবাদদাতা দোরন কাদোশ এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে জানান, সেনাদের এখন থেকে শুধু ‘প্রতিরক্ষামূলক পদক্ষেপ’ গ্রহণের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এ নির্দেশের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রস্তুতিই প্রধান কারণ বলে বিশ্লেষকদের ধারণা।
এর আগে শুক্রবার রাতে ইসরায়েলি সেনাপ্রধান জেনারেল এয়াল জামির এক বিশেষ বৈঠকে শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন। সেখানে তিনি রাজনৈতিক নেতৃত্বের নির্দেশনা অনুযায়ী জিম্মিদের মুক্তি ও ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপ বাস্তবায়নে প্রস্তুতি জোরদারের নির্দেশ দেন।
হামাসের আংশিক সম্মতি
অন্যদিকে, একই দিন ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে আংশিক সম্মতি জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে হামাস জানায়, তারা “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রস্তাবে থাকা বিনিময় সূত্র অনুযায়ী সব জীবিত ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দিতে রাজি,” তবে এর জন্য বিনিময়ের শর্তগুলো পূরণ করতে হবে। হামাস আরও জানায়, কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের বিষয়ে আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে।
গত ৫ অক্টোবর ট্রাম্প হামাসকে ওয়াশিংটন সময় সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি পরিকল্পনা গ্রহণের সময়সীমা দিয়েছিলেন। এ সময়সীমা ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই হামাসের পক্ষ থেকে আংশিক সম্মতির ঘোষণা আসে। আন্তর্জাতিক মহল এখন আশা করছে, এই উদ্যোগ মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘদিনের সংঘাত নিরসনের পথে একটি নতুন অধ্যায় খুলে দিতে পারে।
হামাসের আংশিক সম্মতি
তবে মধ্যপ্রাচ্যের এই সংকটের প্রভাব শুধু গাজা বা ইসরায়েলেই সীমাবদ্ধ নয়; এটি দক্ষিণ এশিয়াতেও রাজনৈতিক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
একদিকে মধ্যপ্রাচ্যে গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতির ইঙ্গিত, অন্যদিকে দক্ষিণ এশিয়ায় রাজনৈতিক উত্তাপ—দুটি পরিস্থিতিই আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে জটিল ভারসাম্য তৈরি করেছে। ইসরায়েল-হামাস সংঘাত যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি হস্তক্ষেপে সাময়িক শান্তির দিকে অগ্রসর হচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের টানাপোড়েন আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য নতুন প্রশ্ন তৈরি করছে। সূত্র: টাইমস অব ইসরায়েল, দ্য হিন্দু, রয়টার্স, স্থানীয় সংবাদমাধ্যম।