ছবি সংগ্রহ
‘লাখো মানুষের দুর্ভোগের মুক্তির সনদ পদ্মা সেতু। যুগ যুগ ধরে অবহেলিত মানুষকে জাগিয়ে তোলার বংশীবাদক শেখ হাসিনা। তার দূরদর্শিতাই আজকের পদ্মাসেতু নির্মাণ সম্ভব হয়েছে। যেকোন প্রতিকূল পরিস্থিতি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে ভয়ঙ্কর পদ্মা পারি দিতে দীর্ঘ সময় লেগে যেতো। মানুষের চরম দুর্ভোগকে জয় করে গতির সঙ্গে বাংলাদেশকে যুক্ত করলেন শেখ হাসিনা। পদ্মা সেতু লাখো মানুষের মুক্তির স্মারক’
আমিনুল হক, ঢাকা
সকল আয়োজন সম্পন্ন। রবিবার শেখ হাসিনার হাত ধরে খুলছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের দুয়ার ‘পদ্মা সেতু’। এটা কোন স্বপ্ন নয়। সেতুটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২২টি জেলাকে মুধু নয়, দূরন্ত গতির সঙ্গে জুড়বে উত্তরপূর্ব ভারতকেও। আগরতলা থেকে কলকাতায় পৌছানো যাবে মাত্র ৮ ঘন্টার। আর ঢাকার দূরত্ব কমে আসবে ৫ঘন্টায়। পদ্মা সেতু সময় সাশ্রয়ী জাতীয় স্থাপনা। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে যুক্ত হয়েছে আরও একটি পালক। এটি স্বপ্নের ল্যাণ্ডস্কেপ। ইতিহাসের সিম্ফনি। অথৈ জলরাশির উন্মত্ত পদ্মার বুকে উড়ছে ‘উন্নয়নের শঙ্খ চিল’। এই দূরন্তপনার ঠিকানা বাংলাদেশ।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের লাখো মানুষের দুর্ভোগের মুক্তির সনদ পদ্মা সেতু। যুগ যুগ ধরে অবহেলিত মানুষকে জাগিয়ে তোলার বংশীবাদক শেখ হাসিনা। তার দূরদর্শিতাই আজকের পদ্মাসেতু নির্মাণ সম্ভব হয়েছে। এজন্য প্রশংসায় ভাসছেন হাসিনা। পদ্মা পারের মানুষ বুকভরা আশা এবং নানা পরিকল্পনা নিয়ে সেতু উদ্বোধনের অপেক্ষায় ছিলেন। যেকোন প্রতিকূল পরিস্থিতি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে ভয়ঙ্কর পদ্মা পারি দিতে দীর্ঘ সময় লেগে যেতো। মানুষের চরম দুর্ভোগকে জয় করে গতির সঙ্গে বাংলাদেশকে যুক্ত করলেন শেখ হাসিনা। পদ্মা সেতু লাখো মানুষের মুক্তির স্মারক। পদ্মা সেতু নির্মাণ বাংলাদেশের নেতৃত্বের আরেকটি দৃষ্টান্ত বলে উল্লেখ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এরই পদ্মাসেতু নিয়ে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক দল একাধিক গান বেধেছেন।
সূচি অনুযায়ী সকাল ১০টা নাগাদ মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতু উদ্বোধনী নামফলক উন্মোচনের পর টোলপ্লাজার সামনে সুধী সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন শেঞ হাসিনা। এরপর সেতু পেরিয়ে জাজিরা প্রান্তে যাবেন এবং নামফলক উন্মোচনের পর বিকেলে জনসভায় বক্তব্য দিবেন। এই জনসমাবেশে অন্তত ১০ লাখ লোকের সমাগম ঘটবে বলে আশা করা হচ্ছে। ১৫০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৪০ ফুট প্রস্থের বিশাল মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য মঞ্চের ভিতরে ও বাইরে বসানো হয়েছে ছয়টি ওয়াচ টাওয়ার। থাকবে দেড় শতাধিক সিসিটিভি ক্যামেরা।
সর্বত্র পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী ফেষ্টুন শোভা পাচ্ছে। পদ্মার সেতুর উপর দিয়ে লালসবুজে খচিত পতা উড়িয়ে চলছে সেনাবাহিনীর মহড়া। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিবাদন জানাতেই এই মহড়া। কিছু কিছু সম্পদ নতুন করে ইতিহাস লিখতে শেখায়। তারমধ্যে পদ্মাসেতু একটি। এটি হচ্ছে সভ্যতার প্রতীক। আন্তরাষ্ট্রীয় যোগাযোগের উত্তম ব্যবস্থার একটি। এই স্বপ্ন জয়ের অংশি বাংলাদেশের মানুষ। পদ্মা সেতু পাড়ি দেওয়ার সময় কোনো যানবাহন থামানো যাবে না। সেতুতে নেমে কোন ছবি তোলা বা হাঁটাহাঁটি করা যাবে না। সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার গতিতে গাড়ি চালানো যাবে।
পদ্মসেতু নির্মাণ শুরুর আগেই নানা অভিযোগ তুলে অর্থায়ন থেকে সরে দাড়ায় বিশ্বব্যাংক। এরপরই যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বললেন বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নেই পদ্মার বুকে স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে। সকল প্রতিকূলতা ছাপিয়ে অবশেষে পদ্মা সেতু নির্মাণ করে বিশ্বে নজির গড়লেন শেখ হাসিনা।